জলপাইগুড়ি: চারিদিকে সবুজ গালিচা, তারই মাঝে চলছে উন্নত প্রজাতির গরুর পরিচর্যা। এই গরুর দুধেই মিটছে চা শ্রমিক পরিবারের শিশুদের পুষ্টির চাহিদা। চা বাগানের মালিক নিজের খরচে শ্রমিক পরিবারের জন্য এই বন্দোবস্ত করেছেন। আর চা শ্রমিকদের শিশুরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেই দুধ পান করছে।
চা বাগান মানেই যেখানে মালিকদের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের লাগাতার শোষণের অভিযোগ ওঠে সেখানে এই ছবিটা বলতে গেলে উলটপুরাণ রচনা করেছে। জলপাইগুড়ির ডেঙ্গুয়া ঝাড় চা বাগানে শ্রমিকদের স্বার্থে এই বন্দোবস্ত গড়ে উঠেছে। যা গোটা রাজ্যের মধ্যে প্রথম। এখানে গরুর দুধ যেমন শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা পান করছে তেমনই গরুর বর্জ্য দিয়ে তৈরি হচ্ছে গাছের সার।
আরও পড়ুন: স্কুল জীবনে দাঁড়ি, শেষ হল উচ্চমাধ্যমিক! বড় হওয়ার আনন্দের সঙ্গে মিশল বন্ধু বিচ্ছেদের কষ্ট
বিশাল এলাকাজুড়ে ডেঙ্গুয়া ঝাড় চা বাগান অবস্থিত। এখানকার চা ইতিমধ্যেই বিখ্যাত হয়েছে দেশ-বিদেশে। কয়েক হাজার শ্রমিক এই চা বাগানে কাজ করেন। তাঁদের জন্যই যে ব্যবসায় এই সাফল্য তা বোঝেন বাগান মালিকরাও। সেই কারণেই শ্রমিকদের পরবর্তী প্রজন্মের প্রতিও বাগান কর্তৃপক্ষ দিয়েছে বিশেষ নজর। আসলে চা বাগান শ্রমিকদের শিশুরা অপুষ্টিতে ভোগেন। এটাই পরিচিত ছবি। তবে সেই পরিচিত ছবিকে বদলে দিতেই উঠেপড়ে লেগেছে ডেঙ্গুয়া ঝাড় চা বাগান কর্তৃপক্ষ। আর তাই চা বাগানেই গড়ে তোলা হয়েছে ডেয়ারি। উন্নত প্রজাতির গরু লালন পালন করা হচ্ছে। প্রতিদিনই মিলছে প্রায় ২০০ লিটার নির্ভেজাল দুধ। পাশপাশি গরুর বর্জ্য থেকে চা গাছের পুষ্টি জোগাতে মিলছে জৈব সার। সব মিলিয়ে এই মহৎ কর্মযজ্ঞের সুদূর প্রসারী ফল পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী সকলে।
ডেঙ্গুয়া ঝাড় চা বাগানের সিইও জীবনচন্দ্র পান্ডে বলেন, এই গরুগুলো থেকে পাওয়া দুধ চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের শিশুদের এবং বাগানের হাসপতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। বাড়তি দুধ বাইরে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে গরুর প্রতিপালন এবং ডেয়ারির কাজে নিযুক্ত কর্মীদের বেতন দেওয়া হচ্ছে। গরুর গোবর থেকে তৈরি হচ্ছে চা গাছের জন্য জৈব সার। সব মিলিয়ে ডেঙ্গুয়া ঝাড় চা বাগানে এক ফিল গুড পরিবেশ ছড়িয়ে পড়েছে।
সুরজিৎ দে
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Jalpaiguri News