Loan Apps: অনলাইন অ্য়াপ-এ ইনস্ট্যান্ট লোন নেওয়ার কথা ভাবছেন? আগে জেনে নিন এই ব্যাপারগুলো

Last Updated:

বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন, পুরো প্রক্রিয়াটিতে রয়েছে বিদেশিদের হাত। তারাই বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলছে।

#কলকাতা: করোনা পরিস্থিতি শুরু হওয়ার পর একাধিক সমস্য়ার সম্মুখীন হয়েছে সাধারণ মানুষ। মানসিক ভাবে যেমন একাধিক সমস্য়া তৈরি হচ্ছে, তেমনই অর্থনৈতিক ভাবেও প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। আর এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে বাজারে রয়েছে একাধিক অ্যাপ। মূলত সেই অ্য়াপগুলি টাকা ধার দিয়ে থাকে। মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্য়ে টাকা চলে আসছে অ্য়াকাউন্টে। ক্ষণিকের জন্য় সুরাহা পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু তার পর? তার পরেই আসল সমস্যা তৈরি হয়। শুরু হয় জালিয়াতদের কারবার। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে অনেকেই এই লোন এবং জালিয়াতদের খপ্পরে পড়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য় হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞদের অনেকেই মনে করেন পুরো প্রক্রিয়াটিতে রয়েছে বিদেশিদের হাত। তারাই বিভিন্নভাবে সাধারণ মানুষকে ফাঁদে ফেলছে।
স্মার্টফোনের রমরমা থাকলেও ২০২০ সালের আগে এই ধরনের অ্যাপের ব্যবহার খুব একটা দেখা যায়নি। পুরো বিষয়টি মূলত শুরু হয় ২০২০ সালে করোনা পরিস্থিতির পর। করোনায় প্রচুর মানুষ চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন। অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হন তাঁরা। আর সেই সময়ই এই ধরনের বিভিন্ন অ্যাপ বাজারে আসে। টাকা ধার দেওয়ার নাম করে জালিয়াতি শুরু করে। যার ফাঁদে পড়েন দেশের প্রচুর সাধারণ মানুষ।
advertisement
বিশেষজ্ঞদের একাংশের মত- ২০২০ সালে চিনের তৈরি একাধিক এই ধরনের অ্যাপ ভারতের বাজারে আসে। যাঁদের মূলত তৎক্ষণাৎ টাকার প্রয়োজন হয় তাঁদের মুহূর্তের মধ্য়ে টাকা দিয়ে দেয় ওই অ্য়াপগুলি। কিন্ত এই অ্য়াপগুলির ক্ষেত্রে কোনও রেগুলেটরি বোর্ড ছিল না। যদিও পরবর্তী সময়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এই ধরনের ডিজিটাট্যাল লোনের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি নতুন রুল বা নির্দেশিকা দিয়েছে।
advertisement
একটি সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এই ধরনের প্রায় ৪০০টি অ্যাপকে প্লে স্টোর (Play Store) থেকে সম্পূর্ণ রূপে ডিলিট করে দিয়েছে Google। ওই অ্যাপগুলির মধ্যে ছিল মানি লোন (Money Loan), লোন পয়সা (Loan Paisa), লোন উধার (Loan udhar), গো ক্যাশ (Go Cash), মানি ইন নিড (Money in need) ইত্যাদি।
advertisement
কী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় ঋণ গ্রাহক দের?
সাধারণ ব্যাঙ্কের মতো ওই অ্যাপগুলি থেকেও ঋণ দেওয়া হয কিন্তু পার্থক্য বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে। প্রথমত, ব্যাঙ্কের মতো অ্য়াপগুলি থেকে ঋণ নিলে কোনও ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশন হয় না। দ্বিতীয়ত, অ্য়াপগুলিতে মূহূর্তের মধ্য়ে টাকা পাওয়া সম্ভব। আর সেই কারণে এই ধরনের অ্য়াপগুলি থেকে ঋণ নেওয়ার প্রবণতা বেশি। কিন্তু সঠিক সময়ে টাকা ফেরত না দিতে পারলেই সমস্যার সূত্রপাত। শুরু হয় মানসিক অত্যাচার। যা কিছু সময় চূড়ান্ত স্তরে শুরু হয়। দ্বিতীয়ত ঋণ গ্রাহকদের চড়া হারে সুদ দিতে হয়। কিছু সময় সুদের পরিমাণ ৬০ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ হয়ে যায়। ফলে ঋণ পরিশোধ করতে বেশ সমস্যায় পড়েন গ্রাহকরা।
advertisement
এই ধরনের অ্যাপগুলি ডাউনলোড করার পরেই ফোনের যাবতীয় অ্যাকসেস নিয়ে নেয়। অর্থাৎ স্টোরেজ, কনট্যাক্টস, ক্যামেরা, মাইক্রোফোন ইত্যাদি। যখনই কোনও ঋণগ্রাহক টাকা শোধ করতে পারে না তখনই এই ধরনের তথ্য়গুলি নিয়ে জালিয়াতরা কুকর্ম শুরু করে।
