রমাপদ চৌধুরী শিখিয়েছেন কখন থামতে হয় : বিনোদ ঘোষাল

Last Updated:

রমাপদ চৌধুরী একবার করে ব্যাট হাতে নিয়েছেন, ছয় মেরেছেন, আবার ব্যাট রেখে দিয়েছেন! প্রত্যেকটা বলে ছয় হাঁকানোর চেষ্টা করেননি! উনি আসল সত্যটা উপলব্ধি করেছিলেন-- প্রত্যেক বলে ছয় হাঁকানো যায় না! সেই বলটাতেই ব্যাট ঠেকাবো, যে বলটায় ছয় নিশ্চিত।

#কলকাতা: ভাল লেখার একটা মোহ আছে! এই মোহের বশেই, অনেক সময়ে অনেক লেখক ভুলে যান, জীবনযাপনের যেমন একটা আয়ু আছে, সৃষ্টিশীলতারও একটা নির্দিষ্ট সময়সীমা বাঁধা রয়েছে! আর ভুলে গিয়ে, মোহাচ্ছন্ন হয়ে লিখে যেতে থাকেন! আর সেই লেখাগুলো তাঁরই একটা কদর্য রূপ হয়ে দাঁড়ায়! বিদ্রুপ করে তাঁকেই!
এখানেই সবার থেকে আলাদা রমাপদ চৌধুরী! তিনি থামতে জানতেন! একজন সাধারণ, জুনিয়র লেখক হিসেবে তাঁর কাছ থেকে যদি আর কিছু শেখার ক্ষমতা নাও থাকে, তাঁর জীবনদর্শন থেকে এইটুকু শিখেছি, কখন থামতে হবে! তিনিই আমার দেখা একমাত্র লেখক, যিনি একটা সময়ের পর আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছিলেন--জীবনের শেষ উপন্যাসটি লিখলেন।
অনেক লেখককে আগেও দেখেছি, এখনও দেখি, যাঁরা একসময়ে সোনা ফলিয়েছেন, তাঁরা আজ লেখক জীবনের আয়ু শেষ হওয়ার কারণে এমন লেখা লেখেন, যা প্রায় অপাঠ্য! তাঁদেরও থেমে যাওয়া উচিৎ ছিল! কিন্তু ওই যে মোহ! থামতে পারেননি! সবাই তো আর রমাপদ চৌধুরী হতে পারেন না!
advertisement
advertisement
রমাপদ চৌধুরী জানতেন, যেমনভাবে শুরু করার একটা সময় থাকে, থামারও একটা সময় থাকে! একজন লেখকের পক্ষে এটা মেনে নেওয়া কষ্টকর যে তিনি শেষ হয়ে গিয়েছেন! তাঁর আর নতুন কিছু দেওয়ার নেই! আর সেটা মানতে না পেরেই অপাঠ্য-কুপাঠ্য লিখে চলেন! কিন্তু এই বাস্তবটা মেনে নিতে পেরেছিলেন রমাপদ চৌধুরী! ওই যে বললাম, সবাই তো আর রমাপদ চৌধুরী হতে পারেন না!
advertisement
অসাধারণ সংযমী এক মানুষ! পাথরের মতো ভাবলেশহীন মুখ! আপাতদৃষ্টিতে মনে হয় দয়ামায়াহীন, কোনও রসিকতা বোধ নেই! শুনেছি, তাঁর কাছে যাঁরা গল্প জমা দিতে যেতেন, অত্যন্ত নিরসভাবে বলতেন, ''ওইখানে জমা দিয়ে যান!'' একটার বেশি দুটো কথা নয়! খেজুরে গল্প করা তো দূরের কথা, লেখকরা তাঁর কাছে ঘেঁষতেও ভয় পেতেন। কিন্তু কোনও তরুণ লেখক ভাল লিখেছেন, অথচ তাঁর দৃষ্টি এড়িয়েছে, তিনি পড়েননি বা ছাপেননি, এমনও হয়নি। আসলে, নিজের বাইরে একটা কঠিন আবরণ দিয়ে রাখতেন যাতে তাঁর ভিতরের শক্ত জীবনদর্শন কেউ ভাঙতে না পারে, উঁকি মারতে না পারে তাঁর অন্দরে!
advertisement
যাঁর লেখা 'খারিজ', তাঁর হাতেই জন্ম নিয়েছে 'বন পলাশীর পদাবলী'র মতো প্রেমের উপন্যাস! 'ভারতবর্ষ'র মতো একটা ছোট গল্প কোনও লেখক যদি সারাজীবনে একটি লেখে, তার লেখকজীবন সার্থক! লোভী ছিলেন না রমাপদ চৌধুরী। বছরে একটিমাত্র উপন্যাস লিখতেন । আমরা, যাঁরা এই প্রজন্মর সাহিত্যিক বা ওঁর সময়ের অনেকেও বছরে কাঁড়ি কাঁড়ি উপন্যাস লিখি। কোনওটা ভাল, কোনওটা খারাপ! কিন্তু রমাপদ চৌধুরী একবার করে ব্যাট হাতে নিয়েছেন, ছয় মেরেছেন, আবার ব্যাট রেখে দিয়েছেন! প্রত্যেকটা বলে ছয় হাঁকানোর চেষ্টা করেননি! উনি আসল সত্যটা উপলব্ধি করেছিলেন-- প্রত্যেক বলে ছয় হাঁকানো যায় না! সেই বলটাতেই ব্যাট ঠেকাবো, যে বলটায় ছয় নিশ্চিত।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
রমাপদ চৌধুরী শিখিয়েছেন কখন থামতে হয় : বিনোদ ঘোষাল
Next Article
advertisement
MGNREGA: মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! কোটি কোটি কৃষক শ্রমিকদের স্বার্থে আঘাত, কেন্দ্রের নয়া ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
মনরেগাকে ধ্বংস করেছে মোদি সরকার! ‘কালো আইনের’ বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ডাক সনিয়ার
  • মনরেগা প্রকল্পের নাম বদল নিয়ে এবার মোদি সরকারের বিরুদ্ধে সরব সোনিয়া গান্ধি

  • কংগ্রেসে নেত্রীর দাবি, মনরেগা প্রকল্পকে কার্যত ধ্বংস করে দিল বিজেপি

  • প্রকল্পকে বদলের আইনকে ‘কালো আইন (ব্ল্যাক ল)’ বলে উল্লেখ্য সোনিয়ার৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement