হোম /খবর /বিনোদন /
বাড়ি, গাড়ি, ফোন চাই না...একটাই স্বপ্ন, আমি মরে গেলে যেন প্রচুর ভিড় হয়: রাহুল

বাড়ি, গাড়ি, ফোন চাই না...একটাই স্বপ্ন, আমি মরে গেলে যেন প্রচুর ভিড় হয়: রাহুল

‘ভাগ্যলক্ষ্মী’র সেটে রাহুল ।

‘ভাগ্যলক্ষ্মী’র সেটে রাহুল ।

‘‘এত জায়গায় শো করতে গিয়েছি, লোকে আমার জামা ছিঁড়ে দিয়েছে, জামায় গুটকার পিক পড়ে গিয়েছে । আমার কোনও সমস্যা নেই এতে । ওঁদের ভালবাসার তুলনা হয় না ।’’

  • Last Updated :
  • Share this:

ট্রোল’কে একদমই পাত্তা দেন না তিনি । সমস্ত ভক্তদের নিয়ম করে উত্তর দেন । দিল দরিয়া মনটাই রাহুল মজুমদারের প্রধান ইউএসপি । সিমলি রাহার সঙ্গে আড্ডা দিতে বসে ভুলেই গেলেন নামের পাশে ‘তারকা’ ট্যাগটা ।

প্র: বিয়ের পর এত ভালো নতুন একটা কাজ হাতে পেলে, কী মনে হচ্ছে ‘গুড লাক’ ?

উ: হ্যাঁ, হয়তো সেটা কিছুটা রয়েছে । তার সঙ্গে হার্ড ওয়ার্কটাও রয়েছে । সত্যি বলতে কী, বিয়ের আগে ‘দেবী চৌধুরানি’ শেষ করার পরপরই আমি বেশ কিছু কাজ পেয়ে গিয়েছিলাম । কিছু জি-এর প্রজেক্টও এসেছিল । কিন্তু যেহেতু আমি স্টারের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ রয়েছি, তাই সে গুলো ছেড়ে দিই । তারপর স্টারের কিছু প্রজেক্ট এসেছে, তারমধ্যে কিছু আমি করিনি, কিছু হয়নি । সেই দিক থেকে দেখতে গেলে বিয়ের পর ‘ভাগ্যলক্ষ্মী’টা ক্লিক করে গেল ।

প্র: বোধায়নের চরিত্রটা পেয়ে কেমন লাগছে ?

উ: ভীষণ ভীষণ ভাল লাগছে । খুবই ভাল রিঅ্যাকশন পাচ্ছি । এখন মনে হচ্ছে, এতদিন অপেক্ষা করে এই চরিত্রটা বেছে নেওয়ার সিদ্ধান্তটা একেবারে ঠিক ছিল ।

প্র: রাহুলের সঙ্গে কি বোধয়নের অনেকটা মিল রয়েছে ?

উ: মিল যেমন রয়েছে, তেমন অমিলও রয়েছে । যেমন বোধয়নের মতো আমিও খুব দায়িত্ববান, কিছু ক্ষেত্রে সাবধানী, পরিবারের খেয়াল রাখা...সে গুলো রয়েছে । কিন্তু আমি একদমই শান্ত নই । বাড়িতে চেঁচামেচিও করি । মায়ের সঙ্গে, প্রীতির সঙ্গে তো খুবই লেগে যায় আমার ।

‘ভাগ্যলক্ষ্মী’র সেটে বোধায়নের চরিত্রে রাহুল ।
‘ভাগ্যলক্ষ্মী’র সেটে বোধায়নের চরিত্রে রাহুল ।

প্র: ঝগড়াটা কী নিয়ে হয় ?

উ: প্রধানত ঘর গোছানো নিয়ে (হো হো করে হাসি) । আমি একদম গুছিয়ে রাখতে পারি না । আবার প্রীতি খুব গোছালো । আমার আবার কেউ গুছিয়ে দিলেও চলবে না । আলমারিটা তো একদম অগোছালো চাই আমার । না হলে আমি কিছু খুঁজেই পাই না ।

প্র: ‘ভাগ্যলক্ষী’তে তোমার বিপরীতে একজন একেবারে নতুন নায়িকা, ভয় লেগেছিলো ?

উ: না, একটুও না । আমার নিউ কামারদের নিযে কোনও সমস্যা নেই । আমিও তো একদিন নতুন ছিলাম । সবাই নতুন থাকে । আর আমি ‘ক্রাউড’ হিসাবে প্রথম ইন্ডাস্ট্রিতে পা রাখি । ‘বধূবরণ’ সিরিয়ালে কফি খেতে বসানো হয়েছিল আমাকে । আমি জানি ওঁদের স্ট্রাগলটা । এখানে একটু মাটি পেতে গেলে অনেকদিনের অনেক পরিশ্রম দরকার হয় । তাই নতুন-পুরনো বলে কোনও পার্থক্য নেই আমার কাছে ।

প্র: তোমরা স্বামী-স্ত্রী দুজনেই একই পেশায় আছো, কখনো পেশা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সমস্যা হয় দুজনের ? কে ভালো কাজ পেল, কে পেল না... কোনো হীনমন্যতা, বা অন্যরকম কোন সমস্যা....

