কলকাতা: বড়সড় অস্বস্তিতে স্কুল সার্ভিস কমিশন। গ্রুপ ডি পর গ্রুপ সি নিয়োগেও বিস্ফোরক রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। শুক্রবার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি আনন্দ মুখোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট পেশ করে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগের অনুসন্ধান কমিটি।
গ্রুপ - সি বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে ৩৮১ জনকে সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল। এসএসসি র অফিস থেকেই এই সুপারিশপত্র দেওয়া হয়েছিল।
স্ক্যান সই ব্যবহার করে সুপারিশ পত্র দেওয়া হয়। সৌমিত্র সরকার এবং শান্তি প্রসাদ সিনহা এই কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন। ৩৮১ জনের মধ্যে ২২২ জনের নাম কোন প্যানেল বা ওয়েটিং লিস্টে ছিল না।
এরা পার্সোনালিটি টেস্টে অংশ গ্রহণ করেনি, কারণ এরা কেউ লিখিত পরীক্ষায় পাশ করেনি। অশোক কুমার সাহা, সৌমিত্র সরকার, শান্তি প্রসাদ সিনহার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা উচিত। কারণ এরা প্যানেলের পুনর্মূল্যায়ন করে Rank পরিবর্তন করেছে।
শর্মিলা মিত্র, চৈতালি ভট্টাচার্য, শুভজিৎ চ্যাটার্জী, মহুয়া বিশ্বাস, শেখ সিরাজউদ্দিন, সুবিরেশ ভট্টাচার্যর বিরুদ্ধেও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে কাজ করার জন্য শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে পদক্ষেপ করা উচিত।
প্যানেলের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরে শূন্যপদের তথ্য নিয়ে বেআইনিভাবে সেই তথ্য কাজে লাগিয়েছেন শান্তি প্রসাদ সিনহা এবং সৌমিত্র সরকার। সুপারিশ পত্র ছাপানোর কাজ করেছিলেন সমরজিৎ আচার্য। প্রোগ্রাম অফিসার এসএসসি'র৷
জালিয়াতি এবং প্রতারণার কারণের এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৪১৭, ৪৬৫,৪৬৮ এবং ৩৪ ধারায় FIR দায়ের করা যেতে পারে।
শান্তি প্রসাদ সিনহা, সৌমিত্র সরকার, অশোক কুমার সাহার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ১২০B ধারায় FIR করা যেতে পারে।
শান্তি প্রসাদ সিনহা নিজে ভুয়ো সুপারিশ পত্র কল্যাণময় গাঙ্গুলিকে দিতেন। কল্যাণময় গাঙ্গুলি সেই সুপারিশ পত্রের ভিত্তিতে টেকনিক্যাল অফিসার রাজেশ লায়েক কে দিয়ে নিয়োগপত্র তৈরি করতেন। CD, পেনড্রাইভ, মেলের মাধ্যমেও এই সুপারিশ পত্র তারা পেতেন।
আরও পড়ুন: শেষ কার সঙ্গে কথা হয়েছিল অর্জুন চৌরাসিয়ার? পাসওয়ার্ড খুঁজছে পুলিশ
নিয়োগপত্র দেওয়া হত এসএসসি র নব নির্মিত ভবনে। এই ভবনকে কখনই notified করা হয়নি। কল্যাণময় গাঙ্গুলি এবং শান্তি প্রসাদ সিনহার বিরুদ্ধে 120B ধারায় মামলা রুজু করা উচিত। প্যানলে প্রকাশের সময় SSC স্বচ্ছতা বজায় রাখেনি।
আদালতের নির্দেশে প্যানেল ওয়েবসাইটে আপলোড করার আগেও তাতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের অনুমোদনের ভিত্তিতে যে উপদেষ্টা কমিটি হয়েছিল তা বেআইনি।
বিচারপতি রঞ্জিত কুমার বাগ অনুসন্ধান কমিটির সুপারিশে জানায়। সেন্ট্রাল কমিশনের নিয়োগে কোনও স্বচ্ছতা নেই। প্যানেলের রাঙ্ক বদল করা হয়েছে। ৩৮১ মেয়াদ উত্তীর্ণ বেআইনি নিয়োগ সুপারিশের মধ্যে
আরও পড়ুন: 'বাংলায় এর আগে এরকম প্রতিভা জন্মায়নি', কটাক্ষের সুরে কাকে নিশানা করলেন দিলীপ ঘোষ?
