Explained: ট্যাক্স বাঁচাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন!

Last Updated:

অনেকেই হয় তো জানেন না মিউচুয়াল ফান্ডে (Mutual Fund) বিনিয়োগ করলেও ৮০ সি (80 C)-তে ট্যাক্সে ছাড় পাওয়া যায়।

ট্যাক্স বাঁচাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন!
ট্যাক্স বাঁচাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন!
#কলকাতা: বিশেষজ্ঞরা বলেন প্রত্যেকে যা রোজগার করেন তার অন্তত ২৫ শতাংশ সঞ্চয় করা উচিত। কারণ একটাই, আগামী দিন যাতে সুরক্ষিত থাকে। প্রত্যেক মানুষই তাঁর রোজগারের কিছু না কিছু সঞ্চয় করেন। অর্থনৈতিক ভাবে স্বচ্ছল থাকতে গেলে সঞ্চয় করা ভীষণ দরকার। কোনও একসময় এমন পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে যখন, একসঙ্গে একটু বেশি অঙ্কের টাকা প্রয়োজন। তাই সেক্ষেত্রে সঞ্চিত অর্থ থেকে প্রয়োজনীয় টাকা পাওয়া সম্ভব।
সঞ্চয় বিভিন্ন ভাবে করা যায়। ব্যাঙ্কে সাধারণ সেভিংস অ্যাকাউন্টের (Savings Account) মাধ্যমে, ফিক্সট ডিপোজিটের (Fixed Deposit) মাধ্যমে, ইক্যুইটির (Equity) মাধ্যমে অথবা অন্য কোনও ভাবে সঞ্চয় করা সম্ভব। কিন্তু সেভিংস অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সঞ্চয় এবং ফিক্স ডিপোজিট অথবা ইক্যুইটির মাধ্যমে সঞ্চয় ভিন্ন। সেভিংস অ্যাকাউন্টে সঞ্চিত অর্থ থেকে যে কোনও মুহূর্তে টাকা তোলা সম্ভব। এবং এক্ষেত্রে সুদের হার অনেক কম। তুলনামূলকভাবে সুদের হার বেশি অন্য সঞ্চয় মাধ্যমগুলিতে। কিন্তু সেখানে যে কোনও সময় টাকা তোলা যাবে না। কিন্তু ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ একটু ভিন্ন।
advertisement
advertisement
ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে গেলে আগে বাজার সম্পর্কে ধারণা তৈরি হওয়া দরকার। এবং সেই ধারণা তৈরি হওয়ার মিউচুয়াল ফান্ড বা শেয়ার মার্কেটে বিনিয়োগ করা যেতে পারে।
অনেকেই হয় তো জানেন না মিউচুয়াল ফান্ডে (Mutual Fund) বিনিয়োগ করলেও ৮০ সি (80 C)-তে ট্যাক্সে ছাড় পাওয়া যায়। মিউচুয়াল ফান্ডের একটি বিশেষ ক্যাটাগরি হল ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম (Equity Linked Savings Schemes) বা ELSS যার মাধ্যমে আয়করের ৮০ সি ধারায় ছাড় পাওয়া সম্ভব। ৮০ সি ধারায় মোট দেড় লাখ টাকা ছাড় পাওয়া যায় ওই ধারায়। এছাড়াও ৮০ সি ধারায় লাইফ ইনস্যুরেন্স, পিপিএফ (PPF), এন এস সি (NSC), সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম (Senior Citizen Savings Scheme), ব্যাঙ্ক অথবা পোস্ট অফিসের ফিক্সড ডিপোজিট (FD), এন পি এস (NPS) ইত্যাদি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করলেও দেড় লাখ টাকা পর্যন্ত ৮০ সি ধারায় ছাড় পাওয়া সম্ভব।
advertisement
এছাড়াও বাকি যে দু'টি স্কিমে বিনিয়োগ করা যায় তা হল ন্যাশনাল পেনশন সিস্টেম (National Pension System) বা NPS এবং ইউনিট লিঙ্কট পেনশন প্ল্যান (Unit linked pension Plan) বা ULIP। এই দু'টির মাধ্যমেও ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা সম্ভব। সুতরাং যদি কেউ লং টার্মের ক্ষেত্রে তুলনামূলক ভাবে বেশি রিটার্ন পেতে চায় তাহলে অবশ্যই ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিমে বিনিয়োগ করা উচিত বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ তুলনামূলক বেশি রিটার্ন পাওয়ার পাশাপাশি ট্যাক্সের ক্ষেত্রেও ছাড় পাওয়া সম্ভব। তাঁদের পরামর্শ, এখনও যাঁরা ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করেননি তাঁরা ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করতে পারেন। কিন্তু ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিমে বা ELSS-এ বিনিয়োগ করার আগে কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন-
advertisement
ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম বা ELSS কী?