উ: না, দেখো...আমরা তো এই সমস্ত বিষয়ে এখন যথেষ্ট ম্যাচিওরড বলতে পারো । দু’জনেই প্রফেশনাল । তবে টাইম ম্যানেজমেন্ট করা নিয়ে কখনও সখনও প্রবলেম হয়ে যায় । আমি লিড বলে, শুধু মাসের একটা রবিবার ছাড়া ছুটি পাই না । এই সব মানিয়ে নিতে হয় ।

প্র: বোধায়ন ভীষণ শান্তশিষ্ট আর আন্নাকালী ততটাই ঝগড়ুটে... বাড়িতে তোমরা দু’জন ঠিক কি রকম ?

উ: বাড়িতে আমরা দু’জনেই আন্নাকালী । সারাক্ষণ চিৎকার করি দু’জনেই । মানে সিরিয়াস কিছু নয় । কিন্তু আমাদের ঝামেলা লেগেই থাকে, আবার মিটমাটও হয়ে যায় ।

 বিয়ের দিন রাগুল আর প্রীতি ।
বিয়ের দিন রাহুল আর প্রীতি ।

প্র: বিয়ে, নতুন সংসার, হনিমুন.... তার ওপর দুজনেই শুটিংয়ে ভীষণ ব্যস্ত থাকো, নিজেদের সংসার ম্যানেজ করো কী করে ?

উ: সত্যি বলতে কী ইচ্ছা করলেই ঘুরতে যাব বা ছুটি কাটাব, সে সব একদমই করতে পারি না । বিয়ের সময় আমরা দু’জনেই খানিকটা গ্যাপ নিয়েছিলাম । তাই সেই বিষয়গুলো ভালভাবেই মিটেছে । হনিমুনের পরেই কাজে যোগ দিয়েছি আমরা ।

প্র: ভাগ্যশ্রীর তোমাকে ‘বোধিদা’ বলে ডাক, ভীষণ ট্রোল হয়েছে তারপরেই কি ওই ডাকটা বদলে ফেলা হল ?

উ: (হা হা) না না। আসলে পুরোটাই কিন্তু স্ক্রিপ্টেড । আগে থেকেই এরকম ছিল । যে প্রথমে ‘বোধিদা’ ডাকটা থাকবে । তারপর সেটা বদলে যাবে । তবে আমরা কিন্তু জানতাম, এটা নিয়ে ট্রোল হবে । তারপর রাতে লুডো খেলা । সবটাই জানতাম । তবে যা হয়েছে এখনও পর্যন্ত হেল্দি ট্রোল হয়েছে । এতে আমার কোনও সমস্যা নেই । এটাই পাবলিসিটিরই অঙ্গ । হোক না ট্রোল, ক্ষতি কী ? আমি এগুলো নিয়ে অত মাথা ঘামাই না, কিন্তু প্রীতি ভীষণ সিরিয়াসলি নেয় । ও অনেক ছোট থেকে কাজ করছে, তাও এই বিষয়টায় আমি বলব, এখনও ম্যাচিওরড হতে পারেনি । ও খুব ভেঙে পড়ে ।

প্র: এটা ছাড়া কখনও কোনও কিছু নিয়ে ট্রোল হতে হয়েছে?

উ: হ্যাঁ হয়েছে । যেটা প্রচণ্ড খারাপ ছিল । ওটা’কে ট্রোল না বলে অসভ্যতাই বলা ভাল । যখন আমরা ফেব্রুয়ারির শেষে হানিমুনে থাইল্যান্ডে গেলাম, সে সময় ভয়ানকভাবে কটূক্তি করা হয়েছিল । করোনার সময় কেন বাইরে গেয়েছে, মরে যা তোরা, বাপ-মা তুলে গালিগালাজ সবই হয়েছে । তারপর প্রথম জামাইষষ্ঠী’তে একটি মিডিয়াএসে আমার শ্বশুরবাড়ির অনুষ্ঠানগুলো সম্প্রচার করেছিল । সেখানেও সবাই বলেছে, লোকে খেতে পাচ্ছে না আর এরা সবাইকে দেখিয়ে খাচ্ছে । কিন্তু আমার নেচার হল, কখনও আমি কারও জন্য ১ পয়সার কিছু করি আর লাখ টাকারই কিছু করি না কেন, সে কথা কখনও আমি বাইরে প্রকাশ করব না । এটা আমার নীতির বিরুদ্ধে ।

 হনিমুনের ছবি ।
হনিমুনের ছবি ।

প্র: তারপরেও নাকি রাহুল ফ্যানদের ভীষণ ভালবাসে ?

