হোম /খবর /হুগলি /
অন্ধবিশ্বাস ডেকে আনল মধ্যযুগীয় বর্বরতা, ভয়ানক ঘটনা হুগলিতে, লজ্জায় মাথা হেঁট

Hooghly Superstition Horror|| অন্ধবিশ্বাস ডেকে আনল মধ্যযুগীয় বর্বরতা, ভয়ানক ঘটনা হুগলিতে, লজ্জায় মাথা হেঁট

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

Hooghly Horror: শুধুমাত্র তার জেরে ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করে গ্রাম ছাড়া করা হল বৃদ্ধ দম্পতিকে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির দাদপুর চক কৃষ্ণপুর গ্রামে।

  • Share this:

হুগলি: এখনও রয়েছে মধ্যযুগীয় বর্বরতা। অন্ধবিশ্বাস এখনও রয়ে গিয়েছে এক সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে। শুধুমাত্র তার জেরেই ডাইনি অপবাদ দিয়ে মারধর করে গ্রাম ছাড়া করা হয়েছে গ্রামের বৃদ্ধ দম্পতিকে। ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির দাদপুর চক কৃষ্ণপুর গ্রামে।

প্রতিবেশী নাবালিকার জ্বর হওয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার সূত্রপাত। ওঝা ডেকে ঝাড়ফুঁক করলে ওঝা ওই দম্পতিদের ডাইনি অপবাদ দেয়। তারপর থেকেই গ্রামবাসীদের অত্যাচারে ঘর ছাড়া ওই বৃদ্ধ দম্পতি। চার দিন ধরে রেল স্টেশনে কাটিয়ে তাঁদের এখন ঠাঁই হয়েছে এক স্কুল শিক্ষকের বাড়িতে।

আরও পড়ুনঃ নজির গড়ল পৌলমী-সঞ্জীব! এ ভাবেও বিয়ে করা যায়? হাঁ করে দেখল গোটা উত্তরপাড়া

নিপীড়িত ওই বৃদ্ধা হুগলির দাদপুর চক কৃষ্ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। একসঙ্গে বহু বছর ধরে তিনি ঘর করছেন এই গ্রামেই। কিছু বছর আগেই দুর্ঘটনায় তাঁদের একমাত্র ছেলের মৃত্যু হয়। ছেলে হারা বৃদ্ধ মা-বাবার এমনিতেই দিন কাটছিল অতি কষ্টে। ঘটনার সূত্রপাত, প্রতিবেশী এক ১৩ বছরের নাবালিকার জ্বর হওয়া নিয়ে। নাবালিকার বাবা সনৎ দুর্লভ ওঝা ডাকেন মেয়ের জ্বর সারাতে। ঝাড়ফুঁক করে ওঝা নিদান দেয় নাবালিকাকে ডাইনি ধরেছে। সেই ডাইনি হল ওই বৃদ্ধা। যার এক ছেলে মারা গিয়েছে কয়েক বছর আগে। গ্রামে সালিশি ডেকে দম্পতিকে জানিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে হবে। প্রতিবাদ করায় মারধর করা হয় তাদের। দাদপুর থানার পুলিশ গিয়ে দম্পতিকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পুলিশ তাদের কিছুদিন কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে থাকতে বলেন। আত্মীয় বাড়ি গেলে সেখানেও ভয় দেখানো হয়। এরপর ওই দম্পতি চুঁচুড়া স্টেশনে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

আরও পড়ুনঃ সিঁদুরদানের ঠিক আগেই এ কী কাণ্ড! নববধূ ঘটালেন অদ্ভূত ঘটনা, অবাক চোখে দেখল হুগলি

জানা গিয়েছে, চারদিন সেখানে চা বিস্কুট খেয়ে দিন কাটে তাঁদের। গ্রামে চাষের ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বাড়ি ফিরতে চেয়ে দাদপুর পঞ্চায়েত ও থানায় আবেদন জানান দম্পতি। গ্রামে ফিরলে তাদের উপর আবার আক্রমন হতে পারে মনে করে ঝুঁকি নিতে চায়নি প্রশাসন। দাদপুর পঞ্চায়েতের প্রধান জয়া মির্দা বলেন, ঘটনাটি পোলবা-দাদপুর বিডিওকে জানানো হয়েছে। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে প্রৌঢ় দম্পতিকে বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করা হবে।

বর্তমানে দাদপুরের শিক্ষক সফিউল ইসলামের বাড়িতে রয়েছেন দম্পতি। সফিউল ইসলাম বলেন, কুসংস্কার এখনও রয়েছে গ্রামে। তাই দম্পতিকে জোর করে গ্রামে ফিরিয়ে দিলেই হবে না। গ্রামবাসীদের মন থেকে ডাইনির কুসংস্কার দূর করতে হবে। এ জন্য বিজ্ঞান মঞ্চকে নিয়ে প্রশাসনকে কাজ করতে হবে। আর এই ধরনের ওঝা গুণিনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।

রাহী হালদার

Published by:Shubhagata Dey
First published:

Tags: Hooghly