মদের দোকানের সামনে সামাজিক দূরত্ব মেনে হেলমেট, থলি, হাতা-খুন্তির 'অন্য' লাইন !

Last Updated:

লকডাউনের জেরে দীর্ঘ দিন ধরে মদ না পেয়ে, মদের দোকান খুলতেই সুরাপ্রেমীরা রীতিমত ঝাঁপিয়ে পড়ছেন ৷

#কলকাতা: লকডাউনের সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে দোকানে, বাজারহাটে নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়ানোর লাইন এখন পরিচিত ছবি । তবে সামাজিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে কলকাতায় নজরে এল এক 'অন্য’‌ লাইন। যেমন, কোথাও চলছে গন্ডি কাটা। গন্ডির মধ্যে কোথাও দাঁড়িয়ে ক্রেতা । কোথাও গোলাকার বৃত্তের মধ্যে রাখা বাজারের থলি। ছেঁড়া চটি। কোথাও রাখা ইট পাথর, মগ-বালতি, হাতা-খুন্তি । আবার কোথাও বা মাথায় পড়া হেলমেটের ভিড় মদের দোকানের সামনের ফুটপাথে। শুধু জেলায়-জেলায় নয়, এই ছবি দেখা গেছে শহর কলকাতাতেও।
গোলাকার বৃত্তের মধ্যে এই ধরনের আরও নানান সামগ্রী নজরে এল । কিন্তু মদের দোকানের সামনে যেখানে মানুষের ভিড় সেখানে এই সমস্ত সামগ্রী হাজির কেন ? প্রশ্নের উত্তরে ক্রেতারা বললেন, 'কী বলব বলুন, দোকান খোলার বেশ কয়েক ঘন্টা আগে থেকেই মানুষ যেভাবে লাইনে দাঁড়াচ্ছে তাতে মদ পাওয়াই দুষ্কর হয়ে উঠছে। তাই আমরা ভোররাত থেকেই কেউ থলি, ইট পাথর, মগ বালতি, হেলমেট --- বাড়ি থেকে যে যা পারছি এনে বৃত্তের গণ্ডির মধ্যে রেখে লাইন সুনিশ্চিত করছি। দোকান খোলার কিছুক্ষণ আগে এসেই সেই সমস্ত সামগ্রী সরিয়ে নিয়ে আমরা লাইনে দাড়িয়ে পড়ছি । ঘণ্টার পর ঘণ্টা তো লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আর যায় না'! কলকাতা কিংবা জেলার বিভিন্ন প্রান্তের ছবিটাও অনেকটা এক। তবে কেউ কেউ আবার মদ কেনার জন্য দোকানের সামনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নিজেরাই দাঁড়িয়ে থাকছেন। সামাজিক দূরত্বের নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে। একজন ক্রেতা রসিকতার সুরেই বললেন, 'সব সময় যেমন সাবান কিংবা অ্যালকোহল মিশ্রিত স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করছি । করোনার সংক্রমণ থেকে বাঁচতে এবার তেমনি সামান্য এলকোহল দিয়ে শরীরের রক্তও স্যানিটাইজ করতেই কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়েছি'।
advertisement
গলফ গ্রিনের এক বাসিন্দা বাড়ির গা ঘেঁষা দোকানে এসেছেন মদের খোঁজে। তখনও দোকান খোলেনি। একহাতে থলি আর অন্যহাতে হেলমেট ঝুলিয়ে। হাতে হেলমেট কেন? প্রতিবেদকের প্রশ্নের উত্তরে মুচকি হেসে বললেন , 'শুনলাম এক এক জনকে দুটো করে বোতল দেওয়া হবে। তাই দুটি বৃত্তের গন্ডিতে একটিতে থলি আর অন্যটিতে হেলমেট রেখে লাইন দিয়ে বাড়ি চলে যাব'। তবে শুধু গলফ গ্রিনই নয়, যাদবপুর থেকে নিউ মার্কেট। শহরের সর্বত্র মদ কেনার উৎসবে সামিল আমজনতা।
advertisement
advertisement
কলকাতা, রাজ্য তথা সারা দেশে খুলেছে মদের দোকান। দীর্ঘ দেড় মাসের লকডাউনের পর অবশেষে লকডাউনের মধ্যেই মদের দোকান খোলায় দোকানে দোকানে উপচে পড়ছে মানুষের অস্বাভাবিক ভিড় । সুরাপ্রেমীদের সামলাতে কয়েক জায়গায় লাঠিচার্জ পর্যন্ত করতে হয়েছে পুলিশকে। লাঠিচার্জের ঘটনা ঘটেছে কলকাতা সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। কোথাও বেগতিক বুঝে বন্ধ করে দিতে হয়েছে মদের দোকান । তবুও কাউন্টারের বাইরে কিলোমিটারের পর কিলোমিটার লম্বা লাইনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকছেন অনেকেই। প্রায় দেড় মাস পর সোমবার থেকে গোটা দেশে বাছাই করা এলাকায় মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়। দোকান খোলার খবরে সকাল থেকেই লম্বা চওড়া লাইন। তখনও দোকানের ঝাঁপ বন্ধ। দোকান খোলার দীর্ঘক্ষন আগে থেকেই নজিরবিহীন লাইনের সাক্ষী থেকেছে গোটা বাংলা। বলা ভাল গোটা দেশ। লকডাউনের জেরে দীর্ঘদিন ধরে মদ না পেয়ে, মদের দোকান খুলতেই সুরাপ্রেমীরা রীতিমত ঝাঁপিয়ে পড়ছেন৷
advertisement
গোটা দেশজুড়েই মদের দোকানগুলিতে চলছে চূড়ান্ত বিশৃঙ্খলা৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ। তবুও করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ভুলে সুরাপ্রেমীদের কার্যত মেলা বসেছে কলকাতার পাশাপাশি অন্য এলাকার মদের দোকানের সামনে। হাতে মদের বোতল পেয়ে মদের দোকানের সামনে বসে এক ব্যক্তির মাথা ঠুকে প্রণাম সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অথবা মদ কিনতে মদের দোকানের সামনে বৃত্তের গন্ডিতে বাজারের থলি, ইট পাথর, হাতা খুন্তি, মগ বালতি, হেলমেট সহ নানান সামগ্রীর সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ব্যতিক্রমী লাইনের ছবি নিঃসন্দেহে নজিরবিহীন।
advertisement
VENKATESWAR LAHIRI
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
মদের দোকানের সামনে সামাজিক দূরত্ব মেনে হেলমেট, থলি, হাতা-খুন্তির 'অন্য' লাইন !
Next Article
advertisement
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
  • এসএসকেএমে ‘যৌন হেনস্থা’র অভিযোগ নাবালিকাকে

  • ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন শৌচাগারে!

  • অভিযুক্ত গ্রেফতার

VIEW MORE
advertisement
advertisement