‘মোটা বলে হিয়া’কে অনেকেই প্রথমে মেনে নেননি, বডি শেমিংও করা হয়েছে’, একান্ত সাক্ষাৎকারে অনামিকা
- Published by:Simli Raha
- news18 bangla
Last Updated:
‘বাস্তবেও যদি উজানের মতো একজন স্বামী পাই তা হলে আমার থেকে বেশি খুশি আর কেউ হবে না ।’ মন খুলে আড্ডা দিলেন ‘এখানে আকাশ নীল’-এর হিয়া ।
নিজেই স্বীকার করলেন অনামিকা আর হিয়া খুব আলাদা মানুষ নয় । অনামিকাও উচ্ছ্বল, প্রাণ প্রাচুর্যে ভরপুর । পরিবার বাধ্য করেছে বলেই মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আজ তিনি অভিনেত্রী । তবে আজ আর কোনও আফশোস নেই । মোটা হওয়ায় কটূক্তিও শুনতে হয়েছে । শেষ পর্যন্ত সব জয় করে দর্শকদের কাছে হিয়া হয়ে উঠেছে ঘরের মেয়ে । অনামিকা চক্রবর্তী-র সঙ্গে একান্ত আড্ডায় সিমলি রাহা ।
প্র: নতুন নাম পেয়েছ, দর্শকদের কাছ থেকে হিয়ান, কেমন এনজয় করছো এই নতুন পরিচয়?
উ: এই যে নতুন নামটা আমরা পেয়েছি #Hiyan.... প্রথমত বলতে চাই, সে জন্য দর্শকদের কাছে আমার কৃতজ্ঞতার শেষ নেই । এটা ভগবানের অনেক আশীর্বাদ যে এরকম একটা ট্রেডমার্ক বাংলা ধারাবাহিকের ইতিহাসে তৈরি করতে পেরেছি আমরা । এর জন্য নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি আমরা । আশা করি, হিয়ান বহু বছর মানুষের মনে থেকে যাবে ।
advertisement
advertisement
প্র: পর্দার হিয়া আর বাস্তবের অনামিকা কতটা এক?
উ: অনেএএএকটা এক । হিয়া আর অনামিকা একইরকম বলে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের অনুভূতিগুলো বের করে আনতে আমার অত অসুবিধা হয় না । হিয়ার থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, আবার অনামিকার থেকেও হিয়া অনেক কিছু নিয়েছে ।

advertisement
প্র: উজানের সঙ্গে তো এতো লড়াই, সেট- এ কত টা ঝগড়া করো?
উ: (হো হো করে হাসি) ডে-ওয়ান থেকে ক্যামেরার সামনে ঝগড়া করছি আমরা । কিন্তু ‘কাট’ বলার পরেই দারুণ বন্ধুত্ব হয়ে যায় হিয়া আর উজানের । খুব মজা করে কাজ করি আমরা ।
প্র: ওয়েব থেকে আবার মেগায় ফিরলে কেন?
advertisement
উ: আসলে আমার অনেকদিনের একটা গ্যাপ পড়ে গিয়েছিল । ১ বছর পর্দা থেকে দূরে ছিলাম । ইন্ডাস্ট্রি থেকে নিজেকে একটু সরিয়ে নিয়েছিলাম । এরপর হঠাৎ করেই ‘এখানে আকাশ নীল’-এর অফারটা পাই । খুব উত্তেজিত হয়েছিলাম । আবার একটু ভয়ও ছিল। যেহেতু এটা আগে একবার হয়েছে...এতটা জনপ্রিয়তা পেয়েছিল । তাই একটা ভয় কাজ করছিল।
advertisement

প্র: ঠিকই । ‘এখানে আকাশ নীল’ ভীষণ হিট সিরিয়াল...মানুষের মনে পুরনো হিয়া-উজান এখনও গেঁথে রয়েছে... মনে হয়নি কখনও, মানুষ গ্রহণ করবে কিনা?
উ: ১০০ বার মনে হয়েছে । সে জন্যই ভয় পেয়েছিলাম । কারণ অপরাজিতা দি, ঋষি দা একটা জায়গা তৈরি করে দিয়েছিল হিয়া-উজানের জন্য । সেই জায়গাটা ধরে রাখতে পারব কিনা, মানুষ গ্রহণ করবেন কিনা... এসব নিয়ে খুবই ভীত ছিলাম । ভেবেছিলাম করবই না । তারপর মনস্থির করি হিয়া’কে আমি একটা নতুনভাবে উপস্থাপন করবো । নিজের মতো করে গড়ব । জানতাম মানুষের একটু সময় লাগবে, কিন্তু ঠিকই তাঁরা গ্রহণ করবেন । তবে একটা কথা ঠিক, প্রথমদিকে কিন্তু মানুষ আমাকে মোটেই হিয়ার চরিত্রে মেনে নেননি, কারণ আমি মোটা । আর এ জন্য আমাকে বডি শেমিংও করা হয়েছে ।
advertisement
প্র: হোলি ফাঁক -এ যথেষ্ট সাহসী দৃশ্যে দেখা গিয়েছে তোমায়, কী ভাবে কমফোর্টেবল হলে?
উ: হ্যাঁ...প্রথম যখন এটা শুনলাম আমাকে একটা ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় করতে হবে, তখন আমাকে সবদিক থেকে আমার কমফোর্ট দেওয়া হয়েছিল। সেটে সে সময় ৩-৪ জন শুধু ছিলেন । আর আমার কো-অ্যাক্টর সৌম্য (সৌম্য মুখোপাধ্যায়) সবদিক থেকে আমাকে সাহায্য করেছিল । সবাই ভীষণ সাপোর্টিভ ছিল । বিশেষ করে সৌম্য । আমাকে স্বাভাবিক রাখা, আমার প্রিভেসি রক্ষা করা...সবটা দারুণভাবে সামলেছিল ও ।
advertisement

