#মুম্বই: লাদাখে চিনা সেনার আগ্রাসী মনোভাব দেখার পর আর কোনও ঝুঁকি নিতে রাজি নয় ভারতীয় নৌবাহিনী৷ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর স্থলবাহিনী এবং বায়ুসেনা যেমন সতর্ক রয়েছে, সেরকমই আরব সাগর বা বঙ্গোপসাগরে যাতে চিনা নৌবাহিনী কোনও সমস্যা তৈরি করতে না পারে, তা নিশ্চিত করতেই বাড়তি সতর্ক থাকছে ভারতীয় নৌসেনাও৷
মুম্বই, বিশাখাপত্তনমে ভারতীয় নৌসেনার সূত্র উদ্ধৃত করে একটি সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে এমনই দাবি করা হয়েছে৷ ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ১৫ জুন গালওয়ানে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পরই নৌসেনার একাধিক যুদ্ধজাহাজ এবং সাবমেরিন দেশের পূর্ব এবং পশ্চিম জলভাগে আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে৷ এর মধ্যে বায়ুসেনার বিমান পরিবহণে সক্ষম যুদ্ধজাহাজও রয়েছে৷ মালাকা প্রণালী এবং হর্ন অফ আফ্রিকা হয়ে চিনা নৌবাহিনী যাতে কোনওভাবেই ভারতীয় জলসীমায় ঢুকে পড়ার চেষ্টা না করতে পারে, তা নিশ্চিত করতেই এই সতর্কতা অবলম্বন করেছে ভারতীয় নৌবাহিনী৷
জলদস্যুদের রোখার অজুহাতে চিনের যুদ্ধজাহাজগুলি বালোচিস্তানের গদার বন্দর থেকে লোহিত সাগরের জিবৌটি নৌঘাঁটির মধ্যে সবসময়ই ঘোরাফেরা করে৷ মালাকা প্রণালী হয়ে সেগুলি ভারত মহাসাগরেও ঢুকে পড়ে ৷
সূ্ত্র উদ্ধৃত করে দাবি করা হয়েছে, ভারতীয় নৌবাহিনী এই আগ্রাসী অবস্থান নেওয়ার পরই চিনের তিনটি যুদ্ধজাহাজ গাল্ফ অফ এডেন-এ নিরাপদ দূরত্বে সরে গিয়েছে৷ পাশাপাশি মালাকা প্রণালী হয়ে তাদের ঘাঁটির দিকে ফিরে গিয়েছে চিনের আরও তিনটি যুদ্ধজাহাজ৷ নৌবাহিনীর এক কমান্ডারের কথায়, 'ইন্দোনেশিয়া হয়ে একটি চিনা যুদ্ধজাহাজ ভারত মহাসাগরে প্রবেশ করছিল৷ কিন্তু ভারতীয় নৌবাহিনী যেকোনও পরিস্থিতির জন্য তৈরি বুঝে সেটিও নিজের অভিমুখ ঘুরিয়ে নেয়৷'
মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান এবং পূর্ব আফ্রিকার একাধিক বন্দরে নিজেদের দখলদারি এবং উপস্থিতি বাড়িয়েছে চিনা নৌবাহিনী৷ তাদের উদ্দেশ্যই হল ভারতীয় নৌবাহিনীকে চাপে রাখা৷ একই সঙ্গে মার্কিন এবং ব্রিটিশ ও ফরাসি নৌবাহিনীর উপর নজর রাখতেও এই কৌশল নিয়েছে চিনের নৌবাহিনী৷
চিনের পাল্টা ভারতও নিজেদের জলসীমার মধ্যে থাকা ১০৬২টি দ্বীপে সামরিক পরিকাঠামো শক্তিশালী করার পরিকল্পনা করেছে ভারত৷ শুধুমাত্র যুদ্ধবিমান বহনে সক্ষম যুদ্ধজাহাজ কেনার পথে না হেঁটে পূর্বদিকে আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং পশ্চিমে লাক্ষাদীপে নিজেদের পরিকাঠামো উন্নতির দিকে জোর দিয়েছে ভারতের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা৷ ভারতের পরিকল্পনাই হল, আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরের উপরে থাকা এই দ্বীপগুলিতে বিমানঘাঁটি গড়ে তোলা৷ যাতে প্রয়োজনে সেখান থেকেই যুদ্ধবিমান ওঠানামা করতে পারে৷