হোম /খবর /কলকাতা /
'বন্দুকবাজ' জওয়ানকে বাগে আনতে শর্ত পালন করে কলকাতা পুলিশ, হাড়হিম সেই অভিযান!

Indian Museum Firing: 'বন্দুকবাজ' জওয়ানকে বাগে আনতে শর্ত পালন করতে হয় কলকাতা পুলিশকে, হাড়হিম 'অপারেশন মোজো' অভিযান!

Indian Museum Firing

Indian Museum Firing

পুলিশের গাড়িতে চড়ে হাসি মুখে হাত নাড়তে নাড়তে সবাইকে অবাক করে এলাকা ছাড়লেন অক্ষয়। (Indian Museum Firing)

  • Share this:

#কলকাতা: যে ভাবে আততায়ী পুলিশের জালে এল, তা যেন হুবহু কোনও ফিল্মের দৃশ্য। বাস্তবে এমনও হয়? হ্যাঁ, তেমনটাই হয়েছে। আর তার জন্য কলকাতা পুলিশকে কুর্নিশ জানাচ্ছে অনেকেই। এলোপাথাড়ি গুলি চালানোয়  অভিযুক্ত সিআইএসএফের হেড কনস্টেবল অক্ষয় কুমার মিশ্র। সহকর্মীদের লক্ষ্য করে গুলি। তাও আবার AK-47 দিয়ে। চোখের সামনে রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন সহকর্মীরা। তবুও নির্বিকার  অভিযুক্ত অক্ষয় কুমার মিশ্র।  কলকাতা জাদুঘরে তখনও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে 'বন্দুকবাজ' সিআইএসএফ জওয়ান।

দিল্লি থেকে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী  বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনঘন ফোনে খোঁজখবর নিচ্ছেন পুলিশ কর্তাদের  কাছ থেকে। একের পর এক গুলির শব্দে গোটা এলাকা তখন কার্যত যুদ্ধক্ষেত্র। পুলিশের কাছে খবর যাওয়া মাত্রই বিশাল পুলিশ বাহিনী হাজির। কিড স্ট্রিটে বিধায়কদের থাকার আবাসন এম এল এ হোস্টেলের সামনে তখন থিক থিক করছে পুলিশ আর কৌতূহলী জনতা। ভেতরে সিআইএসএফ জওয়ানের হাতে AK- 47 রাইফেল নিয়ে দাপাদাপি। বাইরে পুলিশের মাইকিং। জাদুঘর চত্বরে অযথা ভিড় না জমানোর আবেদন। মুহূর্তে হাজির একের পর এক কমান্ডো বাহিনী। কমব্যাট ফোর্স।

আরও পড়ুন: 'অপারেশন মোজো'- রক্ত না ঝরিয়েই খুনে সিআইএসএফ জওয়ানকে বাগে আনল পুলিশ!

পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল থেকে ডিসি সেন্ট্রাল রূপেশ কুমার কিম্বা জয়েন্ট সিপি ক্রাইম মুরলিধর শর্মা। হাজির তাঁরাও। নিমেষের মধ্যে ঠিক হয় অপারেশনের রণকৌশল। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট পড়ে শুরু অপারেশন 'মোজো'। আততায়ীকে খুঁজে বের করতে শুরু হয় চিরুনি তল্লাশি। প্রায় দেড় ঘন্টা তল্লাশি অভিযানের পর খোঁজ মেলে অক্ষয় কুমার মিশ্রর। হাতে AK-47 রাইফেল নিয়ে বসে ব্যারাক সংলগ্ন একটি ঘরে। ভেতরে তখন চলছে আত্মসমর্পণের আবেদন জানিয়ে পুলিশের মাইকিং। পুলিশের বিশেষ অভিযান দল তার কাছে যেতেই অভিযুক্ত জওয়ানের  কাছ থেকে আসে শর্ত।

আরও পড়ুন: ক্যাশ-কুইন অর্পিতার কাছে সোনারও পাহাড়, 'গয়নার বাক্স' খুলে আদালতে হিসেব দিল ইডি

পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত বলেন, 'তাঁর কাছে নিরস্ত্র হয়েই আসতে হবে। না হলে সহযোগিতা নয়'। হাতে AK-47 রাইফেল নিয়ে বসে থাকা জওয়ানকে বাগে আনাই তখন কলকাতা পুলিশের প্রধান চ্যালেঞ্জ। শর্ত মানলেন অপারেশনের নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশকর্তারা। কিন্তু যে জায়গায় তিনি  AK-47 নিয়ে বসে সেই গোটা এলাকা কোনও রকম ঝুঁকি না নিয়ে কমান্ডোরা ঘিরে ফেলল। অবশেষে আত্মসমর্পণ। গ্রেফতার। অভিযুক্ত সিআইএসএফ জওয়ানের কাছ থেকে রাইফেল  নিয়ে বড়সড় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল 'টিম অপারেশন মোজো"। কলকাতা পুলিশের লাল রঙের জিপের পেছনের সিটের দু'পাশে দুই পুলিশ অফিসারের মাঝে বসা অভিযুক্ত অক্ষয় কুমার মিশ্রাকে নিয়ে জাদুঘরের ভেতর থেকে বেরিয়ে কলকাতা পুলিশের গাড়ির চাকা তখন ছুঁল কিড স্ট্রিট।

বাইরে তখন সংবাদ মাধ্যমের ভিড়। সহকর্মীকে খুনে অভিযুক্ত হয়েও  তিনি যে একেবারেই অনুতপ্ত নন, তা তাঁর শরীরী ভাষাতেই স্পষ্ট হলো। মুখে হাসি। হাসি মুখেই পুলিশের গাড়িতে বসে হাত নাড়তে নাড়তে এলাকা ছাড়লেন অক্ষয় কুমার মিশ্রা। ঘটনায় রীতিমত হতবাক কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তারক্ষী বাহিনীর অন্যান্য জওয়ান থেকে শুরু করে আম জনতা। তবে ঘাতক জওয়ানকে রুদ্ধশ্বাস অপারেশনের মাধ্যমে যেভাবে নিরস্ত্র করে গ্রেফতার করল কলকাতা পুলিশ তাতে কলকাতা পুলিশের 'ক্যাচলাইন'  "WE CARE  WE DARE"- কে কুর্নিশ জানাল অনেকেই।

Published by:Raima Chakraborty
First published:

Tags: Indian Museum, Kolkata Police