করোনার বিরুদ্ধে লড়তে ভ্যাকসিন (Coronavirus Vaccine) নিচ্ছেন অনেকে৷ দ্বিতীয় ডোজও হয়েছে গিয়েছে বহু মানুষের৷ বিশেষ করে যারা ষাটোর্দ্ধ, তাদের টিকাকরণ সম্পন্ন হয়েছে অনেকটা আগেই৷ ধীরেধীরে তাদের শরীরে করোনা প্রতিরোধ ক্ষমতা কি কমছে? করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের (COVID19 Third Wave) আশঙ্কা রয়েছে৷ টিকা নেওয়ার পরও কি পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়া যাচ্ছে? করোনা মোকাবিলায় কি যথেষ্ট ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে শরীরে (Immunity against Corona)? এসব প্রশ্নের মধ্যেই গুরুত্ব পাচ্ছে বুস্টার ডোজের (Booster Dose of Coronavirus) বিষয়টা৷ যা খানিকটা তৃতীয় ডোজও বলা যেতে পারে৷ এই পথেই কী হাঁটবে হবে আগামী দিনে? বিদেশে অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে বুস্টার ডোজ৷ এর প্রয়োজনীয়তা কতটা? জানাচ্ছেন ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল স্পেশ্যালিস্ট ডাঃ শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক( Dr. Subhrojyoti Bhowmick)...
১) প্রশ্ন- Coronavirus বুস্টার ডোজের (Booster Dose) প্রয়োজনীয়তা কতটা?
উত্তর- দেশে এখনই বুস্টার ডোজের (COVID19 Booster Shot, India) প্রয়োজন নেই৷ কারণ ভারতে এখনও দুটি করে করোনা ভ্যাকসিনের ডোজ পেয়েছেন মাত্র ২০ শতাংশ মানুষ৷ তাই প্রথম লক্ষ্য হল দু’টো করে ডোজ দেওয়া৷ যখন দেশের অন্তত ৪০-৪৫ শতাংশ মানুষ দুটি করে টিকা (Coronavirus Vaccination, India) পেয়ে যাবেন, তখন বুস্টার ডোজের ভাবনা চিন্তা শুরু করা যেতে পারে৷
২) প্রশ্ন- ডবল ডোজ ভ্যাকসিনের (COVID19 Vaccination) পরও কি এটা নেওয়া যেতে পারে?
উত্তর- বিশ্বের অনেক জায়গায় শুরু হয়েছে বুস্টার ডোজ, দু’টি করে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর৷ এক একটি দেশের এক একরকম নীতি রয়েছে৷ ইজরায়েলে যেমন ৬৫ বছরের উপরে যাদের কোমর্বিডিটি (Comorbidity) রয়েছে, তাদের বুস্টার ডোজ দেওয়া হচ্ছে৷ লন্ডনে স্বাস্থ্যকর্মীদের দেওয়া হচ্ছে বুস্টার, কারণ তাঁরা বেশি মাত্রায় ঝুঁকির মুখোমুখি হচ্ছেন প্রতিদিন ৷ আবার আমেরিকায় ৬৫ বছরের উপর যাদের কমির্বিডিটি, অর্থাৎ যাদের হাইরিস্ক, তারাই পাচ্ছেন বুস্টার ডোজ৷
৩) প্রশ্ন- বিদেশের অনেক জায়গায় শুরু হয়ে গিয়েছে এই বুস্টার ডোজ, দেশে এখনও যদিও সেটা দেখা যাচ্ছে না৷ প্রথম টিকাকরণের কতদিনের মাথায় নিতে হবে বুস্টার?
উত্তর- বিদেশে শুরু হয়েছে ঠিকই, তবে দুটি করোনাভ্যাসিনের ডোজ (Coronavirus Double Vaccine) দেওয়া থাকলে করোনার বাড়বাড়ন্ত অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব৷ অর্থাৎ আইসিইউ(ICU) বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন কম পড়ে৷ সেক্ষেত্রে যদি বুস্টার ডোজ শুরুও হয়, তাহলে সেটা হবে তাদের জন্যই, যাদের ঝুঁকি বেশি (Risk)৷
গবেষণায় (COVID19 Research) দেখা দিয়েছে ৬-৮ মাস পর্যন্ত শরীরে থাকছে অ্যান্টিবডি (Antibody)৷ তাহলে তার পর বুস্টার শুরু করা যেতে পারে৷ আমেরিকায় যদিও ৫ মাসের মধ্যে করোনার বুস্টার চালু হয়েছে৷ এদেশেও কোভ্যাক্সিনের বুস্টার (Covaxin booster) ডোজ নিয়ে গবেষণা চলছে৷ এই গবেষণার ফল প্রকাশিত হলে জানা যাবে কবে বুস্টার ডোজ নেওয়া যেতে পারে এদেশে৷ আমার ধারনা, পূর্ণাঙ্গ টিকাকরণের ৬-৮ মাস পর চালু করা যেতে পারে করোনার বুস্টার৷
৪) প্রশ্ন- বিষয়টা কি খানিকটা অন্য টিকাকরণ প্রক্রিয়ার মতো হতে চলেছে? বছর বা ৬ মাসে একবার করে?
উত্তর- একদম৷ ইনফ্লুয়েঞ্জা বুস্টার (Influenza Booster) প্রতিবছর দিতে হয়৷ করোনাও একই প্রজাতির রোগ৷ বারবার চরিত্র বদল করছে৷ আমার ধারণা, বুস্টার শুরু করলে প্রতি বছর একটা করে নিতে হবে৷
৫) প্রশ্ন- এক্ষেত্রে কি অন্য কোনও নিয়ম থাকবে?
উত্তর- নিয়ম অন্য হওয়ার কোনও কারণ নেই৷ একটা নির্ধারিত সময় নিতে হবে এই বুস্টার৷ বছরের একটি সময় ঠিক করতে হবে৷ হয়ত শীতের আগে করতে হবে৷
৬) প্রশ্ন- শরীরে করোনার অ্যান্টিবডি রয়েছে কিনা, সেটা পরীক্ষা করে কি বুস্টার ডোজ নিতে হবে?
উত্তর- শরীরের অ্যান্টিবডি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও, রোগের সঙ্গে লড়াইয়ে সেটাই একমাত্র মাপকাঠি হয় না৷ কারণ মেমারি সেল (Memory Cell) বলে এক ধরনের সেল থাকে আমাদের শরীরে তৈরি হয় যা জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে৷ কোনও রোগের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন দেওয়া হলে, মেমারি সেল সেটা মনে রাখে৷ আবার যদি একই রোগ শরীরে আক্রমণ করে, তাহলে প্রতিরোধ করার কোষগুলো ফের তৈরি করে দেয় এই মেমরি সেল৷ ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবডি মেপে বা দেখে নিয়ে বুস্টার দেওয়া হয় না৷ এটা সময়ের উপর নির্ভর করে, শরীরের অ্যান্টিবডির উপর নয়৷ করোনাভাইরাসের ক্ষেত্রেও সেটা একই পদ্ধতি হওয়া উচিৎ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।