#: এ যেন ২০১০ সালের হলিউড ছবি সেক্স অ্যান্ড দ্য সিটি ২-এর একটি বিক্ষিপ্ত দৃশ্য মনে করিয়ে দেয়। যেখানে পাশ্চাত্যের ৪ আধুনিকা তাঁদের খোলামেলা পোশাকের জন্য জনরোষের মুখে পড়লে তাঁদের উদ্ধার করেছেন বোরখাবন্দিনীরা। এর পর সেই বোরখা খুলে ফেলার পর উদ্ভাসিত হয়েছে কল্পনাতীত আধুনিক পোশাকের সঙ্গতে তুলনাহীন অনাবৃত দেহসৌন্দর্য!
সোরায়া শাহিদি এবং তাঁর কিছু ক্লায়েন্টের ক্ষেত্রেও গল্পটা প্রায় একই রকম। কট্টর মৌলবাদের মুখে দাঁড়িয়ে শাহিদি যেমন ট্যাটুতে ভরিয়ে তুলছেন ক্লায়েন্টদের শরীর, তেমনই বোরখার আড়ালে তা ঢেকে রেখে মনের সাধ মেটাচ্ছেন কাবুলকন্যারাও।
খবর বলছে যে ২৭ বছর বয়সের সোরায়া শাহিদি এই ট্যাটু আঁকার বিদ্যা রপ্ত করেছিলেন তুরস্ক এবং ইরানে। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁকে পড়তে হয়েছিল নানা রকমের বাধার মুখে। কেন না, পুরুষশাসিত সমাজে যে কোনও নারীর ইচ্ছাপূরণই কিঞ্চিৎ হলেও নানা সমস্যার জন্ম দেয়। আর এই ক্ষেত্রে শাহিদির ইচ্ছাপূরণ মোটেও কিঞ্চিৎ নয়! তাঁর হাত ধরেই যে আফগানিস্তানের নারীদের শরীর স্পর্শ করছে আধুনিকতার খোলা হাওয়া! তার উপরে আছে মৌলবাদের চোখরাঙানিও!
ইসলাম কি ট্যাটু নিয়ে কখনও কোনও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে? মৌলবাদীদের দিকে প্রশ্নটা ছুড়ে দিতে এতটুকুও কুণ্ঠিত নন শিল্পী। বোঝাই যাচ্ছে- ধর্ম সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন শাহিদি। তা বলে জোর করে চাপানো কোনও অযৌক্তিক ফরমান তিনি মেনে নেবেন না!
শাহিদি জানিয়েছেন যে মৌলবাদীদের একাংশ যেমন ইসলামে ট্যাটুর স্থান নেই বলে ফতোয়া জারি করেছে, তেমনই আবার বহু পণ্ডিত তাঁর সিদ্ধান্তকে সমর্থনও জানিয়েছেন। এই দুইয়ের সংঘর্ষে যে প্রতিক্রিয়া জন্ম নিয়েছে, তাতেই রমরমিয়ে চলছে শিল্পীর ট্যাটু পার্লার। দ্বিধা থাকলেও অনেকে ধীরে ধীরে কাটিয়ে উঠছেন তা। এসে ট্যাটু করিয়ে যাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে কাবুলকন্যারা এখনও সাবেকি নকশারই পক্ষপাতী, তাঁরা নানা রকমের ফুল, প্রজাপতির ট্যাটুই বেশি পছন্দ করছেন বলে জানিয়েছেন শিল্পী। তবে কাবুলের ছেলেদের ট্যাটুর ব্যাপারে পছন্দ যে যে বেশ অন্যরকম, সেটাও বলতে ভুলছেন না তিনি। জানিয়েছেন, সম্প্রতি এক তরুণ তাঁর কাছে এসে নিজের শরীরে এক কবরের ছবি আঁকিয়েছেন যার তলায় তাঁকে লিখে দিতে হয়েছে মৃত্যুর স্বেচ্ছাসেবক কথাটি!