Hooghly News: নিউজ ১৮ বাংলার খবরের জের, কলকাতার জুডিশিয়াল মিউজিয়ামে স্থান পাচ্ছে সুধীর সরকারের সংগ্রহ
- Published by:Kaustav Bhowmick
- news18 bangla
Last Updated:
কোলকাতা হাই কোর্টের হস্তক্ষেপে অবসান হতে চলেছে প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রাহক সুধীর সরকারের দীর্ঘ ৪০ বছরের আক্ষেপ।
হুগলি: কলকাতা হাইকোর্টের হস্তক্ষেপে অবসান হতে চলেছে প্রত্নতাত্ত্বিক সংগ্রাহক সুধীর সরকারের দীর্ঘ ৪০ বছরের আক্ষেপ। 'কেউ কথা রাখেনি', এতদিন ধরে সুধীরবাবুর গলায় এই কথাটাই শোনা যেত। অবশেষে সেই আক্ষেপের অবসান হল নিউজ ১৮ বাংলার হাত ধরে। ফেব্রুয়ারি মাসের ১ তারিখ, মঙ্গলবার তারকেশ্বরের বৈদ্যপুর এলাকায় তাঁর বাড়িতে আসেন মহাপরিপালক ও ন্যাসপাল(পশ্চিমবঙ্গ) জুডিশিয়াল অফিসার বিপ্লব রায়।
কলকাতা হাইকোর্টের জুডিশিয়াল মিউজিয়াম কাম রিসার্চ সেন্টারের দায়িত্বে আছেন বিপ্লববাবু। খুব শীঘ্রই কলকাতা হাইকোর্টে জুডিশিয়াল মিউজিয়াম কাম রিসার্চ সেন্টারটি চালু হবে বলেন জানান তিনি। সেই সংগ্রহশালাতেই স্থান পেতে চলেছে সুধীর সরকারের সংগ্রহে থাকা বেশ কিছু প্রাচীন ও মহামূল্যবান সামগ্রী। সেখানে সংগ্রহকারী হিসাবে খোদাই করা থাকবে সুধীরবাবুর নাম, যা এতদিন ধরে চেয়ে এসেছেন তিনি।
advertisement
বাংলার সর্বোচ্চ একক সংগ্রহক বলে বার বার দাবি করেছেন তারকেশ্বরের সুধীর সরকার। সংগ্রহের পরিমাণ কুড়ি লক্ষের অধিক সামগ্রী। যা দিয়ে বানানো যায় আস্ত একটি মিউজিয়াম। বিভিন্ন সময়ে একধিক সম্মানীয় ব্যক্তিদের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তাঁর একটাই দাবি, এই সংগ্রহ করা সামগ্রী দিয়ে তারকেশ্বরে নির্মাণ করা হোক একটি মিনি মিউজিয়াম। অনেকেই কথা দিয়েছিলেন, কিন্তু কথা কেউই রাখেননি!
advertisement
advertisement
সংগ্রহ করা সামগ্রী দেখতে একসময় সুধীর সরকারের বাড়িতে এসেছিলেন প্রফুল্লচন্দ্র সেন, প্রণব মুখোপাধ্যায়, জ্যোতি বসু, নরেন দে, বঙ্কিম ঘোষ, সরল দেব, শুখেন্দু শেখর রায়ের মত আরও অনেক রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। এসেছেন, দেখেছেন, কথা দিয়েছেন। কিন্তু কথা দিয়েও কেউ কথা রাখেননি বলে বার বার আক্ষেপ করেন সুধীর সরকার।তারকেশ্বর পুরসভার পক্ষ থেকেও মিনি মিউজিয়াম করার কথা দেওয়া হলেও তাও বাস্তবায়িত হয়নি।
advertisement
ভারতীয় ডাক ও তার বিভাগের কর্মী ছিলেন সুধীর সরকার। মাত্র পাঁচ বছর বয়সে বাংলাদেশের ঢাকা থেকে মা বাবার হাত ধরে তারকেশ্বর এসেছিলেন। সে আশি বছর আগের কথা। সেই পাঁচ বছর বয়স থেকেই বিভিন্ন সামগ্রী জামনোর নেশা পেয়ে বসেছিল তাঁকে। হাতের কাছে যা পেতেন সেটাই সংগ্রহ করে রাখতেন।
advertisement
বর্তমানে সংগ্রহের পরিমান ২০ লক্ষের অধিক সামগ্রী! তা এখন বস্তা এবং পুরানো ট্যাঙ্কের মধ্যে বন্দি হয়ে পড়ে আছে সুধীরবাবুর ৬ টি ঘরের মধ্যে। তাঁর সংগ্রহে আছে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সময়ের কয়েন, বাঘের নখ, ভাল্লুকের নখ, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পাইলট পোশাক, দেড়শ বছর পুরানো ঢাকাই শাড়ি, পঞ্চাশ বছর পুরানো মানস সরোবরের ব্রহ্ম কমল, হনুমান শীলা , প্রাচীনকালের তাল পাতার পুঁথি, পাখির বাসা, পাখির পালক, ১৮৬৬ সালের কলকাতা পুলিশি আইন বই, ১০ লক্ষের উপর বিভিন্ন সময়ের দেশলাইয়ের বক্স, আড়াইশো বছরের পুরানো দূরবীন। এছাড়াও দেশ-বিদেশের পুঁথিও তাঁর সংগ্রহে আছে। পৃথিবীর ক্ষুদ্রতম বাইবেল, কোরান, গীতা, রামায়ণ আছে সংগ্রহে। চালের উপর কারুকার্য করা বিভিন্ন শিল্প কলা। সেই সবই দেখতে তাঁর বাড়িতে আসেন মহাপরিপালক ও ন্যাসপাল(পশ্চিমবঙ্গ) জুডিশিয়াল অফিসার বিপ্লব রায়।
advertisement
আরও পড়ুন: নিজেরা পড়াশোনা করার সুযোগ পাননি, সন্তানদের শিক্ষিত করতে বুক দিয়ে স্কুল আগলাচ্ছেন গ্রামবাসীরা
সব দেখে বিপ্লব রায় জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি সম্প্রচারিত একটি খবর দেখেন, যেখানে হুগলির তারকেশ্বরের এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করা ছিল। সুধীর সরকারের সংগ্রহ করা সামগ্রীর বিষয়ে জানতে পেরে তাঁর সাথে যোগাযোগ করেন। তাঁর সংগ্রহ করা সামগ্রী কলকাতা হাইকোর্টের উদ্দ্যোগে যে জুডিশিয়াল মিউজিয়াম কাম রিসার্চ সেন্টারটি চালু হবে সেখানে সরক্ষণ করা হবে।
advertisement
অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টের জুডিশিয়াল মিউজিয়াম কাম রিসার্চ সেন্টারে তাঁর সংগ্রহ স্থান পাবে জেনে যারপনাই উচ্ছাসিত সুধীরবাবু।তারকেশ্বরে নাই বা হল মিনি মিউজিয়াম, তার থেকে অনেক বড় জায়গায় স্থান পাবে তাঁর সংগ্রহ। এই কথা ভেবেই অবশেষে মুখে হাসি ফুটেছে তাঁর।
রাহী হালদার
view commentsLocation :
Kolkata,West Bengal
First Published :
February 05, 2023 12:37 AM IST