ECMO-তে থাকা রোগী সুস্থ হয়ে ৪৫ দিনের মাথাতেই ফিরলেন বাড়ি, চিকিৎসায় নজির গড়ছে শহর

Last Updated:

এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রেখে মস্তিষ্কে এবং ঝিমিয়ে পড়া অঙ্গে অক্সিজেন পাঠানো হয়।

ECMO-তে থাকা রোগী সুস্থ হয়ে ৪৫ দিনের মাথাতেই ফিরলেন বাড়ি, চিকিৎসাখাতে নজির গড়ছে শহর
ECMO-তে থাকা রোগী সুস্থ হয়ে ৪৫ দিনের মাথাতেই ফিরলেন বাড়ি, চিকিৎসাখাতে নজির গড়ছে শহর
#কলকাতা: অবসান ঘটল ৪৫ দিনের একটা যুদ্ধের। শ্বাসজনিত জটিল অসুস্থতার জেরে দীর্ঘ প্রায় দেড় মাস ইকমো (ECMO) সাপোর্টে থাকা রোগী গত ১৬ জুন সুস্থ শরীরে বাড়ি ফিরে গেলেন। আর এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলেছে কলকাতার মেডিকা সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল (Medica Superspeciality Hospital Kolkata) ৷
এই জায়গায় এসে ইকমো সাপোর্ট কী, সেটা সংক্ষেপে বলে নেওয়া দরকার। চিকিৎসাগত এই পরিভাষাটির পুরো কথা হল- এক্সট্রাকর্পোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (Extracorporeal Membrane Oxygenation)। সহজ ভাবে বললে, যখন গুরুতর অসুস্থ রোগীর হার্ট বা ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দেয়, তখন এই সাপোর্টের সাহায্যে রোগীকে বাঁচিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া শুরু করেন সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের অভিজ্ঞ চিকিৎসকেরা। এ ক্ষেত্রে কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রেখে মস্তিষ্কে এবং ঝিমিয়ে পড়া অঙ্গে অক্সিজেন পাঠানো হয়। যে কারণে ইকমো সাপোর্টের দরকার পড়লে চিন্তিত হয়ে পড়েন রোগীর পরিবারের সদস্যেরা।
advertisement
মেডিকার ইকমো (ECMO) টিমের নেতৃত্বে রয়েছেন ইকমো ফিজিশিয়ান এবং ক্রিটিক্যাল কেয়ার স্পেশালিস্ট ডা. অর্পণ চক্রবর্তী (Dr. Arpan Chakraborty) এবং ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায় (Dr. Dipanjan Chatterjee)। এই হাসপাতাল বরাবরই বিশ্বমানের ক্রিটিক্যাল কেয়ার এবং ইকমো-র মতো অর্গ্যান সাপোর্ট ট্রিটমেন্ট দিয়ে আসছে। শুধু তা-ই নয়, পূর্ব ভারতে হৃদযন্ত্র/ফুসফুস প্রতিস্থাপন (Heart/Lung Transplant)-এর পরিষেবাও এখানে দেওয়া হয়।
advertisement
advertisement
কানাডার টরোন্টোর বাসিন্দা ৫০ বছর বয়সী মিস্টার কুমার (Mr. Kumar) সম্প্রতি ধানবাদে নিজের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন। সেখানেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং জানা যায়, তীব্র প্যাংক্রিয়াটাইটিসে আক্রান্ত ওই প্রৌঢ়। ধানবাদের একটি স্থানীয় নার্সিং হোমে প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। কিন্তু অবস্থার অবনতি হওয়ায় এপ্রিলের শেষে ওই রোগীকে রেফার করা হয় মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। ডা. অর্পণ চক্রবর্তী এবং ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে মিস্টার কুমারকে ধানবাদ থেকে কলকাতার মেডিকা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ইকমো সাপোর্টে আনা হয়। ৩০০ কিলোমিটারের এই ইকমো পরিবহণের মাধ্যমে রোগীকে আনতে সময় লেগেছিল প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা। আর গোটা এই কর্মকাণ্ডকে সফল করার পিছনে ছিলেন ইকমো চিকিৎসক, পারফিউশনিস্ট, ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং ‘কর্মা’-র সদস্যরা (Karma)।
