SOMRAJ BANERJEE
আজ অর্থাত্ বৃহস্পতিবারই উঠছে পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশন? বুধবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করে ইতিবাচক সঙ্কেত পেয়েছেন আন্দোলনরত পার্শ্বশিক্ষকরা। আজ দুপুর নাগাদ স্কুল শিক্ষা সচিবের সঙ্গে বৈঠকে যাচ্ছেন তাঁরা। লিখিত প্রতিশ্রুতি না-পেলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত অনশনকারী পার্শ্বশিক্ষকদের। যদিও বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পর বৃহস্পতিবার অনশন মঞ্চ কার্যত ফাঁকাই।
নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো এবং স্থায়ীকরণের দাবিতে ২৭ দিন ধরে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন পার্শ্বশিক্ষকরা। অনশন আন্দোলনের প্রথম থেকেই রাজ্য নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোর পক্ষে ছিল না। গত শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে আলোচনায় বসার জন্য চিঠি দেন অনশনকারী পার্শ্বশিক্ষকরা। পার্শ্বশিক্ষকদের চিঠিতে আবেদনে সাড়া দিয়ে বুধবার পার্শ্বশিক্ষকদের চারটি সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী। বৈঠকে নির্দিষ্ট বেতন কাঠামো স্থায়ীকরণ-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
পার্শ্ব শিক্ষকরা বৈঠক শেষে অবশ্য দাবি করেন, রাজ্য সরকার তাঁদের দাবি নিয়ে সময় চেয়েছে। পার্শ্বশিক্ষকরা জানান, সময় দিতে তাঁরা প্রস্তুত হচ্ছেন। তবে লিখিত প্রতিশ্রুতি না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা অনশন আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত বুধবার নিয়েছিলেন। অথচ বৃহস্পতিবারই সকাল থেকে অনশন মঞ্চের এক ভিন্ন ছবি ধরা পড়ল। অনেক আন্দোলনকারী অনশন বুধবার রাতেই তুলে নিয়েছেন। অনেকে আবার নিজেদের জেলা স্কুলগুলিতে ফিরে গিয়েছেন।
এর পিছনে অবশ্য অনশনকারীদের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী বুধবার বৈঠকে তাঁদের যে যাঁর স্কুলে ফিরে যেতে বলেছেন৷ তার জন্যই অনশনকারীরা স্কুলে ফিরে গিয়েছেন। তাঁরা স্কুলে ক্লাস বয়কট তুলে নিয়েছেন। অনশনকারীরা এও জানান, আজ স্কুল শিক্ষা সচিবের সঙ্গে তাঁরা বৈঠক করবেন৷ দাবি রাখবেন বুধবারের আলোচনার লিখিত প্রতিশ্রুতি। লিখিত প্রতিশ্রুতি না পেলে আবারও আন্দোলনে বসবেন। যদিও অনশন তুলে নেওয়ার দিকেই পাল্লা ভারী রয়েছে পার্শ্বশিক্ষকদের।
এদিকে পার্শ্বশিক্ষকদের অনশন চলাকালীন রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর অনুপস্থিত পার্শ্বশিক্ষকদের শো-কজের নির্দেশ দিয়েছিলেন। মূলত কোনও কারণ ছাড়াই যাঁরা স্কুলে অনুপস্থিত, তাঁদেরকেই শোকজ করতে বলা হয়েছিল। বুধবার অনশনকারী পার্শ্বশিক্ষকরা এ প্রসঙ্গটিও শিক্ষামন্ত্রীর এর কাছে রাখেন। যদিও শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন যে, কোনও সংস্থায় দীর্ঘদিন ধরে যদি কেউ অনুপস্থিত থাকে, তাহলে সেই সংস্থা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে। গত তিন বছর ধরে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধি বন্ধ রয়েছে। সেই বেতন বৃদ্ধি যাতে চালু করা যায় সেই বিষয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতরের তরফে অর্থ দফতরের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
শুধু তাই নয়, অবসর নেওয়ার পরে পার্শ্বশিক্ষকরা ১ লক্ষ টাকা গ্র্যাচুয়িটি পান। সেই গ্রাচুয়িটির পরিমাণ যাতে বাড়ানো যায়, সে বিষয়েও রাজ্য অর্থ দপ্তরের ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠিয়েছে স্কুল শিক্ষা দপ্তর। পার্শ্বশিক্ষকরা আপাতত শিক্ষামন্ত্রীর উপরেই ভরসা রাখছেন। যদিও আন্দোলনের রাস্তা তাঁরা খোলা রাখছেন। অনশনকারীদের দাবি, ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত সময় চেয়েছে রাজ্য সরকার। সে ক্ষেত্রে সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকার তাদের দাবি না মেটালে, ফের আন্দোলনে বসবেন অনশনকারীরা। সব মিলিয়ে বৃহস্পতিবারই পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশন আন্দোলন উঠতে চলেছে বলেই এক প্রকার নিশ্চিত।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।