২২২ জন পার্সোনালিটি টেস্টে বসেই নি। পরীক্ষায় পাশই করেনি তারা।
তৎকালীন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় দপ্তরের সচিবের নির্দেশিত ৫ সদস্যের নজরদারি কমিটির কোনও অস্তিত্ব নেই আইনের চোখে। ৫ রিজিওনাল চেয়ারম্যানরা দায়বদ্ধ তারা হলেন, শর্মিলা মিত্র, চৈতালি ভট্টাচার্য, শুভজিত চট্টোপাধ্যায়, মহুয়া বিশ্বাস , সেখ সিরাজউদ্দীন। এদের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে বিভাগীয় পদক্ষেপের সুপারিশ।
প্রাক্তন চেয়ারম্যান
সৈমিত্র সরকার ও
অশোক কুমার সাহা।
বোর্ড সভাপতি
ডঃ কল্যাণ ময় গাঙ্গুলি,
সমরজিৎ আচার্য, প্রোগ্রাম অফিসার।
এস পি সিনহা, এসএসসি উপদেষ্টা।
প্রত্যেকের বিরুদ্ধে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৬৫,৪৬৮, ৪১৭, ৩৪ ধারায় সঙ্গে ১২০ বি ধারায় এফআইআর রুজু করে ফৌজদারি তদন্তের সুপারিশ। ১৬০ লিখিত পরীক্ষায় পাশ করে কিন্তু রাঙ্কে পিছিয়ে ছিলো, তাদের হাইজাম্প ফর্মুলায় চাকরি দেওয়া হয়েছে।
সমরজিৎ আচার্য, বর্তমান, প্রোগ্রাম অফিসার। ৩৮১ অসফলদের নিয়োগ সুপারিশ পত্র তৈরি করেছে এস পি সিনহা নির্দেশে। IPC ৪৬৫ ৪১৭, ৩৪ মামলা রুজুর সুপারিশ। ডঃ সুবিরেশ ভট্টাচার্য ভেঙেছেন এসএসসি রুল ১৩।
তাঁর বিরুদ্ধেও শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগ, বিভাগীয় পদক্ষেপের সুপারিশ।এস পি সিনহা হাতে করে নিযোগ সুপারিশ পত্র দিয়েছে ডঃ কল্যাণময় গাঙ্গুলি চেম্বারে। আইপিসি ১২০ বি মামলা রুজুর পরামর্শ ২জনেরই বিরুদ্ধে।
ফৌজদারি অপরাধ লুকিয়ে রয়েছে এমনটা ইঙ্গিত আদালত নিযুক্ত অনুসন্ধান কমিটির। অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ডিভিশন বেঞ্চের কাছে জানান, প্রথম দিন থেকে রাজ্য যা বলে আসছে আজই তাই বলছে, সিবিআই সবসময়ই সঠিক বিকল্প নয়। দক্ষ অফিসার রাজ্যের রয়েছে। আদালত দক্ষ অফিসারদের দিয়ে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন SIT গঠন করে তদন্তের নির্দেশ দিক। অপরদিকে, মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে বলেন, নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে গত ২০ মার্চ।এমন বেআইনি নিয়োগের নেপথ্যে প্রচুর পরিমাণে টাকার লেনদেন হয়েছে। তা খুঁজে বার করা দরকার। রাজ্যের হাই অফিসিয়ালরা যুক্ত এই নিয়োগ দুর্নীতি আড়ালে। আর্থিক লেনদেন খতিয়ে দেখা হোক। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষনা ১৮ মে। রায় ঘোষণা করবে বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ডিভিশন বেঞ্চ।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Calcutta High Court, SSC