Explained: RBI-র তৈরি ডিজিটাল মুদ্রা কতটা গুরুত্বপূর্ণ এবং কেন এটা Bitcoin-র মতো তৈরি করা হবে না?
- Published by:Debalina Datta
Last Updated:
ক্রিপ্টোকারেন্সি গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় হলেও কোনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মধ্যে পড়ে না। CBDC কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ছাতার তলায় তৈরি করা হচ্ছ?
#নয়াদিল্লি: চলতি বছরের ডিসেম্বরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (Reserve Bank of India) ভারতের তৈরি ডিজিটাল কারেন্সির (Digital currency) আত্মপ্রকাশ করতে পারে। ব্যক্তিগত সম্পত্তি তৈরির ক্ষেত্রে এই কারেন্সি একটা বড় মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে ভবিষ্যতের জন্য। তবে এটি ক্রিপ্টোকারেন্সির (Cryptocurrency) মতো নয় বলেই জানা গিয়েছে। সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক ডিজিটাল কারেন্সি (Central bank digital currencies) বা সিবিডিসিএস (CBDCs) নাম রাখা হয়েছে এই মুদ্রার।
ডিজিটাল কারেন্সি কি?
ডিজিটাল কারেন্সি হল এমন অকটি অর্থ যা মূল মুদ্রার ডিজিটাল আকার। ব্যবহারকারীর কাছে একটি মোবাইল অ্যাপ ও অনলাইন ওয়ালেট থাকলেই এই মুদ্রা লেনদেন করা যাবে। নগদ ১০০ টাকা ও ডিজিটাল ১০০ টাকার মধ্যে কোনও পার্থক্য থাকছে না। দুটির মানই সমান থাকছে। শুধু একটি নগদ ও একটি ডিজিটাল। এই মুদ্রার সাহায্যে টাকার লেনদেন আরও সহজ পদ্ধতিতে কারা যাবে বলেই মনে করছেন বিষেশজ্ঞরা।
advertisement
আরবিআই ডেপুটি গভর্নর (RBI Deputy Governor) টি রবি শঙ্কর (T Rabi Sankar) জুলাই মাসে বলেছিলেন, CBDC হল নগদ টাকার একটি ডিজিটাল আকার, যা দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক দ্বারা জারি করা আইনি টেন্ডার। এটি নগদ মুদ্রার মতই বিনিময় যোগ্য মুদ্রা। CBDC-র বার্তি সুবিধা হল, আগের থেকে ভালো কার্যকারিতা ও স্থিতিশীলতা থাকছে। এর পাশাপাশি নির্বিঘ্নে লেনদেন ও আরও ভালো নজরদারি রাখা সম্ভব হবে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক কর্তৃক জারি করা কাগজের টাকার মত না হলেও কাজ এবং মানের ক্ষেত্রে একই হবে।
advertisement
advertisement
CBDC কী বিটকয়েন মতই ক্রিপ্টোকারেন্সি?
ক্রিপ্টোকারেন্সি গোটা বিশ্বে জনপ্রিয় হলেও কোনও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার মধ্যে পড়ে না। CBDC ডিজিটাল মুদ্রার মধ্যে প্রথম, যা কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ছাতার তলায় তৈরি করা হচ্ছে। ফলে এটি বিটকয়েনের মতো নয় বলেই জানা গিয়েছে।
প্রথমত, ক্রিপ্টোকারেন্সিগুলির নগদ মুদ্রার সঙ্গে মিল নেই, এগুলি ব্যক্তিগতভাবে তৈরি করা সম্পদ। তবে বর্তমানে এগুলিকে নানা ধরণের ব্যবসায় লেনদেন করা হচ্ছে। গোটা বিশ্বে একটি মাত্র দেশে এই মুদ্রার মান্যতা দেওয়া হয়েছে। অন্য সব দেশে এই মুদ্রার কোনও দাম নেই। এমনকী কোনও প্রশাসনের মান্যতাও পায়নি এই মুদ্রা। কিছু বেনামি থার্ড-পার্টি কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এটির লেনদেন চলছে।
advertisement
দ্বিতীয়ত, ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্লকচেইনের (Blockchain) মাধ্যমে কাজ করে, অর্থাৎ লেনদেনের রেকর্ড এটিতে রাখা হয়। শক্তিশালী কম্পিউটারগুলি এটি পর্যবেক্ষণ করে, একে বলা হয় ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিং (Cryto Mining)। ক্রিপ্টোতে যখন কোনও লেনদেন হয় তখন এর তথ্য ব্লকচেইনে রেকর্ড করা হয়। RBI-এর CBDC ফিয়াট মুদ্রার মতোই হবে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যে কোনও ব্লকচেইন টেকনোলজি থাকবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।
advertisement
CBDC কী ভাবে কাজ করবে?
