#নয়াদিল্লি: কথায় বলে, যার শেষ ভালো তার সব সব ভালো। কথাটি খাঁটি সত্য। সাম্প্রতিক সময়ে এই প্রবাদবাক্যটি যে প্রাসঙ্গিক তা আর আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কারণ করোনা (Coronavirus) নিয়ে গত দু'বছরে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড় গোটা বিশ্ববাসীর। তবে এর শেষ যে কোথায় তা জানা নেই কারও। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ের করোনাভাইরাসে (Coronavirus When Ends In India) সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অপ্রত্যাশিত ভাবে নিম্নমুখী হওয়ায় আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছে সারা পৃথিবীর মানুষ। তবে কি এই পৃথিবী থেকে বিদায় নিতে চলেছে কোভিড ১৯ (Covid 19)? এ নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে। চলতি মাসে গোটা বিশ্ব জুড়েই করোনার গ্রাফ ক্রমশ তলানিতে ঠেকেছে। সাম্প্রতিক এই সমীক্ষার ওপর ভিত্তি করে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন করোনা বুঝি শেষের পথে। তবে এই আনন্দ যেন নিরানন্দ না হয়। তাই সাধারণ মানুষকে ঢিলেঢালা মনোভাব বাদ দিয়ে বিগত দিনের মতো নিয়মবিধি পালনের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ সচেতনতাই একমাত্র পথ। তাই প্রত্যেকটি মানুষকে সচেতন থাকার পরামর্শও দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
আরও পড়ুন : D/613 বাড়ি ঘিরে অজানা গল্প প্রতিবেশীদের! জন্মাষ্টমীতে আর কি জমে উঠবে 'জলসাঘর'?
নতুন রূপে, নতুন সাজে করোনা কি আবার ফিরতে পারে?
কোভিড ১৯ কি আবার ফিরতে পারে (Coronavirus When Ends In India), এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। আসলে মহামারী বলে কথা। এত সহজে কী তার বিদায় আসন্ন হতে পারে! ফলে তা নিয়ে এখন সমীক্ষা, গবেষণা, ও বিতর্কের অন্ত নেই। একেবারে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সমীক্ষা ঘাঁটলে দেখা যাবে, গত দু'বছরে কখনও ডেল্টা (Delta), কখনও ডেল্টা প্লাস (Delta Plus), আবার কখনও ওমিক্রন (Omicron)) বা ইহু (IHU) প্রজাতি রূপে গোটা পৃথিবীর মানুষকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে করোনাভাইরাস। তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনায় সংক্রমণ (Coronavirus) ও মৃত্যুর হার অত্যাধিক ভাবে নিম্নমুখী হওয়ায় ওমিক্রনকেই আপাতত করোনাভাইরাসের শেষের পথ (Pandemic To Endemic) বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ গত কয়েক মাস আগের অর্থাৎ ২০২১ সালের শেষের দিকে ওমিক্রনের তীব্রতা প্রখর হলেও বর্তমান সময়ে অর্থাৎ চলতি মাসে ওমিক্রনের সংক্রমণ (Omicron) ও মৃত্যুর হার শতাংশের হারে অপ্রত্যাশিত ভাবে কমে গিয়েছে।
আরও পড়ুন : এক দুই নয়, একসঙ্গে ৫০ রকমের চপ! বেনু দা'র 'চপ'-চমকে তোলপাড় পূর্ব মেদিনীপুর..
সাম্প্রতিক করোনা রিপোর্ট (Coronavirus When Ends In India) বলছে, গত বছর ডিসেম্বর এবং চলতি বছরের শুরুর দিকে অর্থাৎ জানুয়ারি মাসে করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ চলাকালীন ওমিক্রনের দাপট ছিল পুরোমাত্রায়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বিগত কয়েক দিনের করোনার গ্রাফ (Coronavirus) এক ধাক্কায় ৯২ শতাংশ কমে গিয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে করোনায় সংক্রমণের রিপোর্ট অনুযায়ী আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ২৭ হাজার ৪০৯ জন। একটানা ন'দিন পর্যবেক্ষণ করে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন বর্তমানে পজিটিভ কোভিড রোগীর সংখ্যা এক লক্ষের নিচে নেমে গিয়েছে গোটা দেশে। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অত্যাধিক হারে কম হওয়ার কারণে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন বর্তমানে ভাইরাসের কার্যকারিতা সীমাবদ্ধ হয়েছে। তা আগামীতে কয়েকটি অঞ্চল ভিত্তিক হিসাবে শুধুমাত্র চিহ্নিত হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে করোনার শেষ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করেননি বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা জানিয়েছেন, ওমিক্রনে আপাতত রেহাই মিললেও করোনা যে ফের নতুন রূপে ফিরতে পারে সে বিষয়েও সতর্কতা দিয়ে রেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলেছেন করোনা ফের নতুন রূপে নতুন সাজে ফিরবে কী না তা এখনই বলা সম্ভব নয়। তবে এটি ফিরলে যে তার তীব্রতা আরও মারাত্মক হতে পারে, সে কথাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে এক প্রখ্যাত চিকিৎসকের মতে, ওমিক্রনের আপাতত ফেরার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ প্রত্যেকটি মানুষকে টিকা (Covid Vaccine) দিয়ে তাদের অনাক্রমণতা দূর করা হয়েছে ইতিমধ্যেই। ফলে করোনার নতুন রূপে ফিরে এলেও তা বিস্তারলাভ করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। এর পাশাপাশি ওই চিকিৎসক প্রত্যেকটি মানুষকে টিকা গ্রহণ, সচেতন থাকার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কারণ হিসাবে ওই চিকিৎসক বলেছেন, সচেতনতা ও সুচিকিৎসাই করোনার সংক্রমণ রুখে দেওয়ার একমাত্র পথ।
আরও পড়ুন : কীভাবে কানাডার অ্যান্টি-ভ্যাকসিন ম্যান্ডেট প্রতিবাদ বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে?
করোনা কীভাবে মহামারী আকার নিল?
যে কোনও মহামারী খুবই বিপজ্জনক। করোনার (Coronavirus) সৃষ্টি বা উৎপত্তি নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। ছোট জায়গা থেকে উৎপত্তি হয়েও তা কীভাবে মহামারী আকার নেয় সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যখন কোনও ভাইরাসের উৎপত্তি হয় তখন তা একটি জনগোষ্ঠীকে সংক্রমিত করে। পরে ধাপে ধাপে তা ছড়িয়ে পড়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীতে। আসলে যে কোনও ভাইরাসই মানুষের শ্বাসযন্ত্রের ওপর ক্রিয়া করে। ফলে এক মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে সহজেই ভাইরাস প্রবেশ করে রোগের বৃদ্ধি ঘটায়। এ বিষয়ে সাম্প্রতিক করোনা সংক্রমণ ও মহামারী নিয়ে ঠিক একশো বছর আগে অর্থাৎ ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু- এর (Spanish Flu) উদাহরণ দিয়েছেন একাধিক বিশেষজ্ঞরা। এ বিষয়ে নয়াদিল্লির জর্জ ইনস্টিটিউট অফ গ্লোবাল হেলথের গবেষক ডাঃ ওমেন জন (Owmen John) বলেছেন, সার্স হোক কিংবা কোভিড যে কোনও ভাইরাসই প্রাণঘাতী। স্থানীয় ও অঞ্চল ভিত্তিক নিয়ম, বিধিনিষেধ, সচেতনতা এবং সুচিকিৎসার মাধ্যমেই তা প্রথমেই প্রতিহত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি সংক্রমণ রুখতে পর্যাপ্ত টিকাদানের কথাও বলেছেন তিনি।
সংক্রমণ রুখতে সরকারি পদক্ষেপগুলি কী কী?
গত দু' বছর যাবত করোনায় বিপর্যস্ত গোটা পৃথিবী। মহামারীতে গত দু'বছরে প্রাণ গিয়েছে লক্ষাধিক মানুষের। একেবারে শুরু থেকে আজ পর্যন্ত সারা পৃথিবীর সমীক্ষা রিপোর্ট ঘাঁটলে তার ছবি মিলবে স্পষ্ট। শুধুই কী মৃত্যু মিছিল, এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গত দু'বছরে গোটা পৃথিবীর অর্থনৈতিক কাঠামো ভেঙে গিয়েছে পুরোমাত্রায়। কারণ মহামারীর কবলে পড়ে ইতিমধ্যেই কাজ হারিয়েছেন গোটা পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যুর পাশাপাশি অর্থনৈতিক ভাবে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক দশক পিছিয়ে পড়েছে সারা পৃথিবীর একাধিক দেশ। তবে সাম্প্রতিক করোনা রিপোর্টের (Coronavirus When Ends In India) ওপর ভিত্তি করে ফের একবার মাথা তুলে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে সেই সব দেশের সরকার। তবে ওমিক্রনের দাপট কম হওয়ায় বেশ কিছুটা স্বস্তি মিলেছে। তবে করোনা যে ফের একবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে না তা হলফ করে বলা যায় না। তাই সচেতনতার (মাস্ক পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা) পাশাপাশি নিয়মবিধি পালন ও পর্যাপ্ত টিকাকরণ যেমন প্রয়োজন তেমনই সাধারণ মানুষের সুচিকিৎসার জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো তৈরি করা যে কোনও সরকারের লক্ষ্য হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবেই বাঁচবে মানুষ, রুখে দেওয়া যাবে মহামারী।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Coronavirus, Pandemic