#কলকাতা: যে রাতে ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে প্রৌঢ় গোপাল প্রামাণিককে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ধাক্কা মেরে খুন করে অভিযুক্ত অ্যাম্বুলেন্স চালক আব্দুর রহমান, সেই রাত পার্ক স্ট্রিট থানাতেই কেটেছিল তার! যদিও ট্যাংরা থানার পুলিশ তাকে দুর্ঘটনার জন্য গ্রেফতার করতে পারেনি।
ঘটনা হল, মঙ্গলবার রাত ১২টা নাগাদ ট্যাংরার গোবিন্দ খটিক রোডে গোপাল প্রামাণিক নামের প্রৌঢ়কে অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে ধাক্কা মারে অভিযুক্ত চালক। পরে তার বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগে মামলা রুজু হয়। একদিন পর গ্রেফতার করা হয়।
কিন্তু প্রৌঢ়কে ধাক্কা মারার পরই মল্লিকবাজার দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত চালক। তাতেই ফের বিপত্তি। পালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মল্লিকবাজার মোড়ে আবার একটি গাড়িতে ধাক্কা মারে অভিযুক্ত। সেখানে অপর গাড়ি চালকের সাথে বচসা থেকে হাতাহাতিও বেঁধে যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দুপক্ষে হাতাহাতির খবর পেয়ে পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ সেখানে পৌঁছয়। আব্দুর রহমানকে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বাজেয়াপ্ত করা হয় অ্যাম্বুলেন্সটিকেও। ড্রিংক অ্যান্ড ড্রাইভের অভিযোগে আটক করা হলেও পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ জানতই না সেই রাতে শহরে বড় ঘটনা ঘটিয়ে এসেছে এই অভিযুক্ত।
যদিও চালক জেরায় স্বীকার করেছে, সেই রাতে আকণ্ঠ মদ্যপান করেছিল সে। তার দাবি, নেশার ঘোরে গাড়ি চালাতে গিয়েই দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে। তার জেরেই মৃত্যু হয়েছে গোপালের। তবে তার বিরুদ্ধে ওঠা অপহরণের অভিযোগ অস্বীকার করেছে অভিযুক্ত চালক। কলকাতা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, "ওই রাতে ট্যাংরার ঘটনার পর পালাতে গিয়ে মল্লিকবাজারে অন্য গাড়িতে ধাক্কা মারে অ্যাম্বুলান্সটি। মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর অভিযোগে পুলিশ তাকে আটক করেছিল।"
পরদিন সকালে অর্থাৎ বুধবার নেশা কাটলে তাকে ছেড়েও দেওয়া হয়।
প্রশ্ন উঠছে, ট্যাংরায় এত বড় ঘটনা ঘটার পরেও কি করে পার্ক স্ট্রিট থানা অভিযুক্তকে আটক করে ছেড়ে দিল? তাহলে কি তাদের কাছে দুর্ঘটনার কোনও খবর ছিল না? ট্যাংরা থানা কি অন্য কোনও থানাকে দুর্ঘটনার বিষয়ে জানায়নি? যে কারণে অভিযুক্তকে হাতের নাগালে পেয়েও ছেড়ে দেওয়া হল। যদিও পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ আব্দুর রহমানকে আটক করে ছেড়ে দেওয়ার বিষয় মানতে চায়নি।
মৃত গোপালবাবুর পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, কলকাতার রাস্তায় এত সিসিটিভি ক্যামেরা থাকতে সেই রাতে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা গেল না। ট্যাংরা থানার পুলিশ সেই সময়ে উদ্যোগী হলে ঘাতক অ্যাম্বুলান্সটিকে সঙ্গে সঙ্গেই ধরা সম্ভব হত। পরিবারের এক সদস্যের বক্তব্য, "পুলিশ কতটা সক্রিয় ছিল তা বোঝাই যাচ্ছে। নাহলে হাতের নাগালে পেয়েও কি করে ছেড়ে দেয় অভিযুক্তকে। তার মানেই ঘটনার পর গাড়িটিকে ধরার চেষ্টা বা দুর্ঘটনার খবর অন্য থানাকে জানানোর ক্ষেত্রে গড়িমসি ছিল।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।