EXPLAINED: অপ্রচলিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রিলায়েন্স, ভবিষ্যতে পথ দেখাবে HJT প্রযুক্তিই

Last Updated:

REC Solar Holdings AS-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, গোটা বিশ্বে সৌর শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে রিল্যায়েন্সের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। আর রিল্যায়েন্স মূলত HJT সেল প্রযুক্তির মাধ্যমে সৌর শক্তির সেল তৈরি করবে। (Reliance Industries Limited)

অপ্রচলিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রিলায়েন্স, ভবিষ্যতে পথ দেখাবে HJT প্রযুক্তিই
অপ্রচলিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রিলায়েন্স, ভবিষ্যতে পথ দেখাবে HJT প্রযুক্তিই
#নয়াদিল্লি: রিলায়েন্সের মুকুটে আরও একটি পালক যোগ হল। নরওয়ের একটি সোলার প্যানেল সংস্থাকে কিনে নিল রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড (Reliance Industries Limited)। ৭৭.১ কোটি মার্কিন ডলারে ওই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। যে সংস্থাটিকে তারা অধিগ্রহণ করেছে, তা হল REC Solar Holdings AS। রিলায়েন্সের তরফে জানানো হয়েছে যে, এই অধিগ্রহণের ফলে অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার আরও বাড়বে। রিলায়েন্স যে সংস্থাটিকে অধিগ্রহণ করেছে, সেই সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, গোটা বিশ্বে সৌর শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি করতে রিলায়েন্সের যে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটা পূরণ করার চেষ্টা করবে রিলায়েন্স। রিলায়েন্স মূলত সৌর শক্তির সেল তৈরি করবে। HJT সেল প্রযুক্তির মাধ্যমে পুরো কাজটি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে আরও জানানো হয়েছে যে, এই প্রযুক্তির ব্যবহারই আগামী দিনে বাড়বে। জেনে নিন, কী রয়েছে এই প্রযুক্তির মধ্যে?
HJT প্রযুক্তি কী?
HJT প্রযুক্তির পুরো কথা হল, হেটেরো জংশন টেকনোলজি ( heterojunction technology)। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে সোলার সেল তৈরি করা হয়। ১৯৮০ সালে সর্বপ্রথম জাপানের সংস্থা সানিয়ো (Sanyo) এই প্রযুক্তি বাজারে নিয়ে আসে। এর পর ২০১০ সালে এই সংস্থাটিকে অধিগ্রহণ করে প্যানাসোনিক (Panasonic)।
advertisement
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, PERC সোলার সেল তৈরি করতে HJT প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রযুক্তিতে সোলার সেল তৈরি করা ছাড়াও REC অন্য ক্ষেত্রেও যথেষ্ট অবদান রেখেছে। তাঁদের বক্তব্য, HJT প্রযুক্তিতে সোলার সেল তৈরি করলে তাতে সেল প্রসেসিং স্টেপ অনেক কম থাকে। এবং সেল প্রসেসিং টেম্পারেচার অনেক কম প্রয়োজন হয়।
advertisement
অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের তরফে জানানো হয়েছে, REC এমন একটি সংস্থা, যারা সর্বপ্রথম PERC (Passivated Emitter and Rear Cell) প্রযুক্তি বাজারে নিয়ে এসেছে। তার পর বিভিন্ন সংস্থা ওই প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করে। এর পর প্রযুক্তিগত দিকে নিজেদের আরও এক ধাপ বাড়িয়ে নিয়েছে REC। তারা এখন HJT প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু করেছে। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মত, বর্তমানে খুব সহজে সোলার সেল তৈরিতে PERC প্রযুক্তি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
advertisement
HJT প্রযুক্তি কী ভাবে কাজ করে?
খুব সহজে বোঝাতে গেলে বলা যেতে পারে, দু’টি আলাদা প্রযুক্তিকে একটি সেলের মধ্যে ধরে রাখার কাজটি করে HJT প্রযুক্তি। এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাঁদের কথায়, একটি ক্রিস্টালিন সিলিকন সেল দু’টি সিলিকনের সরু ফিল্মের মধ্যে রাখা থাকে। এই প্রযুক্তিতে সুবিধা হল এটাই যে, অন্য প্রযুক্তিতে যে পরিমাণ শক্তি তৈরি হয়, এ ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি মাত্রায় শক্তি পাওয়া যায়।
advertisement
REC-এর তরফে জানানো হয়েছে যে, HJT-ই হল আগামী দিনের সোলার শক্তি উৎপাদনের অন্যতম প্রযুক্তি। তারা একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে, “সোলার PV ( photovoltaic cell) সেলের ভবিষ্যৎ হল, HJT প্রযুক্তি। যদিও এটা বর্তমানে মডিউল লেভেল ইনোভেশন (module-level innovation) পর্যায়ে রয়েছে। মোট দুটি প্রযুক্তির মিশ্রণ ঘটানো হয়েছে এই প্রযুক্তিতে। এ ক্ষেত্রে সরু ফিল্ম ( thin films) এবং এন-টাইপ মোনো (N-type mono)-এর মধ্যে একটি মিশ্রণ করার চেষ্টা করা হয়েছে। সোলার PV সেল এক ধরনের সরু PV উপাদান দিয়ে তৈরি করা হয়। যা সূর্যরশ্মিকে শোষণ করে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে বেশ কিছু সমস্যাও থাকে। ওই প্রযুক্তির মাধ্যমে সূর্যরশ্মির পুরো অংশ শোষণ করতে পারে না। সে ক্ষেত্রে সূর্যরশ্মির অনেকটা অংশ প্রতিফলিত হয়ে বেরিয়ে যায়।
