কলকাতা : তিনি নাকি সহানুভূতি কুড়োনোর চেষ্টা করছেন ৷ এরকমই অভিযোগ উঠেছে অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের স্ত্রী সংযুক্তার বিরুদ্ধে ৷ সেই উদ্দেশেই নাকি তিনি সর্বত্র অভিষেকের ছবি নিয়ে যান ৷ এই ভাষাতেই তাঁকে আক্রমণ করেছেন নেটিজেনদের একাংশ ৷ ট্রোলারদের উপযুক্ত জবাব দিয়েছেন সংযুক্তা ৷ ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে তিনি জানিয়েছেন কেন তাঁর হাতে দেখা যায় প্রয়াত স্বামীর ছবি ৷
মেয়ে সাইনাকে নিয়ে সম্প্রতি ব্যাঙ্ককে বেড়াতে গিয়েছিলেন সংযুক্তা ৷ সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলেন এই সফরের পরিকল্পনা ছিল অভিষেকেরই ৷ করোনার জন্য দু’ বছর তাঁরা বেড়াতে যেতে পারেননি ৷ তাই এ বারের গরমের ছুটি ব্যাঙ্ককেই কাটাবেন ঠিক করেছিলেন ৷ কিন্তু সব পরিকল্পনা এলোমেলো করে দিয়ে মার্চে অভিষেক চলে যান না ফেরার দেশে ৷ তার পর বেড়ানোর পরিকল্পনা যাতে ভেস্তে না যায়, সেদিকে খেয়াল রেখেছিলেন সংযুক্তা ৷ বেড়াতে গিয়ে তাঁরা যে অভিষেককে কত মিস করেছেন, আগের বার ব্যাঙ্কক ভ্রমণের স্মৃতি কত বার ফিরে এসেছে মনে, সে কথা বার বার নিজেদের পোস্টে উল্লেখ করেছেন অভিষেকের স্ত্রী সংযুক্তা ৷
কিছু নেটিজেনের মনে হয়েছে এই যে সংযুক্তা সব সময় স্বামীর ছবি হাতে সর্বত্র যাচ্ছেন, তাঁর সেই আচরণ ‘হাস্যকর’ ৷ সমালোচনার জবাব দিতে তিনি বাধ্য নন ৷ এ কথাও জানান সংযুক্তা ৷ তবে যেহেতু এর সঙ্গে তাঁর স্বামীর নাম জড়িয়ে আছে., তাই তিনি উত্তর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ৷ পোস্টের প্রথমেই সংযুক্তার প্রশ্ন, তিনি কেন সহানুভূতি কুড়োতে যাবেন? তিনি এক জন স্বাধীন উপার্জনশীল নারী ৷ গত ২৪ মার্চের পর থেকে অভিষেকের আশীর্বাদ নিয়ে একাই সামলাচ্ছেন ঘরে বাইরে ৷ লিখেছেন, প্রত্যেক পরিবারেই মৃত্যুর অভিজ্ঞতা আসে ৷ কে কীভাবে এই যন্ত্রণার মুখোমুখি হবেন, সেটা তাঁর উপরই নির্ভর করে ৷ তিনি নিজের শক্তির অংশ করে নিয়েছেন অভিষেককে ৷ প্রয়াত স্বামীর সঙ্গেই এগিয়ে যেতে ভালবাসেন ৷
কিছু দিন আগেই মেয়ের জন্মদিনের আয়োজন করেছিলেন সংযুক্তা ৷ সেখানেও নিয়ে গিয়েছিলেন অভিষেকের ছবি ৷ তবে তিনি সেখানে প্রথমে স্বামীর ছবি নিয়ে যেতে চাননি বলে জানিয়েছেন ৷ লিখেছেন, বাড়ি থেকে আধঘণ্টার দূরত্বে তিনি জন্মদিনের পার্টিতে পৌঁছেছিলেন অভিষেকের ছবি ছাড়াই৷ কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখেন জন্মদিনের রিটার্ন গিফ্ট ফেলে এসেছেন বাড়িতেই ৷ রিটার্ন গিফ্ট নিতে এসে তাঁর মনে হল অভিষেক যেন ছবি থেকে বলছেন, ‘‘ডলের জন্মদিন আর আমাকে রেখে গেলে?’’ তাঁর বিশ্বাস অভিষেকের নশ্বর দেহ চলে গেলেও তিনি ছবি থেকেই কথা বলেন স্ত্রী সংযুক্তা ও কন্যা সাইনার সঙ্গে ৷ তাই হৃদয়ে থাকলেও তিনি অভিষেকের ছবি সঙ্গে রাখেন ৷ লিখেছেন সংযুক্তা ৷ আক্ষরিক অর্থে সর্বত্র না হলেও বাছাই কিছু জায়গায় তিনি ফ্রেমবন্দি অভিষেককে নিয়ে যান ৷
আরও পড়ুন : গভীর বক্ষ বিভাজিকায় তাঁর নিজেরই নাম, কেমন আছেন অমীষা পটেল? রইল ছবিসহানুভূতি ও ভালবাসার মধ্যে যে পার্থক্য আছে, সে কথাও তাঁর পোস্টে তুলে ধরেন সংযুক্তা ৷ লিখেছেন ‘সহানুভূতি’ ও ‘ভালবাসা’-র মধ্যে পার্থক্য আছে ৷ তবে দুর্ভাগ্যবশত অনেকেই এই পার্থক্য বুঝতে পারেন না বলে মনে করেন সংযুক্তা ৷ তিনি সহানুভূতি কুড়িয়ে বাঁচেন না ৷ লিখেছেন সংযুক্তা ৷ কারওরই সেটা করা উচিত নয় বলে মনে করেন তিনি ৷ তাঁর মতে নিজের উপর করুণার মতো খারাপ কিছু আর হয় না ৷ একে কোনওদিনই উৎসাহ দেওয়া উচিত নয় ৷ যদি তাঁর অনুভূতি ও আবেগকে কারওর ‘হাস্যকর’ বলে মনে হয়, তাহলে সেটাকে তিনি তাঁদের রসবোধ বলেই ধরে নেবেন ৷ লিখছেন সংযুক্তা ৷
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।