শরিকি ঝগড়ায় মা বিভক্ত, এক গ্রামে পূজিত হন ১৯ দুর্গা

Last Updated:
#হাটসেরান্দি: এক গ্রাম। ১৯ দুর্গা। পুজো পান সকলেই। নিয়ম মেনে। ঠিক যেন মানবজমিনের গপ্পো। শরিকিয়ানার ঝগড়ায় পরিবার যত ভেঙেছে, ততই বেড়েছে দুর্গার সংখ্যা। আর আরাধনার ধুম। গ্রামে ঢুকে মনে হতেই পারে, কোন দুর্গা বাড়িতে যাওয়া উচিত আগে। কোন পুজোকে রাখবেন শেষবেলায়।
কাশে আর সবুজের আর শুভ্রর মিলনে এ এক অন্য নানুর। অশান্ত নয়,এই নানুর আপাতত অনেক স্নিগ্ধ। তার-ই এক ছোট গ্রাম হাটসেরান্দি। হাটসেরান্দিতেই মিলবে সেই ১৯ দুর্গার খোঁজ। এক গ্রাম। ১৯ দুর্গা। চললাম দূর গাঁয়ের দুগ্গাদের সন্ধানে। একসময় মণ্ডল, মজুমদার, ভট্টাচার্য, চ্যাটার্জি আর ঘোষেদের আদি বাস ছিল এই হাটসেরান্দি গ্রামে। পাঁচ পরিবারই বর্ধিষ্ণু। বড়লোক এবং সম্পদশালী। সব পরিবারই সামাজিক সম্মান বজায় রাখতে চান গ্রামে। স্মরণ নেন দুর্গার।
advertisement
বীরভূমের এই ছোট জায়গায় ইতিহাস বেশ প্রাচীন। ইতি-উতি তাকালে এখনও হাটসেরান্দি গ্রামের গা থেকে নাকে আসে বর্ধিষ্ণুতার গন্ধ। মোরাম সরে পিচের রাস্তায় আধুনিক টোটো। তাতেও টোল খায়নি এই গ্রামের বনেদিয়ানা। প্রায় আড়াইশো বছর আগে পাঁচ সমাজপতির বাড়িতে শুরু হয়েছিল পাঁচ দুর্গা পুজো। মূলত সেই পুজোর লড়াই ছিল মণ্ডল, ঘোষ আর মজুমদারদের। পিছিয়ে ছিলেন না ভট্টাচার্য, চ্যাটার্জিরাও। এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায় দেখ। বাহুবল নয়, ভক্তিবাদ নয়, পুজোর মধ্যে বার্তা ছিল সামাজিক প্রভাব বিস্তারের।
advertisement
advertisement
পূর্বপুরুষরা শুরু করেছিলেন। কিন্তু উত্তরপুরুষরা তার খেয়ালই রাখেননি। সময়ের নিয়মে মণ্ডল, মজুমদার, ভট্টাচার্য, চ্যাটার্জি আর ঘোষেদের পরিবার বেড়েছে। বেড়েছে শরিকিয়ানাও। শরিকিয়ানা বাড়লে যা হয়। পারিবারিক ঝগড়া বাড়ে। বাড়ে মনোমালিন্য। বাঁটোয়ারা সম্পদেও ঘাটতি নেই কিছু। তাই দুগ্গাও ভাগ হয়েছে। একসময় পাঁচ থেকে পুজো বেড়ে হয়েছিল ২১টি। একই দেবী। একই আরাধনা। কেউ ঘটে, কেউ পটে, কেউ বা প্রতিমায় পুজো করতেন। এখন ২১ থেকে কমে ১৯টি ৷
advertisement
জীর্ণতা বেড়েছে। কিন্তু দীনতা নেই। একসময় মূর্তির পাশাপাশি পুজো হত ঘটে এবং পটে। কিন্তু এখন সবই মূর্তি। একচালায় প্রতিমা তৈরি। ছেলে-মেয়ে বাহন বরকন্দাজরাও তৈরি। কার্তিকের মত কিছু সাজ এখনও বাকি। তাই চোখে পড়ল তাঁকে নিয়ে পটুয়ার বিশেষ সময় দেওয়ার। ঘোষ আর মণ্ডল বাড়ি থেকে মজুমদারদের বাড়ি, ভট্টাচার্য চ্যাটার্জি বাড়িতে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। কেউ এগিয়ে কেউ বা একটু পিছিয়ে। তবে সব জায়গাতেই বোধনের অপেক্ষা। কথায় বলে ভাগের মা গঙ্গা পায় না। কিন্তু ব্যতিক্রম বাংলার প্রত্যন্ত হাটসেরান্দি। এখানে ভাগ হওয়া সব দুগ্গাই জল মিষ্টি ভোগ পান। সপ্তমীর ভোরে একসঙ্গে ১৯ বাড়ির কলা বউ স্নান করেন। আর দশমীর সন্ধ্যায় একসঙ্গে হয় বিসর্জন।
advertisement
পাশাপাশি বাস। দেখাদেখি চাষ । শুরুটা করেছিলেন পূর্বপুরুষরা । ক্রমে তা চাড়িয়ে গিয়েছিল পরবর্তী প্রজন্মেও। তুচ্ছ বিষয়ের মনোমালিন্যে পাঁচ আপাতত উনিশ। বাঁটোয়ারা মনে রেখেছেন উত্তরসুরীরা। কিন্তু মালিন্য মনে রাখেননি। এখন এটাই দস্তুর। মা ভাগ হয়েছে। রয়ে গিয়েছে রেওয়াজও। তবে মানবজমিনের বাঁটোয়ারা হয়নি। আসলে বদলে গেছে গ্রামীণ সমাজ। আধুনিক হয়েছে মন। গঞ্জ বদলে গেছে এই গ্রামের সপ্তমীতে রয়ে গিয়েছে চিরাচরিত শব্দের রেশ। তারজন্যই গ্রাম বদলেছে। কিন্তু বদলাননি হারসেরান্দির দূর গাঁয়ের দুগ্গা।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/ফিচার/
শরিকি ঝগড়ায় মা বিভক্ত, এক গ্রামে পূজিত হন ১৯ দুর্গা
Next Article
advertisement
Australia Woman Cricketer Molestation: বিশ্বকাপ খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি, ইনদৌরের রাস্তায় কী ঘটল? ধৃত অভিযুক্ত
বিশ্বকাপ খেলতে আসা অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি, ইনদৌরের রাস্তায় কী ঘটল?
  • অস্ট্রেলিয়ার মহিলা ক্রিকেটারের শ্লীলতাহানি৷

  • ইনদৌরের রাস্তায় আক্রান্ত দুই মহিলা ক্রিকেটার৷

  • অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ৷

VIEW MORE
advertisement
advertisement