#কলকাতা: আদালতে গিয়ে আইনজীবী হিসেবে সওয়াল করতে চান মুখ্যমন্ত্রী, মঙ্গলবার আলিপুর আদালতের বার অ্যাসোসিয়েশনের একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এমনই বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন, চাকরি বাতিলের প্রসঙ্গ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিছুটা হতাশার সুরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'অন্যায় করলে আমার গালে দুটো চড় মারলে কিছু মনে করব না। জেনেশুনে কোনওদিন কোনও অন্যায় করিনি৷ ক্ষমতায় আসার পর একটা সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি, তোমরা কেন খাচ্ছ? এখন রোজ কথায় কথায় তিন, চার হাজার চাকরি বাদ যাচ্ছে৷ সবাই তো তৃণমূল, সরকারের ক্যাডার নয়৷' এই প্রসঙ্গ টেনেই তিনি বলেন, '' কিছু কিছু কেসে ভাবছি নিজে কোর্ট গিয়েই প্র্যাক্টিস করব৷ কারণ, ব্রিফ করে দেওয়ার থেকে নিজে আদালতে গিয়ে মনের কথা অনেক ভালভাবে বলা যায় ৷'' এরপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, '' কথা দিচ্ছি পয়সা নেব না। আমি মাইনে- পেনশন নিই না ৷ ১১ বছর ধরে কয়েক কোটি টাকা নিইনি৷ গাড়িটাও চড়ি না ৷ চা-টাও নিজের পয়সায় খাই ৷''
যাঁদের চাকরি যাচ্ছে তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়ার পক্ষেও সওয়াল করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রায়ের উদাহরণও দেন তিনি৷ মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, চাকরি সংক্রান্ত একটি মামলার রায়ে ভুল সংশোধনের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন বিচারপতি, কিন্তু চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেননি৷
কিছুটা আবেগমথিত হয়েই মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, 'আইন অনুযায়ী চাকরিটা ফিরিয়ে দিন৷ ভুল করে থাকলে আইন অনুযায়ী সুযোগ দেওয়া হোক৷ দরকার হলে সে আবার পরীক্ষা দিক৷ বা আদালত যেটা বলবে সেই অনুযায়ী আমরা বন্দোবস্ত করব৷ কিন্তু কথায় কথায় চাকরিটা খাবেন না৷ আমাকে, আমার দল, সরকারকে পছন্দ না হতে পারে৷ দু' বেলা গালাগাল দিন, আমাকে মারুন৷ কিন্তু দয়া করে রাজ্যটার বদনাম করে ছাত্র-যৌবনের খাবার অধিকার কেড়ে নেবেন না৷'
প্রসঙ্গত, গতবছর অগাস্ট মাসে বকেয়া মামলা দ্রুত নিস্পত্তি থেকে নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থার প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, তিনিও একজন আইনজীবী। তাই প্রয়োজনে যে কোনও সময় আইনজীবী হিসেবে দাঁড়াতেই পারেন মমতা। তাঁর ভাষায়, ''কত মানুষ রোজ আদালতে আসেন। বিচারব্যবস্থা গণতান্ত্রিক দেশের স্তম্ভ। মানুষ তাই বিচারের আশায় আদালতের দ্বারস্থ হন। সুবিচারের আশায় দিনের পর দিন অপেক্ষা করে থাকেন। সব জায়গায় বিশ্বাসভঙ্গ হলে, বিচারব্যবস্থাই সাধারণ মানুষকে বিশ্বাস ফিরিয়ে দেয়। বিচার কখনও একপক্ষ হয় না, নিরপেক্ষ হয়। গণতান্ত্রিক দেশে বিচারব্যবস্থা, সংবাদমাধ্যম এবং গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর গুরুত্ব সংবিধানে উল্লেখিত রয়েছে। কোনও একটি বিশ্বাসযোগ্যতা হারালে বাকিগুলির উপর থেকে বিশ্বাস চলে যায়। এর উপর গণতান্ত্রিক দেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করে।"
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Mamata Bandopadhyay