Sheikh Hasina Interview| 'বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, দেশে এখন চরমপন্থার দাপাদাপি', মুখ খুললেন শেখ হাসিনা

Last Updated:

শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকারে চরমপন্থা, বিচারব্যবস্থার দুর্বলতা ও সংবিধান ভাঙন ঘটেছে। অবাধ নির্বাচন ছাড়া গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।

'বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, দেশে এখন চরমপন্থার দাপাদাপি', মুখ খুললেন শেখ হাসিনা
'বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, দেশে এখন চরমপন্থার দাপাদাপি', মুখ খুললেন শেখ হাসিনা
বাংলাদেশের গণতন্ত্র, চরমপন্থা ও দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে সরব হলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি অভিযোগ করেন, মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে দেশে চরমপন্থার উত্থান ঘটেছে, সংবিধানিক কাঠামো ভেঙে পড়ছে এবং বিচারব্যবস্থাকে পরিকল্পিত ভাবে দুর্বল করা হয়েছে। শেখ হাসিনার দাবি, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ছাড়া বাংলাদেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার সম্ভব নয়।
দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৪ সালের অস্থিরতা কোনও শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলন ছিল না। প্রথমে প্রকৃত ছাত্র আন্দোলন শুরু হলেও পরে চরমপন্থীরা সেই আন্দোলনকে সহিংস বিদ্রোহে রূপ দেয়। থানা জ্বালিয়ে দেওয়া, রাষ্ট্রীয় ও যোগাযোগ পরিকাঠামো ভাঙচুর—সব মিলিয়ে পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ ভাঙনের দিকে গিয়েছিল। তাঁর কথায়, তখন আর সেটি নাগরিক প্রতিবাদ ছিল না, ছিল হিংস্র জনতার তাণ্ডব।
advertisement
advertisement
শেখ হাসিনা বলেন, “বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, দেশে এখন চরমপন্থার দাপাদাপি।” তিনি জানান, মানুষ ও নাগরিকদের নিরাপত্তা তাঁর কাছে সর্বাগ্রে। সেই কারণেই অরাজতকতার মধ্যে পড়ে তিনি বাধ্য হয়ে দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি বলেন, “এই সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, তবে আরও প্রাণহানি ঠেকানো এবং আশপাশের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই এই পথ বেছে নিতে হয়।”
advertisement
বাংলাদেশে ফেরার প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট শর্ত রাখেন। তাঁর মতে, আগে সংবিধান ও আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। আওয়ামি লিগের উপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, মিথ্যা মামলায় আটক রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি এবং প্রকৃত অর্থে অবাধ নির্বাচন—এই তিনটি বিষয় নিশ্চিত না হলে গণতান্ত্রিক বৈধতার প্রশ্নই ওঠে না। তিনি বলেন, জনগণের ভোটে নয়বার নির্বাচিত দলকে নিষিদ্ধ রেখে কোনও সরকার গণতান্ত্রিক দাবি করতে পারে না।
advertisement
২০২৪ সালের আন্দোলন দমনে সরকারের ভূমিকা নিয়ে ওঠা অভিযোগ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, প্রথম দিকে ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল এবং দাবিও মেনে নেওয়া হয়। কিন্তু পরে চরমপন্থীরা পরিস্থিতি বদলে দেয়। পুলিশ স্টেশন পোড়ানো ও রাষ্ট্রীয় সম্পত্তিতে হামলার মুখে যে কোনও সরকার যেমন ব্যবস্থা নেয়, তেমনই আইনশৃঙ্খলা ফেরাতে পদক্ষেপ করা হয়।
advertisement
তিনি জানান, ২০২৪ সালের আগস্টে ঘটে যাওয়া মৃত্যুর তদন্তে একটি বিচার বিভাগীয় কমিশন গঠন করা হয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতায় এসেই ইউনুস সরকার সেই কমিশন ভেঙে দেয়, দোষী সাব্যস্ত সন্ত্রাসীদের মুক্তি দেয় এবং যাদের ‘জুলাই যোদ্ধা’ বলে মহিমান্বিত করা হচ্ছে, তাদের কার্যত দায়মুক্তি দেয়। তাঁর অভিযোগ, সত্য উদ্ঘাটিত হবে বলেই ওই তদন্ত বন্ধ করা হয়েছে।