প্র: এত ছোট বয়সে ইন্ডাস্ট্রিতে এসেছো, কোথাও কখনও ঠকে যাওয়ার এক্সপেরিয়েন্স হয়েছে?
উ: খুবই ছোট বয়সে এসেছি আমি । যখন ‘রাজযোটক’ করলাম, তখন মাত্র ১৬ বছর আমার । তবে আমি লাকি, সেরকম কোনও ঘটনা আমার সঙ্গে ঘটেনি । আর আমার মনে হয় না আমি কাউকে কখনও সেই জায়গাটা দেব, যাতে আমি ঠকে যেতে পারি । কাউকে অসম্মান করে বলছি না, তবে এখানে যে যাঁর নিজের লড়াইটা লড়তে আসে, কে কীভাবে সেটা লড়বে, তা তাঁকেই ঠিক করতে হয় ।
প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে শুরুটা কী করে হল?
উ: শুরুর গল্প বলতে গেলে শেষ হবে না (হাসি) । ২০১৪ সালে ‘রাজযোটক’ দিয়ে শুরু । জীবনে কোনওদিন ভাবিনি এই পেশায় আমি আসব । আর কখনও অভিনেত্রী হওয়ার ইচ্ছাও ছিল না । আমার পরিবার আমাকে ‘পুশ’ করে, জোর করে অডিশনে নিয়ে আসে আমাকে । বকাঝকা, দিনরাত এরজন্য Abused-ও হতে হয়েছে আমাকে । তাও শুধু পরিবারের কথা ভেবে সে দিন অডিশনে গিয়েছিলাম আমি। সারাদিন ধরে, মেকআপ করে, ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে অডিশন দিতে হয়েছিল । আমাকে একটা স্ক্রিপ্ট দেওয়া হয়, সেটার মানেও ভাল করে বুঝতে পারছিলাম না । কারণ সে সময় আমার বাংলা মারাত্মক দুর্বল ছিল । তারপরেও আমি সিলেক্ট হলাম । পরের দিন সকালবেলা ফোনটা এসেছিল । আমি জাস্ট আকাশ থেকে পড়েছিলাম । (হাসি)

‘রাজযোটক’-এর সেটে অনামিকা।
প্র: তুমি তো বাঙালি...তাহলে বাংলা খারাপ ছিল কেন বলছো?
উ: হ্যাঁ আমার বাড়ি মুকুন্দপুর । কিন্তু স্কুলে বেশিরভাগ সময় হিন্দি আর ইংরাজিতে কথা বলে বলে বাংলাটা ভাল করে আয়ত্তই করতে পারিনি । বাড়িতে বাংলা কথা হত, কিন্তু বাড়িতে বেশি কথা বলতাম না আমি । চুপচাপ ছিলাম ।
প্র: এরকম একজন রাগী husband রিয়েল লাইফ-এ এলে কী করবে?
উ: উফফ...খুব খুশি হবো । কারণ উজান একজন দারুণ মানুষ । মনের দিক থেকে সে খুব পিওর । আর আমার মনে হয়, আমাকে হ্যান্ডেল করার জন্য একজন এরকম মানুষই দরকার । গম্ভীর স্বামী হলেই একমাত্র আমাকে একটু কন্ট্রোল করতে পারবে । না তাই বলে, তাঁকে পুরোপুরি কন্ট্রোল করতে দেব না । তবে উজানের মতো মানুষ যদি পাই তাহলে আমি কখনও তাঁকে আমাকে ছেড়ে যেতে দেব না । (হাসি)

প্র: হিয়ার এমন কী গোপন কথা আছে যা তোমার দর্শকদের বলতে চাইবে?
উ: হিয়ার কোনও গোপন কথা নেই । হিয়ার সবটা দর্শকরা জানেন । ওঁর মনে কোনও লুকোচুরি নেই । হিয়ার মনে যা, মুখেও তাই । ভীষণ প্রাণবন্ত একজন মানুষ হচ্ছে হিয়া ।
প্র: সিনেমা, ওয়েব, মেগা সবটাই তো হল, কোনটা বেশি পছন্দের?
উ: এখনও পর্যন্ত তিনটে সিনেমা করেছি । ‘আসছে আবার শবর’, ‘আড্ডা’ আর ‘তোর অপেক্ষা’ বলে নর্থ বেঙ্গলের একটা প্রজেক্ট । সবগুলোই খুব কাছের আমার কাছে । আর ওয়েব দুটো । ‘হোলি ফাঁক’-এর সিজন ওয়ান আর সিজন টু । তবে সিনেমা আমার ফেভারিট ।

প্র: ইন্ডাস্ট্রিতে কাস্টিং কাউচ নিয়ে অনেক কিছু শোনা যায়... এটা কতটা সত্যি?
উ: এরকম কোনও সিচ্যুয়েশন কখনও ফেস করিনি আমি, তাই বলতে পারব না । তবে আমি মনে করি, আমি একজন স্ট্রং মহিলা । তাই আমার সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটবে বলে আমি মনে করি না । আমি কী করতে চাই, কেমন করতে চাই সেটা আমি খুব ভাল করে জানি ।
প্র: অনামিকার জীবনে উজান কে? সুখবরটা কবে পাবো?
উ: এই মুহূর্তে তো অনামিকার জীবনে কোনও উজান নেই । অনামিকা সিঙ্গল। তবে উজান যে দিন আসবে সে দিনই সবাই সুখবরটা পেয়ে যাবে (হো হো করে হাসি) ।
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
First Published :
September 19, 2020 7:27 AM IST