এইচএসবিসির (HSBC) গ্লোবাল ইকোনমিস্ট (Global Economist) জেমস পোমেরয় (James Pomeroy) বলেছেন, “CBDC বিশ্বব্যাপী ব্যাঙ্কিং পরিষেবাকে নতুন দিশা দেখাতে পারে। এই লেনদেনে বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্যতা হ্রাস করার ক্ষমতাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে”।
করোনা অতিমারীর সময় বেশিরভাগ মানুষ ডিজিটাল পেমেন্টের দিকেই ঝুঁকেছেন। লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে গ্রাহকরা বেশিরভাগ কেনাকাটার জন্য অনলাইন বিকল্পকেই বেছে নিয়েছে। এমন সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের ছত্রছায়ায় ডিজিটাল মুদ্রা নিয়ে আসা হলে সময়পোযুক্ত সিদ্ধান্ত হবে বলেই অনেকে মনে করছেন।
advertisement
CBDC-র সাহায্যে আর্থিক পরিষেবায় বড় ক্ষেত্র খুলতে পারে। প্রত্যন্ত অঞ্চল যেখানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই বা ভবিষ্যতে কোনও ব্যাঙ্ক তৈরি করা হবে কিনা তার কোনও ঠিক ঠিকানা নেই তেমন এলাকার মানুষও CBDC লেনদেনের সুবিধা ভোগ করতে পারবে। টাকার লেনদেন অনেক বেশি সহজ হয়ে যাবে। বিশেষ করে যাঁরা দেশের বাইরে থেকে পরিবারকে টাকা পাঠাচ্ছে তাঁদের জন্য যুগান্তকারী পরিষেবা হয়ে উঠতে পারে। কারণ বর্তমানে টাকা পাঠাতে গেলে বার্তি চার্জ লাগে, CBDC পরিষেবায় তা সঞ্চয় করা যাবে।
advertisement
CBDC পেমেন্ট কী ভাবে হবে?
কোনও মধ্যস্থতাকারী ছাড়া পেমেন্ট করা যাবে। CBDC জন্য একটি ডিজিটাল ওয়ালেটের প্রয়োজন হবে। যেখানে নগদ টাকার পরিবর্তে, ব্যাঙ্কের তরফে টাকার ডিজিটাল সংস্করণ জারি করা হবে। যা নগদ টাকার সমান মানের হবে। এরপর সেই ডিজিটাল ওয়ালেটের সাহায্যে সংশ্লিষ্ঠ কাউকে পেমেন্ট করা যাবে। এর ফলে নগদ টাকার মুদ্রণ, সঞ্চয় এবং ব্যাঙ্কে পাঠানোর খরচও কমে যাবে।
কোনো দেশ কি ডিজিটাল কারেন্সি চালু করেছে?
এখনও পর্যন্ত পাঁচটি দেশ CBDC চালু হয়েছে বাহামিয়ান স্যান্ড ডলারের মাধ্যমে। যা এখনও পর্যন্ত সবথেকে বেশি উপলব্ধ। অন্যদিকে সুইডেন (Sweden) এবং দক্ষিণ কোরিয়ার (South Korea) সহ ১৪টি দেশে CBDC পাইলটস (pilots) শুরু করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ (US Federal Reserve) , ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক (European Central Bank) , ব্যাঙ্ক অফ জাপান (Bank of Japan) এবং ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের (Bank of England ) মত চারটি বৃহত্তম কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক CBDC নিয়ে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা অনেকটাই পিছিয়ে রয়েছে। অন্যদিকে চিন CBDC-র কাজ অনেকটা এগিয়ে ফেলেছে।
Location :
First Published :
August 30, 2021 7:23 PM IST