#পেরু: চারিদিকে সবুজ-ঘেরা পাহাড়ি গ্রাম! অথচ সেই সৌন্দর্য্যকে উপভোগ করার অধিকার নেই গ্রামবাসীদের একাংশেরই! পঞ্চাশ পেরোলেই অন্ধ হয়ে যান এই গ্রামের অধিকাংশ মানুষ (Blind Village)! উত্তর আমেরিকার দেশ পেরুর (Peru) এই প্রত্যন্ত পাহাড়ি গ্রামে এটাই নাকি নিয়তি! চল্লিশ পেরোলে চালশের কথা শোনা যায় ঠিকই। কিন্তু পঞ্চাশ পেরোলেই শুধুই পুরুষরাই কেন অন্ধ হয়ে যাবেন? এমন অদ্ভুত কাণ্ড অবাক করে বৈকি। কিন্তু এর আসল কারণ জানলে চমকে যাবেন যে কেউ।
আরও পড়ুন: কিছুতেই সহে না! ফুলসজ্জার আগে বরকনের এমন কাণ্ড, ঝড়ের গতিতে ভাইরাল...
ছোট্ট দেশ পেরু ফুটবলের জন্য পৃথিবী বিখ্যাত। কিন্তু ইদানিং প্যারানের (Blind Village) কথাও জানেন অনেকে। ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম প্যারান। তবু যে অভিশপ্ত! গ্রামে সাকুল্যে ৩৬০ জন মানুষের বাস৷ যাদের ৭৫ শতাংশই অন্ধ। এখানকার পঞ্চাশ বা তার বেশি বয়সি ৬০ জন পুরুষই নাকি অন্ধত্বের শিকার ৷ অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে আজ প্যারানকে লোকে চেনে ‘অন্ধদের গ্রাম’ বা ‘দৃষ্টিহীনদের গ্রাম’ বলে৷ কিন্তু এমন কেন? বেছে বেছে একটি গ্রামের প্রৌঢ় পুরুষরা অন্ধ হয়ে যাচ্ছেন কীভাবে?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসল কারণ সেই জিন। প্রায় ৩ হাজার ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই গ্রামের বেশির ভাগ মানুষই চোখের একটি জিনগত রোগে আক্রান্ত। জন্মগত সেই রোগের নাম “রেটিনাইটিস” ৷ যার ফলে একটা সময় চোখের “টানেল ভিশন” নষ্ট হয়ে যায় ৷ আর তার ফলেই জীবনের মাঝপথে নেমে আসে অন্ধকার!
জানা গিয়েছে, বহুকালে আগে সাতটি পরিবার গড়ে তোলে এই গ্রামটিকে ৷ আর তাঁরাই নাকি সঙ্গে করে নিয়ে আসে অন্ধত্বের (Blind Village) রোগও। তার উপর একটা সময় অবধি ডাক্তার দেখিয়ে রোগ সারানোর কথা ভাবাই যেত না দুর্গম প্যারানে৷ কোনও চিকিৎসকই ছিল না এলাকার ধারেকাছে৷ ছিল না রাস্তাও৷ সম্প্রতি মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে গ্রাম সংযোগকারী নতুন রাস্তা হয়েছে ৷ যেহেতু অঞ্চলে সোনা, রুপোর খোঁজে হাজির হয় একটি খনন সংস্থা। এই সংস্থার দৌলতেই গ্রামের বাসিন্দারা প্রথম চিকিৎসার সুযোগ পান। খনন সংস্থার চিকিৎসকরাই গ্রামের অন্ধ পুরুষদের চোখ পরীক্ষা করেন। এবং জানান, এই রোগ আসলে জন্মগত। এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যাই আসল রহস্য।
আরও পড়ুন: মনের মানুষকে টেডি বিয়ার দিতে চান? সাবধান! আগে জেনে নিন কোন রঙের কী মানে বোঝায়!
চিকিৎসকরা জানান, এরোগের কোনও চিকিৎসা নেই। যে মায়েদের এক্স ক্রোমোজোমের সমস্যা রয়েছে তাঁদের পুত্র সন্তান জন্ম নিচ্ছে ভবিষ্যৎ অন্ধত্বের নিয়তি নিয়েই ৷ তাই বলে গ্রামের তরুণীও অন্ধ হবে! সে কিন্তু জন্মান্ধ ছিল না ৷ অন্য গ্রামে বিয়ে দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যে দৃষ্টিশক্তি হারায় ৷ এদিকে অন্ধ স্ত্রীর সন্তান নিয়ে ভয়ে ছিল স্বামীর ৷ সন্তানও কী তবে? না, তেমন খারাপ কিছু ঘটেনি। অন্ধ হয়ে জন্মায়নি তরুণীর কন্যাসন্তান ৷ প্যারানের অধিবাসীদের বক্তব্য, বেঁচে গেছে, পুরুষ হলেই এখন “চোখ” থাকলেও ভবিষ্যৎ হত “অন্ধকার”!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।