হোম /খবর /হুগলি /
কাজে না গিয়েও গুনতেন মাইনে! দল থেকে বহিষ্কারের পর চাকরি থেকেও সাসপেন্ড শান্তনু

Hooghly News: কাজে না গিয়েও গুনতেন মাইনে! দল থেকে বহিষ্কারের পর চাকরি থেকেও সাসপেন্ড শান্তনু

শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়

শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়

ইডির দাবি, স্কুলে শিক্ষক–শিক্ষাকর্মী পদে চাকরির ‘রেট’ ঠিক করতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঠিক করা ‘রেট’–এ টাকা তুলতেন কুন্তল ও তাপস মণ্ডল।

  • Share this:

হুগলি: কাজে না গিয়েই মোট অঙ্কের মাইনে গুনতেন। উপস্থিত দেওয়ার লগ বুক চলে আসত তাঁর বাড়িতেই। ইডির গ্রেফতারের পর সে সব অতীত। মঙ্গলবার দল থেকে বহিষ্কৃত করা হয়েছিল, সেই ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বিদ্যুৎ দফতরের চাকরি থেকে সাসপেন্ড করা হলো নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বুধবার বিদ্যুৎ বণ্টন দফতরের এই ঘোষণার পরে বিপাকে জেলা পরিষদের জন স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ।

শান্তনুর বাবা বিদ্যুৎ দফতরের গ্রুপ ডি পদের কর্মী ছিলেন। বাবার মৃত্যুর পর বলাগড়ের সোমড়াবাজার বিদ্যুৎ দফতরে বাবার চাকরিটি পান শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। এই গ্রুপ ডি কর্মীদের মূলত কাজ বাড়ি বাড়ি মিটার চেক করা অথবা নতুন কোন কানেকশন হলে তা জুড়তে যাওয়া। তবে এই দুটির মধ্যে কোন কাজই কোনদিন করতে দেখা যায়নি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এমনটাই দাবি শান্তনুর সহকর্মীদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যুৎ দফতরের এক কর্মী জানান, শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় কোনদিন ফিল্ডে বেরিয়ে কাজ করেননি। তবে মাসের একদিন এসে লগবুকে সই করে যেতেন। আবার কোনও কোনও সময়ে তার বাড়িও যেত লগবুক। তবে কাজে না এসেও মাসের পর মাস মোটা অঙ্কের মাইনে তুলতেন তিনি।আরও পড়ুন: শান্তনুর ফোনেই সব রহস্য, এবার বড় কিছু ঘটবে! শুভেন্দুর দাবিতে পাল্টা 'আপনি কোথায় থাকবেন'?

ওই দফতরের স্টেশন ম্যানেজার আসিফ ইকবাল জানান শান্তনুকে অফিসে আসতে দেখেছেন। মাসে কি প্রতিদিন আসতেন? লগবুক কি সই করতেন ? নাকি লগবুক তাঁর বাড়িতে যেত ? এসব কোন প্রশ্নের উত্তর দিতে চাননি তিনি। তার একটাই কথা তিনি কিছুই জানেন না। যা জানার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে জানুন।

শুক্রবার রাতে হুগলির তৃণমূল কংগ্রেসের যুবনেতা শান্তনুকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেফতার করে ইডি। শুক্রবার সকালে ইডির তলবে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজির হয়েছিলেন হুগলি জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনভর জেরার পর রাতে তাঁকে গ্রেফতার করে ইডি অফিসাররা। এদিন তাঁকে আদালতে তোলা হয়। গত ২০ জানুয়ারি শান্তনুর বাড়িতে হানা দেয় ইডির আধিকারিকরা। সেখানে চলে তল্লাশি। তখন বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি বাজেয়াপ্ত করে ইডি। এরপর মোট সাতবার তাঁকে তলব করা হয়েছিল।

কেন তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে?‌ ইডির দাবি, স্কুলে শিক্ষক–শিক্ষাকর্মী পদে চাকরির ‘রেট’ ঠিক করতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর ঠিক করা ‘রেট’–এ টাকা তুলতেন কুন্তল ও তাপস মণ্ডল। সেই টাকা শান্তনু পাঠিয়ে দিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও ‘কাকু’কে। আর ‘কাকু’ মারফৎ সেই টাকা চলে যেত আর এক প্রভাবশালীর কাছে। কুন্তল ঘনিষ্ঠ বিউটি পার্লার মালকিন সোমা চক্রবর্তী হাজিরা দেন ইডি দপ্তরে। আগামী মঙ্গলবার আবার অভিনেতা বনি সেনগুপ্তকে কুন্তলের উপহার দেওয়া গাড়ির নথি নিয়ে ইডি দফতরে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। শোনা যায়, টেলিফোন বুথের ব্যবসা দিয়ে ‘কেরিয়ার’ শুরু। পরিবারের কেউ মারা যেতে বিদ্যুৎ বন্টন নিগমে চাকরি পান। কিন্তু এক প্রভাবশালী নেতার প্রভাবে ২০১০ সালের দিকে ছাত্র রাজনীতি থেকে তিনি হয়ে ওঠেন তৃণমূল কংগ্রেসের হুগলি জেলার যুব সভাপতি। একটা সময় স্থানীয়স্তরের দলের আদি নেতাদেরও পাত্তা দিতেন না। বলাগড়ে রিসর্ট রয়েছে তাঁর। হুগলি জেলার বিভিন্ন প্রান্ত–সহ কলকাতাতেও তাঁর ফ্ল্যাট রয়েছে। আর আছে বিলাসবহুল বেশ কয়েকটি গাড়ি।

রাহী হালদার
Published by:Rachana Majumder
First published:

Tags: ED, Santanu Banerjee, SSC Scam