advertisement
কিন্তু HJT প্রযুক্তিতে মাঝের স্তরে N-টাইপ মনোসিলিকন থাকে। ওই স্তরটি সম্পূর্ণ সূর্যরশ্মির পুরোটা শোষণ করে নেয় এবং শোষণ করা সূর্যরশ্মি বিদ্যুতে পরিণত করে। সূর্যরশ্মিকে বিদ্যুতে পরিণত করার ক্ষেত্রে এই ভাবেই কাজ করে HJT প্রযুক্তি। যা অন্য প্রযুক্তি থেকে অনেকটা এগিয়ে থাকে। সূর্যরশ্মিকে বিদ্যুতে পরিবর্তনের ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তার থেকে HJT প্রযুক্তি অনেক বেশি কার্যকরী।”
advertisement
কোনও একটি সোলার প্যানেলে কতটা পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে, তার উপর নির্ভর করে সেই সোলার প্যানেলের কার্যক্ষমতা। সোলার প্যানেলে যত বেশি ক্ষমতা থাকবে, তত বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে। এমনকী যে প্রযুক্তি যত বেশি উন্নত, সেই প্রযুক্তি তত কম সূর্য রশ্মি থেকে তুলনামূলক ভাবে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারবে।
advertisement
রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ক্লিন এনার্জি প্ল্যান কী ?
অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে একাধিক উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষ। চলতি বছরের শুরুর দিকে গুজরাতের জামনগরে রিলায়েন্সের জেনারেল মিটিং হয়। ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রিলায়েন্সের প্রধান মুকেশ আম্বানি। ওই বৈঠকে তিনি জানিয়েছিলেন, “অপ্রচলিত শক্তির ব্যবহার বাড়াতে আগামী ৩ বছরের মধ্যে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে রিল্যায়েন্স গোষ্ঠী।
এর পাশাপাশি জামনগরে একাধিক কারখানা তৈরির কথা ঘোষণা করে রিলায়েন্স কর্তৃপক্ষ। জামনগর এলাকায় অপ্রচলিত শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি তৈরির বিভিন্ন কারখানা করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও অপ্রচলিত শক্তির জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাটারি তৈরির কারখানা তৈরি করার কথাও জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে সেখানে গ্রিন হাইড্রোজেন এবং ফুয়েল সেল কারখানাও তৈরি করা হবে।
REC অধিগ্রহণ প্রসঙ্গে রিলায়েন্স চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি বলেন, “REC অধিগ্রহণ করার ফলে সংস্থার যে লক্ষ্য, সেই দিকে আরও এক ধাপ এগোনো সম্ভব হয়েছে। ২০৩০ সালের শেষে রিলায়েন্সের তরফে ১০০ গিগা ওয়াটের ক্লিন এবং গ্রিন এনার্জি তৈরি করা হবে বলেও জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এই দশকের শেষে ভারত ৪৫০ গিগা ওয়াট অপ্রচলিত শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, ভারত যে ৪৫০ গিগা ওয়াটের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে, তাতে একটি নির্দিষ্ট সংস্থা হিসেবে সব থেকে বড় ভূমিকায় থাকবে রিল্যায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড।”
তিনি আরও বলেন, “REC-কে অধিগ্রহণ করতে পেরে আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। কারণ এর ফলে সূর্যদেবের যে ক্ষমতা রয়েছে, তা আমরা ধরে রাখতে পারব। গোটা ভারতবর্ষ তাঁর আশীর্বাদ পাবে। আমি মনে করি, আমরা যদি নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছতে পারি, তা হলে আমাদের দেশ গোটা বিশ্বের মধ্যে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবেএবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করবে।”
শুধু এখানেই থেমে থাকতে চায় না রিলায়েন্স গোষ্ঠী। তাদের তরফে জানানো হয়েছে, সাপুরজি পালনজি গোষ্ঠীর থেকেও ৪০ শতাংশ শেয়ার কিনতে ইচ্ছুক তারা।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
EXPLAINED: অপ্রচলিত শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে রিলায়েন্স, ভবিষ্যতে পথ দেখাবে HJT প্রযুক্তিই
Next Article
advertisement
Purba Bardhaman News: 'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যের পর তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
'ছায়াশত্রু' কারা? বিতর্কিত মন্তব্যে তৃণমূলে ঝড়, ব্যাখ্যা দিলেন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ
  • এবার 'ছায়া' শত্রুর নাম সামনে আনলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার তৃণমূলে কংগ্রেসের  সভাপতি  রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। বর্ধমানে দলের বিজয়া সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন, 'এখন লড়াই বাম আমলের থেকেও কঠিন। এখন ছায়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে।'

VIEW MORE
advertisement
advertisement