কীভাবে জালিয়াতরা ব্যক্তিগত তথ্য় নিয়ে কুকর্ম করে?
প্রথমেই জানা দরকার কোথা থেকে টাকা পায় অ্যাপ সংস্থাগুলি। অ্যাপ সংস্থাগুলি মূলত দুই ভাবে টাকা পায়। প্রথমত এমন কোনও ইনভেস্টার থাকে যাঁর প্রচুর টাক। আর দ্বিতীয়ত, কোনও বিদেশি বিনিয়োগ থেকে। ধার নেওয়া টাকা মূলত ৭ দিন থেকে ১৫ দিনের মধ্য়ে ফেরত দিতে হয়। এবং ৩ হাজার টাকা থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত ধার পাওয়া যায় অ্যাপগুলির মাধ্যমে। সাধারণ ব্যাঙ্কগুলির মতো কোনও ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয় না। তবে সাধারণ ব্যাঙ্কগুলির ক্ষেত্রে ৭ থেকে ১২ শতাংশ হারে সুদ দিতে হয়, সেখানে এই অ্যাপগুলির ক্ষেত্রে সুদের হার অত্য়ন্ত বেশি। এবং সেই হারে ধারের টাকা মেটাতে না পরলে শুরু অত্যাচার। প্রথমে ঋণগ্রহীতাকে ফোন করে তারা। তার পর ফোন করা শুরু হয় ঋণগ্রহীতার আত্মীয়দের। যেহেতু সব ফোনের অধিকাংশ অ্যাকসেস থাকে অ্যাপ সংস্থার হাতে, তাই তারা সেখান থেকে বন্ধু ও আত্মীয়দের ফোন নম্বর সংগ্রহ করে এবং ফোন করে। এমনকী কিছু ক্ষেত্রে টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য গুন্ডা লাগানোর হুমকি দেয় তারা।
advertisement
এই ধরনের অ্যাপ থেকে ঋণ নিয়ে তেলঙ্গানায় বেশ কয়েকজন আত্মহত্যা করেছেন। সেই ঘটনার তদন্তে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের জেরা করে জানা যায়, ভিন দেশের অনেকেই এই জালিয়াতের সঙ্গে যুক্ত। এমন ৬০টি অ্যাপের সন্ধান পাওয়া গেছে, যেগুলির মধ্যে ২৮টি অ্যাপ অপারেট বা পরিচালনা করা হচ্ছিল কর্নাটক থেকে।
কারা বেশি বিপদের মধ্যে রয়েছেন?
advertisement
এই ধরনের বিপদের মধ্য়ে সব থেকে বেশি রয়েছেন যাঁরা অ্য়ান্ড্রয়েড ব্যবহার করেন এবং যাঁদের বয়স ২১ বছর থেকে ৪০ বছরের মধ্যে তাঁদের বেশি করে টার্গেট করে জালিয়াতরা। এই ধরনের একটি অ্য়াপের নাম মো-নিড (MoNeed)। এই অ্যাপটি চিন থেকে পরিচালিত হত। এদেশের প্রায় ৩৫০ মিলিয়ন নাগরিকের তথ্য় চুরি করে ডার্ক ওয়েবে বিক্রি করে দেয় তারা।
ওই অ্য়াপটি ইউজারদের কাছ থেকে বিশেষ কয়েক ধরনের অ্যাকসেস নিত। যেমন WiFi-অন অফ করার পার্মিশন, ফোনের স্টেটাস দেখার পার্মিশন সহ একাধিক অ্যাকসেস নিত অ্য়াপটি।
কিন্তু এত কিছুর মাধ্যমে কী ভাবে নিজে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব?
এত কিছুর পরেও অনলাইনে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব। এমন কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলি সঠিকভাবে ঋণ দেয় এবং ব্যবহারকারীর তথ্য় নিয়ে কোনও জালিয়াত করে না। কিন্তু কী ভাবে অনলাইনে ঋণ নেওয়ার সময় সুরক্ষিত থাকা সম্ভব?
প্রথমত, প্রথমেই দেখতে হবে RBI স্বীকৃত সংস্থা কি না। যদি সংশ্লিষ্ট অ্য়াপের সঙ্গে কোনও ব্যাঙ্কের কোনও যোগ না থাকে এবং যদি NBFC লাইসেন্স না থাকে তাহলে বুঝে নিতে হবে ওই অ্য়াপটি ফেক হওয়ার সম্ভাবনা।
দ্বিতীয়ত, যদি কোনও অ্য়াপ মুহূর্তের মধ্যে লোন দেয় তাহলে বুঝতে হবে ওই অ্যাপটি ফেক। অথবা টাকা পরিশোধের সময় চড়া হারে সুদ দিতে হবে।
তৃতীয়ত, যদি কোনও অ্য়াপ কোনও ব্যবহারকারীর আয়ের উৎস না জেনেই ঋণ প্রদান করে তাহলে সেই অ্য়াপ ফেক হওয়ার সম্ভবনা বেশি।
চতুর্থত, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওয়েবসাইটে রয়েছে কোন কোন ব্যাঙ্ক ঋণ প্রদান করতে পারবে। সেক্ষেত্রে ওই তালিকা দেখেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন ঋণগ্রহীতা।
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Loan Apps: অনলাইন অ্য়াপ-এ ইনস্ট্যান্ট লোন নেওয়ার কথা ভাবছেন? আগে জেনে নিন এই ব্যাপারগুলো
Next Article
advertisement
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
VIEW MORE
advertisement
advertisement