advertisement
কলকাতায় আনার পরে ওই প্রৌঢ়কে শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে দেখা হয়। জানা যায়, তিনি ডায়াবেটিস এবং তীব্র নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত। সেই সঙ্গে এও দেখা যায় যে, ওই প্রৌঢ়ের রক্তচাপ খুবই কম। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, মিস্টার কুমারের অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ডিসট্রেস সিন্ড্রোম বা এআরডিএস (ARDS), সেপটিক শক এবং তীব্র হিমোডায়নামিক ইনস্টেবিলিটি রয়েছে। এর দু'সপ্তাহ পরে গুরুতর ভাবে অসুস্থ ওই রোগীর অবস্থার কিছুটা হলেও উন্নতি দেখা যায়। তার পরে ধীরে ধীরে তাঁকে ইকমো এবং ভেন্টিলিটার থেকে বার করা হয়। সেই সঙ্গে প্রৌঢ়ের ট্র্যাকিওস্টমি (Tracheostomy)-ও খুলে দেওয়া হয়। ইন্টেনসিভ রিহ্যাবিলিটেটিভ ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে রোগী খুব শীঘ্রই নিজের বিছানার পাশে বসা এবং হাঁটাচলা করতে শুরু করে। অবশেষে ৪৫ দিন পরে তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। খুব শীঘ্রই টরন্টোয় ফিরবেন মিস্টার কুমার।
advertisement
হাসপাতালের ইকমো টিমের নেতৃত্বে থাকা দুই চিকিৎসক ডা. অর্পণ চক্রবর্তী এবং ডা. দীপাঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “ইকমো সাপোর্টের মাধ্যমে রাস্তায় গুরুতর অসুস্থ রোগীকে রক্ষা করাটাই আমাদের কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ। এক্ষেত্রেও সাড়ে ৬ ঘণ্টার ওই সফরটাই সবথেকে কঠিন ছিল। আর ভাল বিষয় হচ্ছে, সেই সময়টা সব কিছু ঠিকঠাকই ছিল। এর পর রোগীর ট্র্যাকিওস্টমি করা হয়। আর এই প্রক্রিয়ার সাহায্যে রোগীর ফুসফুসের কার্যকারিতায় উন্নতি দেখা যায়। তবে পালমোনারি কার্যকারিতার উল্লেখযোগ্য উন্নতি না-হওয়া পর্যন্ত রোগীকে ভেন্টিলেশনই রাখা হয়েছিল। অবস্থার উন্নতির পর ধীরে ধীরে রোগী চলাফেরা করতে শুরু করেন। আমরা তাঁর পরিবার-পরিজন এবং ভারত ও বিদেশে থাকা তাঁর বন্ধুবান্ধবের প্রতি কৃতজ্ঞ। কারণ এই লড়াইয়ে তাঁরা সকলেই আমাদের পাশে ছিলেন এবং এই যুদ্ধে যথাসাধ্য সাহায্যও করেছেন।”
advertisement
মেডিকা গ্রুপ অফ হসপিটালসের চেয়ারম্যান ডা. আলোক রায় (Dr. Alok Roy) বলেন, “উন্নত চিকিৎসার ক্ষেত্রে মেডিকা সব সময় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আর ইকমো-র সাহায্যে আমরা প্রত্যন্ত এলাকা থেকেও রোগীদের পুনরুদ্ধার করে তাঁদের জীবন রক্ষায় সক্ষম হয়েছি। আর আমরা আমাদের চিকিৎসকদের নিয়ে ভীষণই গর্বিত, কারণ তাঁরা দেশের এই প্রান্তের মানুষদের বিশ্বমানের পরিষেবা দিচ্ছেন।”
view comments
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
ECMO-তে থাকা রোগী সুস্থ হয়ে ৪৫ দিনের মাথাতেই ফিরলেন বাড়ি, চিকিৎসায় নজির গড়ছে শহর
Next Article
advertisement
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
SSKM-এ নাবালিকাকে যৌন হেনস্থার অভিযোগ ! গ্রেফতার এনআরএসের অস্থায়ী কর্মী
  • এসএসকেএমে ‘যৌন হেনস্থা’র অভিযোগ নাবালিকাকে

  • ডাক্তার পরিচয় দিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন শৌচাগারে!

  • অভিযুক্ত গ্রেফতার

VIEW MORE
advertisement
advertisement