Srijan Bhattacharya|| শিক্ষা-সংবিধান-দেশ বাঁচাতে লড়বে SFI, একান্ত সাক্ষাৎকারে গর্জে উঠলেন রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য

Last Updated:

SFI State Presdent Srijan Bhattacharya exclusive interview: দেশজুড়ে কেন জাঠা করা হচ্ছে, রাজ্যে কী রকম প্রস্তুতি? জানালেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। 

#কলকাতাঃ এসএফআই-এর জাঠা পৌছেছে রাজ্যে, দেশজুড়ে কেন জাঠা করা হচ্ছে, রাজ্যে কী রকম প্রস্তুতি? জানালেন এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য।
প্রশ্নঃ কেন এই জাঠা করছে এসএফআই?
সৃজন ভট্টাচার্যঃ আমাদের পরিষ্কার কথা, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাতিল করতে হবে। এই শিক্ষানীতি দরিদ্র মধ্যবিত্ত ছাত্রদের প্রতি সুবিচার করে না। চোর-ডাকাত-দাঙ্গাবাজরা মিলে বসে একটা শিক্ষানীতি বানালে যেমন দেখতে লাগবে, এটা ঠিক তেমন হয়েছে। এই শিক্ষানীতি লেখাপড়ার খরচ বাড়ায়, লাগামছাড়া বেসরকারিকরণের বন্দোবস্ত করে এবং অনগ্রসর প্রান্তিক ছাত্রদের শিক্ষার সুযোগ কেড়ে নেয়। এখানে 'ভার্টিকল নলেজ' বা গভীরে গিয়ে কোনও বিষয়ে জ্ঞানার্জনের সুযোগ সঙ্কুচিত হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার অন্যতম উদ্দেশ্য যে আগামী প্রজন্মের মনে মুক্তচিন্তার পরিসর প্রস্তুত করা, সে কথা ভুলিয়ে দিয়ে শারীরিক কর্মদক্ষতাকে বৌদ্ধিক বিকাশের থেকে আলাদা করে ভবিষ্যতের প্রতিনিধিদের সস্তার শ্রমিক বানাতে চায় এই শিক্ষানীতি। এমন সব্বোনেশে জাতীয় শিক্ষানীতি, যাতে একবারের জন্যও ধর্মনিরপেক্ষতা ও বৈচিত্র‍্যের মধ্যে ঐক্যকেকে উদযাপন করার কথা বলা নেই। এই শিক্ষানীতি মানার প্রশ্নই নেই, এই বার্তা দৃঢ়ভাবে সামনে এনেই জাঠা বলছে, খোঁজ কর বিকল্পের।
advertisement
advertisement
প্রশ্নঃ বিকল্প কী হওয়া উচিত বলে মনে করে এসএফআই?
সৃজন ভট্টাচার্যঃ একমাত্র ছাত্র সংগঠন হিসেবে, বিকল্প শিক্ষানীতি গঠনের কাজে হাত লাগিয়েছি আমরা। যে শিক্ষানীতিতে লকডাউনে ডিজিটাল ডিভাইডের শিকার হওয়া দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার মূলস্রোতে ফেরানোর উদ্দেশ্য নিয়ে গঠন হবে স্পেশ্যাল প্যাকেজ। যে শিক্ষানীতি সরকারি ব্যয়বরাদ্দ বাড়াতে বলবে শিক্ষাখাতে, মিড ডে মিল থেকে গবেষকদের স্কলারশিপ-ফেলোশিপ, প্রতিটি ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের তরফে দেখভালের পরিসর বাড়ানোর দাবি করবে যে শিক্ষানীতি। যে শিক্ষানীতি স্বচ্ছ শিক্ষক নিয়োগের বন্দোবস্ত করবে, যাতে আর কোথাও কোনও পার্থ চট্টোপাধ্যায় আগামী প্রজন্মকে ঠকিয়ে ফ্ল্যাটে টাকা জমাতে না পারেন। আমরা হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তানের বিপ্রতীপে গিয়ে বলব বিবিধের মাঝে মহান মিলনের কথা - আমাদের বিকল্প শিক্ষানীতি, প্রতিষ্ঠিত করবে আম্বেদকরের হাতে তৈরি সংবিধানের মূল্যবোধকেই। আগামী ২ সেপ্টেম্বর দিনের আলো দেখবে বিকল্প শিক্ষানীতির খসড়া। মজার কথা হল, তৃণমূলের তরফে কিন্তু এই শিক্ষানীতি নিয়ে বিশেষ কথা বলা হচ্ছে না। ওরা ভাবছে, যেমন বেণী তেমনি রবে, চুল ভেজাবো না।
