পুজোর জামা রইল পড়ে, হাসপাতালের বেড থেকে পড়ে ক্যান্সার আক্রান্ত কিশোরীর অকাল মৃত্যু! গাফিলতির অভিযোগ
- Published by:Shubhagata Dey
- news18 bangla
Last Updated:
সোদপুর মহিষপোতার বাসিন্দা ফাল্গুনী দেবনাথ (১৩)। স্থানীয় মহিষপোতা গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী।
#সোদপুর: সোদপুর মহিষপোতার বাসিন্দা ফাল্গুনী দেবনাথ (১৩)। স্থানীয় মহিষপোতা গার্লস হাই স্কুলের সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী। গত বছর থেকে ফাল্গুনীর তীব্র মাথা যন্ত্রণা হতে শুরু করে আর এই বছরের শুরুতে ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। লকডাউনের সময় মাসখানেক ঠাকুরপুকুর ক্যান্সার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল ফাল্গুনী। অত্যন্ত গরিব পরিবারের মেয়েটির চিকিৎসার খরচ তোলার জন্য পাশে দাঁড়ায় পাড়ার ক্লাব। আত্মীয় স্বজনের থেকে ধার করে বাকি টাকা জোগাড় করে পরিবার। মেধাবী ছাত্রীর চিকিৎসার জন্য সমস্ত কিছু করতে রাজি ছিল পরিবার, তবুও শেষ রক্ষা হল না।
সোমবার সকাল থেকেই শরীর খুবই খারাপ হতে থাকে ফাল্গুনী। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে দুপুরেই শিয়ালদহ এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে আসে তার বাবা-মা। বহুকষ্টে ভর্তি করা সম্ভব হয়। অভিযোগ, ক্যান্সার বিভাগ বা এবং ফিমেল মেডিসিন বিভাগে কোনও বেড ফাঁকা না থাকায় জরুরি বিভাগের পাশে এমার্জেন্সি অবজারভেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয় ফাল্গুনীকে। এ দিকে ভর্তির পর একবারের জন্য চিকিৎসকরা ফাল্গুনী দেখেনি বলে অভিযোগ মা শিখা দেবনাথের। রাতভর মেয়ের পাশে থাকার পর সকালে সাত'টা নাগাদ বাথরুমে গিয়েছিলেন মা। সেই সময় মেয়ের আর্ত চিৎকার শুনতে পান। ছুটে গিয়ে দেখতে পান বিছানা থেকে পড়ে গিয়েছে মেয়ে। একথা ছুটে গিয়ে শিখা দেবনাথ নার্সদের জানান, চিকিৎসকদেরও জানান। অভিযোগ, কোনও চিকিৎসক একবারের জন্য দেখতে আসেনি মেয়েকে। এমনকি হাসপাতালে উপস্থিত থাকা ফাল্গুনের জেঠু সঞ্জীব দেবনাথ জরুরি বিভাগের চিকিৎসকদের বলেন ভাইজির মাথায় আঘাত লাগার কথা। তবুও কোনও চিকিৎসক কর্ণপাত করেনি বলে অভিযোগ। ১৩ বছরের কিশোরী ৫ ঘন্টার ওপর মায়ের কোলের থেকেই বেলা সাড়ে বারোটার সময় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে।
advertisement
কাঁদতে কাঁদতে চোখের জল শুকিয়ে গিয়েছে কিশোরীর মায়ের। শিখা দেবনাথের আক্ষেপ, 'এতটা পাষাণ হৃদয় কী করে হয়! মেয়ে আমার চোখের সামনে আস্তে আস্তে নেতিয়ে পরছিল, তবুও কোনও ডাক্তার এল না। শখ করে পুজোর জামা কিনেছিলাম, কে পড়বে সেই জামা! আমার ছোট্ট মেয়েটা চলে গেল, এই ক্ষতি কীভাবে পূরণ হবে? ফাল্গুনী দেবনাথের জেঠু সঞ্জীব দেবনাথ কাঁদতে কাঁদতে বলেন, 'ভাইজিকে অনেক আশা নিয়ে এই এনআরএস মেডিকেল কলেজে নিয়ে এসেছিলাম কিন্তু বাড়ি ফিরিয়ে নিতে পারলাম না, আমরা গরীব মানুষ। আমাদের তো আর বড় বড় নার্সিংহোম বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার জায়গা নেই, আমাদের জন্য কেউ নেই।'
advertisement
advertisement
অন্যদিকে, এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মৃত কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছে। এনআরএস হাসপাতালে বক্তব্য রোগীকে ভর্তি করার পর দুই ইউনিট রক্তের রিকুইজিশন দেওয়া হয়েছিল রোগীর পরিবার সেই রক্ত জোগাড় করেনি। এমনকি রক্ত যে তারা যোগার করতে পারেনি সেই বিষয়টাও চিকিৎসক, নার্স কাউকে জানায়নি। এমনকি সকালবেলা পেট থেকে পড়ে যাওয়ার পরও ডাক্তার এসে তার সিটিস্ক্যান করার জন্য লগবুকে লিখে দিয়ে যায়। মৃত ফাল্গুনের পরিবারের কেউ সিটি স্ক্যান করার জন্য নিয়ে যায়নি। তবুও লিখিত অভিযোগ পেলে আমরা গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখব যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয়, নিশ্চয়ই ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
advertisement
ABHIJIT CHANDA
কলকাতা এবং পশ্চিমবঙ্গের সব লেটেস্ট ব্রেকিং নিউজ পাবেন নিউজ 18 বাংলায় ৷ থাকছে দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের খবরও ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং সব গুরুত্বপূর্ণ খবর নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি সব খবরের আপডেট পেতে ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
September 22, 2020 9:25 PM IST