ELSS হল একটি মাল্টিক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড। যেখানে কোনও একটি মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। এবং সেই নির্দিষ্ট মিউচুয়াল ফান্ডের টাকা কোনও সংস্থার স্টকে বিনিয়োগ করা হয়। এক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়ার মাঝে থাকেন একজন বিশেষজ্ঞ। যাঁকে বলা হয় ফান্ড ম্যানেজার। তিনি পুরো বিষয়টি বুঝে প্রয়োজনমতো টাকা বিভিন্ন সংস্থার স্টকে বিনিয়োগ করেন।
advertisement
পুরো বিষয়টি একটু বিস্তারিত বলা যাক- ধরে নেওয়া যাক A হলেন একজন ব্যক্তি। যাঁর ইক্যুইটি বিষয়ে তেমন ভালো জ্ঞান নেই। কিন্তু ব্যক্তি A ইক্যুইটি বিনিয়োগ করতে চান। এক্ষেত্রে তিনি যদি সরাসরি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করেন তাহলে বেশ কিছুটা ঝুঁকি থাকে। কারণ তিনি স্টক মার্কেট সম্পর্কে তেমন বোঝেন না। কিন্তু তিনি অনায়াসে মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করতে পারেন। কারণ মিউচুয়াল ফান্ডে তিনি যে টাকা জমাবেন সেই টাকা কোনও সংস্থার শেয়ারেই বিনিয়োগ হবে কিন্তু মিউচুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে একজন ফান্ড ম্যানেজার পুরো বিষয়টি দেখভাল করবেন। কোন শেয়ারে কখন বিনিয়োগ করা উচিত পুরো বিষয়টি তিনি পর্যালোচনা করে বিনিয়োগ করবেন।
advertisement
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের জন্য প্রচুর অর্থের প্রয়োজন হয় না। মাত্র ৫০০ টাকা থেকে বিনিয়োগ করা সম্ভব মিউচুয়াল ফান্ডে। এবং বিনিয়োগের কোনও উর্ধ্বসীমা নেই। যত টাকা ইচ্ছা বিনিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু এটা মনে রাখতে হবে আয়করের ক্ষেত্রে ৮০ সি ধারায় যে ছাড় দেওয়া হয় তা প্রতি আর্থিক বছরে দেড় লাখ টাকা।
advertisement
লক ইন পিরিয়ড (Lock in Period)
অন্য মিউচুয়াল ফান্ডের মতো এক্ষেত্রেও যখন ইচ্ছা তখন ভাঙানো যায় না। ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিমের ক্ষেত্রে ৩ বছর লক ইন পিরিয়ড রাখতেই হবে। অর্থাৎ মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ শুরু করার সময় থেকে ৩ বছর পর্যন্ত বিনিয়োগ করা অর্থ তোলা যাবে না। কিন্তু দেখা যায় ELLS-এ সব থেকে কম সময় লক ইন পিরিয়ড থাকে। তুলনামূলক ভাবে অন্য বিনিয়োগের ক্ষেত্রে লক ইন পিরিয়ড অনেক বেশি থাকে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায়, PPF-এর ক্ষেত্রে লক ইন পিরিয়ড ১৫ বছর। অন্য দিকে NSC, সিনিয়র সিটিজেন সেভিংস স্কিম, ব্যাঙ্ক, পোস্ট অফিসের ক্ষেত্রে ন্যূনতম লক ইন পিরিয়ড ৫ বছর। লক ইন পিরিয়ডের পরেও ELLS-এ বিনিয়োগ করা সম্ভব।
ELLS-এর ক্ষেত্রে কত টাকা ট্যাক্স লাগে?
ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম হচ্ছে ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ড স্কিম। যেখানে বিনিয়োগের ৬৫ শতাংশ ইক্যুইটিতে বিনিয়োগ করা হয়। অন্য মিউচুয়াল ফান্ডের মতো এই ক্ষেত্রেও দু'টি আলাদা আলাদা বিনিয়োগ প্ল্যানে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। একটি হল গ্রোথ প্ল্যান (Growth) এবং দ্বিতীয়টি হল ডিভিডেন্ড (Dividend)। গ্রোথ প্ল্যানের রিটার্ন স্কিমের মধ্যে নির্দিষ্ট করে থাকে না। যার অর্থ, গ্রোথ প্ল্যানে বিনিয়োগ করলে কত টাকা রিটার্ন পাওয়া যাবে তা নির্দিষ্ট করে সেই সংস্থার তরফে কোনও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় না। কিন্তু লক ইন পিরিয়ড কেটে যাওয়ার পর ১০ শতাংশ লং টার্ম ক্যাপিটল গেইন (Long Term Capital Gain) ট্যাক্সের সুবিধা থাকে। এছাড়াও ৪ শতাংস সেস যুক্ত হয়।
যদি কেউ ডিভিডেন্ট প্ল্যানের জন্য বিনিয়োগ করা শুরু করে তাহলে বিনিয়োগের সময় ডিভিডেন্ট অনুযায়ী রিটার্ন পাওয়া সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে যত টাকা রিটার্ন পাওয়া যাবে তার উপর কর দিতে হবে।
কত টাকা রিটার্ন পাওয়া সম্ভব?
ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে যতটা ঝুঁকি রয়েছে ইক্যুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিমেও একই ঝুঁকি রয়েছে। কোনও ফিক্সড রিটার্ন সম্পর্কে কোনও নিশ্চয়তা নেই। কারণ পুরো বিষয়টি নির্ভর করে বাজারের উপর। বাজার ভালো হলে ভালো রিটার্ন পাওয়া সম্ভব কিন্তু বাজার খারাপ হলে রিটার্ন খুব একটা ভালো পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি কেউ লং টার্মে বিনিয়োগ করেন, অর্থাৎ যদি কেউ ৭ বছর থেকে ১০ বছর পর্যন্ত বিনিয়োগ করেন তাহলে সেই বিনিয়োগকারী বেশ ভালো রিটার্ন পেতে পারেন বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য ইক্যুইটি মিউচুয়াল ফান্ডে লং টার্মে বিনিয়োগ করলে সেখান থেকে যে পরিমাণ রিটার্ন আসা সম্ভব ফিক্সড ইনকাম ইনস্ট্রুমেন্টে সেই পরিমাণ রিটার্ন আসা সম্ভব নয়। ৩ বছর লক ইন পিরিয়ড থাকলেও বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ELLS-এ বিনিয়োগ করাই সঠিক সিদ্ধান্ত। এবং সেই বিনিয়োগ হওয়া উচিত দীর্ঘমেয়াদী।
লাম্প সাম (Lump Sum) অ্যামাউন্ট না এস আই পি (SIP)?
ELLS-এ দু'টি ভাগে বিনিয়োগ করা সম্ভব। একটি হল লাম্প সাম অ্যামাউন্ট দিয়ে এবং অপরটি হল SIP-র মাধ্যমে। লাম্প সাম অ্যামাউন্ট হল একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করা। অর্থাৎ একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা বিনিয়োগ করতে হবে এবং লক ইন পিরিয়ড থাকবে ৩ বছর। SIP-র ক্ষেত্রে বিষয়টি একটু ভিন্ন। SIP-র পুরো কথাটি হল সিস্টেমেটিক ইনভেস্টমেন্ট প্ল্যান। অর্থাৎ প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ কোনও ELLS প্ল্যানে বিনিয়োগ করতে হবে।
ধরে নেওয়া যাক ব্যক্তি B বিনিয়োগ করতে চান। তিনি মোট ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন বলে স্থির করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি লাম্প সাম পদ্ধতিতে একসঙ্গে ৬০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করতে পারেন। অথবা ব্যক্তি B মাসে মাসে SIP পদ্ধতিতে ৫০০ টাকা করে বিনিয়োগ করতে পারেন। এক্ষেত্রে তাঁকে ১০ বছর ধরে বিনিয়োগ করতে হবে। তবে SIP-এর ক্ষেত্রে প্রতি ইনস্টলমেন্টের লক ইন পিরিয়ড হবে সেই ইনস্টলমেন্ট দেওয়ার ৩ বছর পর্যন্ত। তাই এক্ষেত্রে লক ইন পিরিয়ড ভিন্ন হয়।
মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন, তা হল কোন ধরনের ফান্ডে বিনিয়োগ করা হচ্ছে। কারণ বাজারে প্রচুর মিউচুয়াল ফান্ড রয়েছে। সব মিউচুয়াল ফান্ডকে মূলত তিনটি বিভাগে ভাগ করা হয়। প্রথমটি হল লার্ড ক্যাপ (Large Cap) মিউচুয়াল ফান্ড। এই ধরনের মিউচুয়াল ফান্ডগুলি বড় বড় সংস্থায় বিনিয়োগ করে। যে সব সংস্থায় এরা বিনিয়োগ করে তারা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের তালিকায় ১ থেকে ১০০-র মধ্যে থাকে। এর পরেই থাকে মিড ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ড (Mid Cap। এক্ষেত্রে এই মিউচুয়াল ফান্ডগুলি যে সব সংস্থায় বিনিয়োগ করে তারা ওই তালিকার ১০১ থেকে ২৫০-র মধ্যে থাকে। এবং সবশেষে থাকে স্মল ক্যাপ (Small Cap) মিউচুয়াল ফান্ড। ক্যাপিটালাইজেশনের তালিকায় ২৫০-র পর যে সংস্থাগুলি থাকে সেই সব সংস্থায় স্মল ক্যাপ মিউচুয়াল ফান্ডগুলি বিনিয়োগ করে।
view comments
বাংলা খবর/ খবর/Explained/
Explained: ট্যাক্স বাঁচাতে কোথায় বিনিয়োগ করবেন? জেনে নিন!
Next Article
advertisement
Rhino rescue: বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
বিপর্যয়ের সময় ভেসে গিয়েছিল তারা, অবশেষে ঘরে ফিরল ১০ গন্ডার! সফল 'অপারেশন রাইনো'
  • ১৩ দিনের অপারেশন রাইনোতে ১০টি গন্ডার উদ্ধার করেছেন বনকর্মীরা

  • বিপর্যয়ের সময় জলদাপাড়া থেকে ভেসে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি গন্ডার

  • অক্লান্ত পরিশ্রমের পর বনকর্মীরা গন্ডারগুলোকে জঙ্গলে ফেরাতে সক্ষম হন

VIEW MORE
advertisement
advertisement