advertisement
সৃজন ভট্টাচার্যঃ দেশের ৫ প্রান্ত থেকে, 'মার্চ ফর এডুকেশন' নামে, যার বাংলা করলে দাঁড়ায় 'শিক্ষার জন্য পদযাত্রা' - সর্বভারতীয় ছাত্র জাঠা পথ হাঁটছে ১ অগাস্ট থেকে। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর শেষ জাঠার শেষ সমাবেশ হবে আহমেদাবাদে। আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করেছে দুটি জাঠা। ১৯ অগাস্ট কোচবিহারের বক্সিরহাটে প্রবেশ করেছে ত্রিপুরা ও অসম হয়ে আসা উত্তর পূর্ব ভারতের জাঠা। ২০ অগাস্ট পূর্ব মেদিনীপুরের দীঘায় প্রবেশ করেছে বিহার, ঝাড়খণ্ড ও উড়িষ্যা হয়ে আসা পূর্ব ভারতের জাঠা। পশ্চিমবঙ্গে ১৪ দিন ধরে ২২ জেলায় ২৫০০ কিলোমিটারের ওপর ভ্রমণ করার কথা ছিল দুটি ছাত্র জাঠা। কথা ছিল, তাদের যাত্রাপথে পশ্চিমবঙ্গে ১৩২টি ছোটবড় সভা ও মিছিল অতিক্রম করবে জাঠা দুটি। এখনই দেখা যাচ্ছে, সভার সংখ্যা হয়ে গিয়েছে ১৭০'এর বেশি। প্রায় ৩২০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে ফেলেছে জাঠা। অনেক এলাকাতেই পরিকল্পনার বাইরে গিয়েও সভা করতে হচ্ছে মানুষের চাহিদায়। এ ছাড়াও অগণিত কর্মসূচি চলছে এই জাঠা ঘিরে। আমরা স্লোগান দিয়েছি - শিক্ষা বাঁচাও, সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও। চ্যালেঞ্জ নিয়েছি, জাঠার খবর পৌঁছে দেব এক কোটি ছাত্রের কাছে।
advertisement
প্রশ্নঃ এই জাঠার মাধ্যমে কী বার্তা দিতে চাইছে এসএফআই?
সৃজন ভট্টাচার্যঃ বিজেপি'র শিক্ষানীতির বিরোধিতা বা চাকরি চোর, কয়লা চোর, গরু চোর, তৃণমূলের বিরোধিতার পাশাপাশি আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক কাজ রয়েছে জাঠার। আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছরে আরেকবার মনে করাতে চাইছি সংবিধানের মূলমন্ত্রগুলিকে। ছাত্র জাঠা স্মরণ করতে করতে এগোচ্ছে আমাদের দেশজ মনীষীদের, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের, প্রগতির লড়াইয়ের শহীদদের। ক্ষুদিরাম, ভগৎ সিং, কানাইলাল দত্ত, মাতঙ্গিনী হাজরা বা সুভাষচন্দ্র বসুরা তো বটেই-জাঠা স্মরণ করছে রবীন্দ্রনাথ-নজরুল, বিদ্যাসাগর, পঞ্চানন বর্মা, ভানুভক্ত, রঘুনাথ মুর্মু বা হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের মতো বাংলার সমাজজীবনে দীর্ঘমেয়াদী ছাপ রেখে যাওয়া ব্যক্তিত্বদেরও৷ আমাদের বোঝাপড়া পরিষ্কার-এই বিপুল বৈচিত্র‍্যের ঠাসবুনোটে গড়ে ওঠা মানবতার মহাসাগরকে, আমাদের মিলেমিশে বাঁচার ইতিহাসকে উদযাপন করতেই হবে আরএসএস-বিজেপি'র সাংস্কৃতিক আগ্রাসনকে প্রতিহত করতে গেলে। ওরা যত একমাত্রিক সমাজের কথা বলবে, আমরা তুলে ধরব সহিষ্ণু বহুমাত্রিক বিবিধতায় ভরা বাংলার ইতিহাসকে। ওদের সাথে সাভারকর থাকলে আমাদের সাথে আছেন চৈতন্য আর লালন ফকির। আম্বেদকরকে বুকে নিয়ে, সুকান্ত'র লাইন ধার করে বলেছি আমরা-এ দেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে। আরএসএস স্বাধীনতা আন্দোলনে কোথাও ছিল না, এ কথা নতুন করে মনে করিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব তো আঠারোরই এখন।
