Explained || War In Ukraine: রাশিয়ার 'মোস্ট ফেভারড নেশন' মর্যাদা প্রত্যাহার আমেরিকার, কী প্রভাব পড়বে?
- Published by:Rukmini Mazumder
Last Updated:
মোস্ট ফেভারড নেশনের মর্যাদা প্রত্যাহার রাশিয়ান অর্থনীতিতে (Russian Economy) অবিলম্বে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে না।
#নয়াদিল্লি: ইউক্রেনে (Ukraine) সামরিক অভিযানের পাল্টা হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (USA) রাশিয়ার উপর নানা আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। রাশিয়াকে (Russia) অর্থনৈতিক ভাবে আরও চাপে রাখতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe Biden) শুক্রবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য প্রধান মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে রাশিয়ার 'মোস্ট ফেভারড নেশন' (Most Favored Nation) মর্যাদা প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। এখন কিউবা ও উত্তর কোরিয়ার পর এই তালিকাতে যুক্ত হল রাশিয়া। মার্কিন প্রশাসন রাশিয়ান সামুদ্রিক খাবার (Russian Seafood), অ্যালকোহল (Alcohal) এবং হিরে (Diamond) আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়াও ব্যয়বহুল ঘড়ি, গাড়ি, পোশাক এবং অন্যান্য বিলাসবহুল পণ্য রাশিয়ায় রফতানি নিষিদ্ধ করছে ওয়াশিংটন।
মোস্ট ফেভারড নেশনের মর্যাদা প্রত্যাহার রাশিয়ান অর্থনীতিতে (Russian Economy) অবিলম্বে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে না। কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্রদের দ্বারা চাপানো অন্যান্য নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য হল প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের (Vladimir Putin) উপর চাপ আরও তীব্র করা এবং রাশিয়ান বাহিনীকে ইউক্রেন থেকে প্রত্যাহার করতে বাধ্য করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র কানাডাই (Canada) ছিল প্রথম দেশ যারা রাশিয়ার জন্য 'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাস প্রত্যাহার করে।
advertisement
advertisement
'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাস কী?
'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাসের পিছনের ধারণাটি হল একটি দেশের সমস্ত ব্যবসায়িক অংশীদারদের ট্যারিফ এবং অন্যান্য শর্তে বাণিজ্যের জন্য সমান চোখে দেখা। উদাহরণস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করা চামড়ার গ্লাভসের উপর ১৩ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। 'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাসের অর্থ হল ফ্রান্স, চিন, ব্রাজিল এবং রাশিয়া থেকে আমদানি করা গ্লাভসের উপরে একই হারে কর দিতে হবে। 'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাস বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি বেসলাইন, এটি নিশ্চিত করে যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (World Trade Organization) মধ্যে থাকা দেশগুলির সঙ্গে একই রকম আচরণ করা হয়। যদিও কিছু ব্যতিক্রম রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এই মর্যাদা পাওয়ার পর সব দেশ একে অপরের সঙ্গে কোনও বৈষম্য ছাড়াই সহজে ব্যবসা করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, ভারত তার সঙ্গে ব্যবসা করার জন্য শ্রীলঙ্কাকে কিছু বিশেষ সুবিধা প্রদান করে, তাহলে তাকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্যান্য সদস্যদেরও একই সুবিধা প্রদান করতে হবে। একইভাবে ভারতকেও অন্যান্য দেশ বিশেষ ছাড় দেবে।
advertisement
বছরের পর বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দুই ডজনেরও বেশি দেশের 'মোস্ট ফেভারড নেশন'মর্যাদা প্রত্যাহার করেছে। সাধারণত রাজনৈতিক কারণে, ঠান্ডা যুদ্ধের ফলে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট দেশগুলির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছিল। কিউবা (Cuba) এবং উত্তর কোরিয়াকে (North Korea) বাদ দিয়ে অনেক দেশের মর্যাদা পরে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, পূর্ব ইউরোপে শীতল যুদ্ধের অবসানের পরে এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সনের (Richard Nixon) সফরের পরে মার্কিন-চিন সম্পর্ক নতুন রাস্তায় যাত্রা শুরু করে।
advertisement
কীভাবে 'মোস্ট ফেভারড নেশন' স্ট্যাটাস কেড়ে নেওয়া হয়?
বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ২১বি ধারা অনুযায়ী নিরাপত্তা-সম্পর্কিত বিরোধের কারণে যে কোনও দেশ অন্য দেশের থেকে এই মর্যাদা প্রত্যাহার করতে পারে। এর জন্য বেশ কয়েকটি প্রধান শর্ত পূরণ করতে হবে। তবে বাস্তবে মর্যাদা প্রত্যাহারের কোনও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া নেই।
advertisement
রাশিয়া থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কী কী আমদানি করে?
তেল, গ্যাস, কয়লা, ভদকা, সামুদ্রিক খাবার বাদ দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়া থেকে বেশিরভাগ প্রাকৃতিক সম্পদ (Natural Resources) কেনে, যার জন্য বিদ্যমান শুল্ক বেশিরভাগই কম বা শূন্য। সেগুলি হল তেল এবং ধাতু যেমন প্যালাডিয়াম (Palladium), রোডিয়াম (Rhodium), ইউরেনিয়াম (Uranium) এবং সিলভার বুলিয়ন (Silver Bullion)। আমদানির মধ্যে রয়েছে রাসায়নিক পণ্য এবং ইস্পাত পণ্য, প্লাইউড, বুলেট এবং কার্তুজের শেল। যেহেতু রাশিয়া থেকে আমদানি করা বেশিরভাগ প্রাকৃতিক সম্পদ, তাই 'মোস্ট ফেভারড নেশন'-এর মর্যাদা হারানোর ফলে তারা সাধারণত শুল্ক বৃদ্ধির মুখোমুখি হবে না। 'মোস্ট ফেভারড নেশন'-এর মর্যাদা প্রত্যাহরের কারণে রাশিয়ান পণ্যের আমেরিকান ক্রেতাদের ১৯৩০ সালের মার্কিন আইন অনুযায়ী আমদানি কর দিতে বাধ্য থাকবে।
advertisement
পাকিস্তানের থেকে মর্যাদা স্ট্যাটাস কেড়ে নিয়েছিল ভারত: ২০১৯ সালে জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় জঙ্গি হামলার (Pulwama attack) পর পাকিস্তানকে বাণিজ্যিক দিক থেকে একঘরে করার প্রক্রিয়া শুরু করে ভারত। পুলওয়ামায় জঙ্গি হানার জেরে পাকিস্তানকে দেওয়া ‘মোস্ট ফেভারড নেশন’ কমা প্রত্যাহার করে নেয় ভারত। পাকিস্তান থেকে আমদানি করা অনেক জিনিসের ওপর শুল্ক বাড়ানো হয়।
Location :
First Published :
March 31, 2022 10:32 PM IST