উ: ভীষণই । আমার কাছে যাঁরা আমার লভার্স তাঁদের আমি খুব ভালবাসি । কিন্তু হেটার্সদের নিয়েও আমার কোনও প্রবলেম নেই । আর আমি হয়তো ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র, যে সোশ্যাল মিডিয়ায় সব্বাইকে উত্তর দিই । আমি মনে করি, ওঁরা যে পরিমাণ ভালবাসা আমাকে দিচ্ছে সেটা নিঃশর্ত ভালবাসা । এটা অন্য কোথাও পাব না । আমি বাউন্সার নিয়ে ঘুরি না । গ্রামে শো করতে গেলেও নয় । ‘দেবী চৌধুরানি’র সময় এত জায়গায় শো করতে গিয়েছি, লোকে আমার জামা ছিঁড়ে দিয়েছে, জামায় গুটকার পিক পড়ে গিয়েছে ।  বিশ্বাস করো, আমার কোনও সমস্যা নেই এতে । ওঁদের ভালবাসার তুলনা হয় না ।

প্র: তুমি তো সিনেমা দিয়ে শুরু করেছিলে হঠাৎ মেগায় এলে কেন?

উ: হ্যাঁ, ‘রং রুট’ দিয়ে শুরুটা করেছিলাম । তারপর যা ছবির অফার এসেছিল পছন্দ হয়নি । ওই রকম ছবি সত্যি বলতে কী করতে চাইনি । হয়তো কিছুটা স্বার্থপরতা দেখাতে হয়েছে । যদি সুরিন্দর, ভেঙ্কটেস বা উইন্ডোজ থেকে অফার আসতো, তাহলে কি যেতাম না ? এরমধ্যেই স্টারের অফার এল । ‘টেক্কা রাজা বাদশা’ আর ‘দেবী চৌধুরানি’ এই দু’টোর মধ্যে একটা চয়েস করতে হবে । আমি কিন্তু প্রথমে বেছেছিলাম ‘টেক্কা রাজা বাদশা’ । শেষ পর্যন্ত লোপাদি’র পরামর্শে ‘দেবী চৌধুরানি’ করলাম ।

 ‘দেবী চৌধুরানি’র সেটে রাহুল ।
‘দেবী চৌধুরানি’র সেটে রাহুল ।

প্র: তোমার প্রথম সিরিয়াল দেবী চৌধুরানি, একটা সাহিত্য নির্ভর ধারাবাহিক ছিল । কিন্তু ততটা জনপ্রিয়তা পেল না কেন?

উ: (রেগে গিয়ে) এটা কে বলল ? ‘দেবী চৌধুরানি’ জলসার নম্বর ১ সিরিয়াল ছিল টানা ৬ মাস । তারপরেও ১ বা ২ নম্বরে থেকেছে সব সময় । প্রচণ্ড জনপ্রিয় হয়েছিল ।

প্র: প্রীতির সঙ্গে তোমার আলাপ কীভাবে ?

উ: ‘রুং রুট’ করতে গিয়ে । সেখান থেকে ভাললাগা, ভালবাসা জন্মায় । সিদ্ধান্ত নিলাম সেটল করার । আসলে জীবনসঙ্গিনী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আমাকে একটু পুরনো পন্থী বলতে পারো । নিজের স্ত্রী বলে যাঁকে ভাববো তাঁর মধ্যে সেই X-Factor টা থাকতেই হবে ।

 রিসেপশনের দিন রাহুল আর প্রীতি ।
রিসেপশনের দিন রাহুল আর প্রীতি ।

প্র: নিজেকে কোন জায়গায় দেখতে চাও ভবিষ্যতে ?

উ: আসলে আমি প্রফেশনাল ক্রিকেটার ছিলাম । ইঞ্জিনিয়ারিং কমপ্লিট করেছি । আমাদের পারিবারিক ব্যবসা আছে । তো অভিনয়ে না এলে হয়তো আমি খেলোয়াড় হতাম বা কোনও চাকরি করতাম বা বাবার ব্যবসা সামলাতাম । কিন্তু না... ছোট থেকেই আমার একটা স্বপ্ন ছিল, রাহুল মরে গেলে যেন ভিড় হয় । একটাই ইচ্ছা আমার, আমি মরে গেলে যেন কাগজে ছোট করে হলেও বেরয় আর যেন একটু ভিড় হয় । তাই কিছু একটা করতেই হত আমাকে । (হাসি) কাজ করে গাড়ি, বাড়ি, আইফোন কেনার স্বপ্ন আমার নেই । ভগবানের ইচ্ছায় সে সবই আমার আছে। আমি শুধু চাই, রাস্তায় বেরলে যেন আমাকে দেখে ভিড় হয় । এতেই খুশি আমি ।

প্র: তাহলে কি ভিলেনের চরিত্র পেলে করবে ?

উ: এখনও তো একদমই সেই ইচ্ছে নেই । তবে আলাউদ্দিন খিলজি’র মতো ভিলেন হলে তো না করার জায়গাটাই থাকবে না । (হো হো হো)

Published by:Simli Raha
First published:

Tags: EXclusive Interview, Rahul Mazumder