advertisement
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সম্পর্কে শেখ হাসিনার বক্তব্য, ইউনূস জনগণের একটিও ভোট না পেয়ে ক্ষমতায় বসেছেন। তাঁর অভিযোগ, মন্ত্রিসভায় চরমপন্থীদের জায়গা দেওয়া হয়েছে, দোষী সন্ত্রাসীদের ছাড়া হয়েছে এবং সংখ্যালঘুদের উপর হামলা রুখতে সরকার ব্যর্থ। আওয়ামি লিগের আমলে যে অর্থনীতি চারগুণ বেড়েছিল, তা এখন কার্যত থমকে গিয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রস্তাবিত নির্বাচন প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামি লিগ নিষিদ্ধ থাকলে কোনও নির্বাচনই বৈধ হতে পারে না। তাঁর আশঙ্কা, চরমপন্থীরা ইউনুসকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক মহলে গ্রহণযোগ্য মুখ দেখিয়ে দেশের ভিতরে প্রতিষ্ঠানগুলিকে মৌলবাদী করে তুলছে। তবু বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রে অটল বিশ্বাসের উপর আস্থা রাখছেন তিনি।
advertisement
নিজের শাসনকালে গণতান্ত্রিক পরিসর নিয়ে বিতর্ক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, নব্বইয়ের দশকে তাঁর দলই দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিল। সামরিক শাসনের অভিজ্ঞতা থেকেই গণতন্ত্রের গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন তাঁরা। তাঁর দাবি, আওয়ামি লিগের আমলে বিরোধী রাজনীতির সুযোগ ছিল, যদিও কিছু দল নির্বাচন বয়কট করে সাধারণ মানুষের পছন্দের সুযোগ কমিয়েছিল।
বর্তমান সরকারের আন্তর্জাতিক অবস্থান নিয়েও কড়া সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমি সমর্থনে ক্ষমতায় এলেও এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি ইউনুস সরকারের পদক্ষেপের নিন্দা করছে, মন্ত্রিসভার সদস্যরা পদত্যাগ করছেন, সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে এবং নির্বিচারে গ্রেফতার চলছে। এর ফলে দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, সব প্রতিবেশীর সঙ্গে সম্পর্ক থাকা জরুরি হলেও ১৯৭১ সালের গণহত্যার স্বীকৃতি না দেওয়া পাকিস্তানের সঙ্গে ইউনূস সরকারের তড়িঘড়ি ঘনিষ্ঠতা উদ্বেগজনক। তাঁর মতে, কোনও নির্বাচিত ম্যান্ডেট ছাড়া এমন কৌশলগত সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই। অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে বৈধ সরকার গঠিত হলেই বাংলাদেশের বিদেশনীতি জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে পুনর্গঠিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
সাক্ষাৎকারঃ অরুণ আনন্দ 
Click here to add News18 as your preferred news source on Google.
দেশের সব লেটেস্ট খবর ( National News in Bengali ) এবং বিদেশের সব খবর ( World News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ ডাউনলোড করুন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিদেশ/
Sheikh Hasina Interview| 'বাংলাদেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত সহজ ছিল না, দেশে এখন চরমপন্থার দাপাদাপি', মুখ খুললেন শেখ হাসিনা
Next Article
advertisement
ISF Left Front Alliance Talk: বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গেই জোট চায় আইএসএফ, আলিমুদ্দিনে আলোচনার পর জানালেন নওশাদ!
বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গেই জোট চায় আইএসএফ, আলিমুদ্দিনে আলোচনার পর জানালেন নওশাদ!
  • বাম-আইএসএফ জোট আলোচনা শুরু৷

  • আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকে নওশাদ সিদ্দিকি৷

  • বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement