Coronavirus: করোনা সংক্রমণে এগিয়ে পুরুষরা, মহিলাদের রিপোর্ট নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিচ্ছে সমীক্ষা!
- Published by:Sanjukta Sarkar
Last Updated:
Coronavirus: যে পরিমাণ মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন বা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার সবটা সামনে আসেনি।
#নয়াদিল্লি: গত বছরেও ছবিটা ছিল বর্তমান সমীক্ষার তুলনায় একেবারে অন্য রকম। ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে একটা সমীক্ষা প্রকাশ্যে এসেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল যে এই সমীক্ষা মার্চ থেকে এপ্রিল, অর্থাৎ গোটা একটা মাস ধরে বিশ্বের আটটি দেশে চালানো হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে যে কোভিড ১৯ (Coronavirus) সংক্রান্ত যা যা স্বাস্থ্যবিধি এ যাবৎ মানতে বলা হয়েছিল, সেটা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে মেনেছেন বেশিরভাগ মহিলারাই। কারণ তাঁরা এই অতিমারীকে সত্যিই একটি বড় বিপর্যয় বলে মনে করেছেন। মেয়েরা এই নিয়ে অনেক বেশি সতর্কও, বলছে রিপোর্ট । মহিলারা স্বাস্থ্যবিধি বেশি মানেন বলেই হয়তো তাঁদের মৃত্যুর হারও অনেক কম। আমেরিকা, ভারত ও ব্রাজিল- সর্বাধিক কোভিড-আক্রান্ত তিনটি দেশের বেশিরভাগ রোগীই কিন্তু পুরুষ।
পাশাপাশি এটাও দাবি করা হয়েছিল যে মহিলারা যে শুধু সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিজেদের এই ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত করেছেন তাই নয়, যে সব দেশ মহিলারা পরিচালনা করেন, যেমন জার্মানি ও নিউজিল্যান্ড, সেখানে করোনার থাবা খুব একটা শক্তিশালী হতে পারেনি। জেসিন্ডা আরডেন (Jacinda Ardern) বা এঞ্জেলা মারকেলের (Angela Merkel) মতো যোগ্য দেশনায়িকা এই পরিস্থিতিকে খুব ঠাণ্ডা মাথায় এবং অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সামলেছেন- এও বলছে সমীক্ষা।
advertisement
advertisement
কোভিড ১৯ এবং মহিলাদের ঝুঁকি
মহামারী বা অতিমারী (Coronavirus) পরিস্থিতিতে সংক্রমণের ক্ষেত্রে মহিলাদের আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। বিভিন্ন সামাজিক কারণের পাশাপাশি সাধারণত মহিলারাই পরিবারের দায়িত্ব নিয়ে মানুষজনের দেখাশোনা করে থাকেন, তাই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তাঁদের অনেক বেশি। সামনের সারির স্বাস্থ্য কর্মীদের মতো মহিলারাও এই পরিস্থিতিতে সক্রিয়ভাবে লড়াই করে থাকেন। ইবোলা (Ebola) বা জিকা (Zika) ভাইরাসের সময় দেখা গিয়েছে, মহিলাদের কাছে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়ার সুযোগ অনেক কম এবং নিজের স্বাস্থ্য নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পাশাপাশি আর্থিকভাবেও দুর্বল থাকায় স্বাস্থ্য নিয়ে ছোটোখাটো বিষয় তাঁরা এড়িয়ে যান। কোভিডেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
advertisement
বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, করোনা আক্রান্ত এবং করোনায় মৃত্যুর ক্ষেত্রে মহিলাদের রিপোর্ট পিছিয়ে। অর্থাৎ যে পরিমাণ মহিলা আক্রান্ত হয়েছেন বা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে তার সবটা সামনে আসেনি। যে সকল দেশে লিঙ্গ বৈষম্য রয়েছে, সেই সব দেশে রিপোর্ট ও বাস্তবে আক্রান্তের সংখ্যায় তারতম্য অনেক বেশি।
কোভিড রেটে লিঙ্গ বৈষম্য
মহিলা এবং পুরুষদের কত জন কোভিডে (Coronavirus) আক্রান্ত হয়েছেন এবং কতজনের এই ভাইরাসের জন্য মৃত্যু হয়েছে তা দেখার জন্য ২০২০- ২১-এর মধ্যে ১৩৩টি দেশের মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে একটি সমীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, ইউনাইটেড স্টেটস, নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, ইউক্রেন, আর্মেনিয়া-র মতো দেশে মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় সমান। কোথা কোথাও পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য বেশি। কিন্তু ১৪ শতাংশ দেশে দেখা গিয়েছে, ৬৫ শতাংশ করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু পুরুষদেরই রিপোর্ট করা হয়েছে। বাহরাইন ও কাতারে ৮৮ ও ৮৫ শতাংশ করোনা আক্রান্ত পুরুষরাই। একইভাবে বাংলাদেশ, মালাভি, পাকিস্তানের মতো দেশে মোট কোভিড আক্রান্তের ৭৪ শতাংশই পুরুষ।
advertisement
আক্রান্তের ক্ষেত্রে মহিলা ও পুরুষদের মধ্যে তারতম্য কেন?
