Kali Puja 2023: ঘন জঙ্গলের মাঝেই শুরু হয় আরাধনা, শতাব্দী প্রাচীন এই কালীপুজোর ইতিহাস চমকপ্রদ
- Reported by:RAKESH MAITY
- hyperlocal
Last Updated:
গ্রামের নাম 'কালীকাপুর'। কালী পুজোকে কেন্দ্র করেই গ্রামের এমন নামকরণ।
হাওড়া: গ্রামের নাম ‘ কালীকাপুর’। কালী পুজোকে কেন্দ্র করেই গ্রামের এমন নামকরণ। সে প্রায় পাঁচ শতাব্দী বছর আগের কথা। বর্তমানের জনবহুল গ্রাম সে সময় ছিল জন শূন্য। ঘন জঙ্গলে ঢাকা নির্জন স্থান। কানা দামোদর নদীর পাড়। যদিও কালের নিয়মে বর্তমানে কানা দামোদর নদীর অবস্থান কিছুটা দূরে।
জানা যায়, তখন কচু বন আর গাঢ় জঙ্গলময় ছিল এই স্থান। জঙ্গলে বন্য পশুর দাপট ছিল। কেউ সাহস পেতোনা এখানে আসার। জনশ্রুতি থেকে জানা যায়, এই ঘন জঙ্গলেই বাস করতেন এক কাপালিক। তিনি জঙ্গলে একাকী থেকে মা কালীর আরাধনা করতেন।
advertisement
advertisement
তখন বর্ধমান রাজার রাজত্বকাল। কথিত রয়েছে, রাজার আদেশ মতোই কাপালিকের অবর্তমানে মা কালীকে সেবা করার দ্বায়িত্ব পেয়েছিলেন বর্ধমানের ঘোষ পরিবারে। জানা যায়, সে সময় বর্ধমান রাজসভার নবরত্নের একজন ছিলেন তিলক রাম ঘোষ। বর্ধমান থেকে রাজার আদেশ মতোই মা কালীর সেবার উদ্দেশ্যে সপরিবারে হাওড়ার উদয়নারায়নপুরে চলে এসেছিল ঘোষ পরিবার। তৎকালীন ঘোষ পরিবার ভাট উপাধি পেয়েছিল রাজার কাছে। ধীরে ধীরে বসতি বৃদ্ধি পেতে থাকে মন্দির থেকে কিছুটা দূরে ভাট পরিবারের বসবাস শুরু করেছিল সেখানেই। সেই স্থান দেবীপুর গ্রাম নামে পরিচিত।
advertisement
বর্তমানে যে স্থানে কালী মন্দির রয়েছে। তখন ঘন জঙ্গল, পুজো করার জন্য পুরোহিতের সঙ্গে লেঠেল নিয়ে আসা হতো বন্য পশুদের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে। মন্দির সংলগ্ন ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে বর্তমানে ঘনবসতি গড়ে উঠেছে। এই কালী পুজো বা মন্দির কেন্দ্র জনবসতি গড়ে ওঠার কারনে গ্রামের নামকরণ কালীকাপুর বলেই জানায় স্থানীয় মানুষ।
advertisement
মন্দিরের পুরনো রীতি অনুযায়ী প্রতিদিন একবার মাতৃ পুজো অনুষ্ঠিত হয় এখানে। জানা যায়, সে সময় ঘন জঙ্গল কোনওরকমে লেঠেল সঙ্গে নিয়ে দিনে একবার মা কালীর পুজো করা সম্ভব হতো। একবার পুজো হওয়ার কারণেই ‘একাহারি ‘কালী মা ‘ ও বলা হয়।
কথিত রয়েছে প্রায় ৫০০ বছরের বেশি আগে ঘন জঙ্গলে এই পুজোর সূচনা হয়েছিল। শুরুতে মূর্তি ছাড়াই ঘট প্রতিষ্ঠা করে মা কালী রূপে পুজো হতো। সেই ঘট নাকি আজও মন্দিরে রয়েছে বলেই জানান পুরোহিত এবং স্থানীয় মানুষ।
advertisement
এ প্রসঙ্গে পরিবার সদস্য অনির্বাণ ভাট জানান, ‘‘এখানের ভাট পরিবারের প্রথম পুরুষ তিলকরা ঘোষ (ভাট) রাজার আদেশ মতো বর্ধমান থেকে এখানে মায়ের সেবা করতে এসেছিলেন। সে সময় থেকে কয়েক শতাব্দী পেরিয়ে গেছে। তবে প্রায় সমস্ত নিয়ম রীতি রয়েছে অক্ষত।’’
তিনি আরও জানান, গ্রামে অন্য কোনও মূর্তি পূজা নিষিদ্ধ ছিল। বৈশাখের ফলহারিণী, মকর সংক্রান্তি, নবমী এবং শ্যামাকালী পুজো-সহ মোট চারটি বিশেষ পুজো হয় প্রতি বছর।জানা যায়, মন্দিরে কষ্ঠি পাথরের মায়ের যে মূর্তি। তা প্রায় দু’শো বছর প্রাচীন।
advertisement
রাকেশ মাইতি
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
November 10, 2023 2:29 PM IST