হোম /খবর /করোনা ভাইরাস /
কোভিড ১৯ নিউমোনিয়া থেকে কী ভাবে নিজেকে বাঁচাবেন, টিপস দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

COVID-19 pneumonia: কোভিড ১৯ নিউমোনিয়া থেকে কী ভাবে নিজেকে বাঁচাবেন, টিপস দিলেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক

COVID-19 pneumonia: এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে কী কী উপসর্গ থাকতে পারে এবং এর তীব্রতা ঠিক কতখানি, জেনে নিন

  • Share this:

#নয়াদিল্লি: আমরা এখন জানি যে, কোভিড হল নোভেল করোনাভাইরাস (SARS COV 2 Virus) নামক একটি ভাইরাস, যা আমাদের ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই ভাইরাসে প্রথম আক্রান্তের খবর মেলে। সেই সুত্রেই এই ভাইরাসের নামকরণ করা হয় কোভিড ১৯। ভাইরাসযুক্ত ফোঁটাগুলির মাধ্যমে এই ভাইরাস মুখ এবং নাকের মধ্যে প্রবেশ করে। তার পর এটি ধীরে ধীরে ফুসফুসে পৌঁছায়। এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে কী কী উপসর্গ থাকতে পারে এবং এর তীব্রতা ঠিক কতখানি, সে বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিকেত রাই (Niket Rai), MBBS, মৌলানা আজাদ মেডিক্যাল কলেজ (Maulana Azad Medical College) এবং লোকনায়ক হসপিটাল, দিল্লির (Lok Nayak Hospital, Delhi) অ্যাসোসিয়েট।

ফুসফুস কী?

ফুসফুস মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজে ব্যবহৃত হয়। এই শ্বাসযন্ত্রটির প্রধান কাজ হল বাতাস থেকে অক্সিজেনকে রক্তপ্রবাহে নেওয়া এবং রক্তপ্রবাহ হতে কার্বন ডাই-অক্সাইডকে বাতাসে নিষ্কাশন করা। ডান ফুসফুসটি তিনটি অংশে বিভক্ত যার নাম আপার লোব, মিডিল লোব ও লোয়ার লোব। অন্য দিকে বাম ফুসফুসের দু'টি অংশ আপার লোব এবং লোয়ার লোব। আমাদের চারপাশের ২০ শতাংশ অক্সিজেনযুক্ত বায়ু আমাদের মুখ এবং নাক দিয়ে একটি সাধারণ বাতাসের পাইপের মাধ্যমে আমাদের ফুসফুসে প্রবেশ করে। ফুসফুস অনেকগুলি বায়ুথলি বা অ্যালভিওলাই (একগোছা বেলুনের মতো) নিয়ে গঠিত। এটি শ্বাস-প্রশ্বাসের বাতাস ভরাট করে এবং বাতাস শূন্য হওয়ার কারণে নিঃশ্বাসের পরে ধ্বংস হয়ে যায়। অ্যালভিওলাই রক্তে অক্সিজেন পাঠায় যা মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের সমস্ত কোষগুলিতে পৌঁছায়। বিনিময়ে এটি কোষ থেকে কার্বন-ডাই-অক্সাইডের মতো খারাপ গ্যাস বের করে বাইরের পরিবেশে বহিষ্কার করে। একে এয়ার এক্সচেঞ্জ বলা হয়। আমাদের দেহের সমস্ত কোষ, টিস্যু, অঙ্গগুলির বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেনের প্রয়োজন।

নিউমোনিয়া কী ?

নিউমোনিয়া হল ফুসফুসের প্রদাহজনিত একটি রোগ। সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয়। নিউমোনিয়ার কারণে অ্যালভিওলাই তরল হয়ে যায়। প্রথমদিকে গুরুত্ব না দিলে পরে এটি জীবন হানিকরও হতে পারে। নিউমোনিয়ার ফলে ফ্লু-এর সম্ভাবনাও থাকে।

কী ভাবে নিউমোনিয়া হয় ?

এই জীবাণুগুলি অ্যালভিওলাইতে একজোট হয় এবং এটিকে ভর্তি করে দেয়। আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা জীবাণুগুলিকে মেরে ফেলার জন্য লড়াই করে, জ্বলনজনিত কারণে ফুসফুসে তরল এবং মৃত কোষ তৈরি হয় যা এয়ার এক্সচেঞ্জের জন্য কোনও স্থান রাখে না, যার ফলে কাশি এবং শ্বাসকষ্টের মতো লক্ষণ দেখা দেয়।

কোভিড নিউমোনিয়া অন্যান্য নিউমোনিয়া থেকে কী ভাবে আলাদা ?

লক্ষণগুলির ভিত্তিতে অন্যান্য ভাইরাস, ব্যাকটিরিয়া বা ছত্রাক দ্বারা সৃষ্ট করোনা ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া এবং অন্যান্য ভাইরাসজনিত নিউমোনিয়ায় মধ্যে পার্থক্য করা বেশ কঠিন। সঠিক কারণ অনুসন্ধানের জন্য পরীক্ষাগারগুলিতে টেস্ট হওয়া বিভিন্ন নমুনা প্রয়োজন। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে করোনার ভাইরাস ফুসফুসের ছোট ছোট অংশে আধিপত্য বিস্তার করে। এর পর এটি নিজের প্রতিরোধক কোষ ব্যবহার করে ফুসফুসে বেশ কিছু দিন এমনকি সপ্তাহের মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে। এই সংক্রমণের ফল জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট হয় এবং কোভিড ১৯ রোগীদের কিডনি, মস্তিষ্ক, হার্ট এবং অন্যান্য অঙ্গগুলির ক্ষতি করে।

কোভিড ১৯-এর সমস্ত রোগী কি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ?

না, সব ক্ষেত্রে কোভিড রোগীরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হননা। ৬০ বছরের উর্ধ্বে যাঁরা উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট, ফুসফুসের সমস্যা, ডায়াবেটিস, স্থূলত্ব বা ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত, তাঁদের করোনাভাইরাসজনিত নিউমোনিয়া হওয়ার ঝুঁকি বেশি। তবে যে কেউ যে কোনও বয়সে কোভিড ১৯-এ আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। তবে তাদের মধ্যে ৮০ শতাংশ আক্রান্ত রোগীকেই হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন হয় না। ১৫ শতাংশ একটু বেশি অসুস্থ হন, যাঁদের অক্সিজেনের প্রয়োজন হয় এবং ৫ শতাংশ গুরুতর অসুস্থ হন, যাঁদের ভেন্টিলেটরে রাখতে হয়।

কত দিনে নিউমোনিয়া থেকে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে সুস্থ হওয়া সম্ভব ?

অন্যান্য নিউমোনিয়ার তুলনায় কোভিড নিউমোনিয়া থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে একটু বেশি সময় লাগে। সপ্তাহ থেকে তা মাস অবধি গড়াতে পারে। সম্পূর্ণ সুস্থ হয় তো অনেক সময় ৬ মাস পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।

কোভিড থেকে আরও ভালো ভাবে সুস্থ হওয়ার জন্য কী করবেন ?

স্বাস্থ্য সম্পর্কে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে ফলোআপ চালিয়ে যান। তাঁর পরামর্শ কঠোরভাবে মেনে চলুন। বুকে ফিজিওথেরাপির অনুশীলন করুন। স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা এবং ডায়েট মেনে চলুন। মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য ধ্যান ও যোগ ব্যায়াম করুন।

Published by:Ananya Chakraborty
First published:

Tags: Coronavirus, COVID-19, Pneumonia