শারীরিক অবস্থা, ক্রনিক বিভিন্ন ডিজিস, বায়োলজিক্যাল ফ্যাক্টর, সামাজিক অবস্থা, চাকরি থাকা, না থাকা এবং লিঙ্গ পার্থক্য তো এর পিছনে রয়েছেই। কিন্তু এতে আরেকটি বিষয় দেখতে হবে, তা হল- মহিলাদের সুরক্ষার জন্য ও শান্তির জন্য দেশ কী করছে, তাদের আর্থিক উন্নতির জন্য কী করা হচ্ছে এবং বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসে তাদের অ্যাকসেস ও পরিবারের তাঁদের জায়গা কোথায় রয়েছে।
advertisement
বায়োলজিক্যাল পার্থক্য এই রিপোর্টে তারতম্য আনতে পারে স্থান অনুযায়ী কিন্তু এতটা তারতম্য আনতে পারে না। সামাজিক সমস্য়া, লিঙ্গ বৈষম্য এবং পরিবারে মহিলাদের অবস্থান অন্যান্যদের তুলনায় কম থাকায় এই পার্থক্য হতে পারে। এর ফলে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে মহিলা এবং পুরুষদের রেটে তারতম্য দেখা যাচ্ছে।
advertisement
স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে লিঙ্গের অবস্থান
বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে সুযোগ ও বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহের ক্ষেত্রে জেন্ডার নর্মস একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্বল আর্থ সামাজিক অবস্থা ও লিঙ্গ বৈষম্যের জন্য অনেক সময়ই মহিলারা স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়েন। বহু উন্নত দেশেও এখনও পর্যন্ত মহিলাদের ঠিক মতো চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয় না। নিম্ন মানের চিকিৎসা ও কম দামের ওষুধ দেওয়া হয়, যেখানে পুরুষরা ভালো পরিষেবা পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন দেশে এখনও মহিলাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার পূর্বে তাঁর স্বামী বা বাবার অনুমতি নেওয়া হয়।
advertisement
নিজের আর্থিক দিক দুর্বল হওয়ায় এবং নিজে সিদ্ধান্ত নিতে না পারায় মহিলাদের পরিবারের উপর নির্ভর করতে দেখা যায়। সাধারণত, পরিবারে উপার্জন ছেলেরা করে তাই তাঁদের উপরই খরচা করার প্রবণতা থাকে। করোনা পরীক্ষা করা বা হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা করানোর ক্ষেত্রে এই মানসিকতা দেখা গিয়েছে। তাই যে দেশে পুরুষরা বেশি আক্রান্ত এবং মৃত্যুর ক্ষেত্রেও তাঁদের সংখ্যা বেশি সেই সব দেশে মহিলাদের হয় করোনা টেস্ট কম করা হয়েছে, না হয় হাসপাতালে নিয়েই যাওয়া হয়নি।
Location :
First Published :
February 21, 2022 3:04 PM IST