advertisement
আরও পড়ুনঃ রানি এলিজাবেথের মতোই মুকুটে গৌরীবাড়ির দুর্গা, নেপথ্যে বিশ্বখ্যাত ডিজাইনার হুগলির প্রিয়াঙ্কা
প্রশ্নঃ জাঠাকে কেন্দ্র করে রাজ্যে প্রস্তুতি কী রকম পর্যায়ে রয়েছে?
সৃজন ভট্টাচার্যঃ জাঠাকে কেন্দ্র করে সাংগঠনিকভাবে নড়াচড়া হচ্ছে এসএফআই'এর প্রতিটি স্তরে। ইতিমধ্যেই আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটায়, উত্তর ২৪ পরগণার কাঁচরাপাড়া ও বারাসত এবং পুরুলিয়াতে সিধো-কানহো বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের সাথে টক্কর নিয়ে এগিয়েছে জাঠা। পূর্ব মেদিনীপুরে খোদ অধিকারী সাম্রাজ্যে আরএসএস'এর চোখে চোখ রেখে পথ হেঁটেছে জাঠা। দুর্গাপুরে পুলিশি ব্যারিকেডে আছড়ে পড়েছে ছাত্র বিক্ষোভ। চা-বাগান থেকে লালমাটি, দেউচা পাচামি থেকে শ্রমিক মহল্লা - জাঠা এগোচ্ছে ছাত্রসমাজের ভালবাসা কুড়োতে কুড়োতেই।
advertisement
প্রশ্নঃ ২ সেপ্টেম্বরের প্রস্তুতি কেমন?
সৃজন ভট্টাচার্যঃ হাজারো ছাত্রছাত্রীকে সামিল করে দুটি ছাত্রজাঠা এসে মিলবে ১৫তম দিনে, ২ সেপ্টেম্বর বেলা ১২টায় কলকাতার কলেজ স্ট্রিটে। সাম্প্রতিককালের বৃহত্তম ছাত্র সমাবেশটির মঞ্চ থেকে আমরা জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ বাতিল করার দাবির পাশেই ঘোষণা করব বিকল্প শিক্ষানীতির খসড়া। ছাত্র আন্দোলনের কর্মীদের সাথেই প্রধান বক্তা হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আমাদের সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক বিমান বসু। ছাত্র শহীদদের স্মরণ করে, রাস্তার লড়াইকে ক্যাম্পাসে পৌঁছে দেওয়ার অঙ্গীকার করেই সমাপ্ত হবে ছাত্র জাঠা। শারদোৎসব ফুরোলেই স্বচ্ছ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ভোটের দাবিতে বড় আন্দোলনে যাব। দাঙ্গাবাজের হাত থেকে, চাকরি চোরের হাত থেকে - বাংলার তরুণ প্রজন্মকে রক্ষা করার সংগ্রামে গতি বাড়বে কেবল আগামী দিনে, কমবে না।
advertisement
UJJAL ROY
বাংলা খবর/ খবর/কলকাতা/
Srijan Bhattacharya|| শিক্ষা-সংবিধান-দেশ বাঁচাতে লড়বে SFI, একান্ত সাক্ষাৎকারে গর্জে উঠলেন রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য
Next Article
advertisement
West Bengal Weather Update: ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে ! দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে
  • ভারী বর্ষণের সতর্কতা উত্তরবঙ্গে !

  • দক্ষিণবঙ্গেও বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টি চলবে

  • কলকাতা-সহ বাকি অংশে বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি হতে পারে রবিবার পর্যন্ত

VIEW MORE
advertisement
advertisement