Tagore's songs in Tarun Majumdar's movies :‘আমি কোথায় দু’বার ভালবাসা কথাটা ব্যবহার করেছি? করেছেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ’

Last Updated:

Tagore's songs in Tarun Majumdar's movies : রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর ছবিতে রেখে নিজেকে ধন্য মনে করতেন তরুণ মজুমদার ৷ তাঁর উপলব্ধি, সুর ও গানের এই আত্মীয়তা রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া অন্য কোথাও নেই ৷

তাঁর উপলব্ধি, সুর ও গানের এই আত্মীয়তা রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া অন্য কোথাও নেই
তাঁর উপলব্ধি, সুর ও গানের এই আত্মীয়তা রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া অন্য কোথাও নেই
তাঁর ছবিতে এত বেশি রবীন্দ্রসঙ্গীত কেন? এ প্রশ্নের মুখে বহু বার পড়েছেন তরুণ মজুমদার ৷ উত্তরে বগুড়ার ভূমিপুত্র বলেছিলেন, রবীন্দ্রসঙ্গীত হল স্পর্শমণি, যার স্পর্শে সব কিছু সোনা হয়ে যায় ৷ রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর ছবিতে রেখে নিজেকে ধন্য মনে করতেন ৷ তাঁর উপলব্ধি, সুর ও গানের এই আত্মীয়তা রবীন্দ্রসঙ্গীত ছাড়া অন্য কোথাও নেই ৷ রবীন্দ্রসঙ্গীতের জন্যই তিনি ছবির দৃশ্যগুলি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছিলেন বলে বিশ্বাস ছিল তাঁর ৷
রবীন্দ্রনাথ তাঁর শেষযাত্রারও সঙ্গী ৷ নশ্বর দেহ যখন এসএসকেএম হাসপাতালের পথে, তখন তার উপর কোনও ধর্মগ্রন্থ নয় ৷ ছিল ‘গীতাঞ্জলি’৷ বিশ্বকবির গান তাঁর হৃদয়ের কত কাছের, বোঝা যায় সত্যজিৎ রায়কে দেওয়া এক উত্তর থেকে ৷ ‘পথের পাঁচালী’-র পরিচালক এক বার জিজ্ঞাসা করেছিলেন ‘পথভোলা’-র নির্দেশককে ৷ ছবির নামে দু’বার ‘ভালবাসা’ কেন? তরুণ মজুমদার উত্তর দিয়েছিলেন, তিনি নন, স্বয়ং রবীন্দ্রনাথই দু’বার বলেছেন ‘ভালবাসা’ শব্দটি ৷ তাঁর কলমই তো উপহার দিয়েছে ‘‘ তোমরা যে বলো দিবস-রজনী ভালোবাসা ভালোবাসা / সখী, ভালোবাসা কারে কয়, সে কি কেবলই যাতনাময়৷’’
advertisement
অথচ, ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবিতে কিন্তু সেই গানটি পরিচালক রাখেননি ৷ বরং সে ছবিতে ছিল ‘তোমার কাছে এ বর মাগি, মরণ হতে যেন জাগি’, ‘গোপন কথাটি রবে না গোপনে’, ‘হার মানা হার পরাবো তোমার গলে’-এর মতো রবীন্দ্রসঙ্গীত ৷ আর, ‘সখী, ভাবনা কাহারে বলে ৷ সখী, যাতনা কাহারে বলে’-এর দৃশ্যায়ন তো বৈগ্রাহিক হয়ে আছে সেই সরস্বতীদি’র জ্যোৎস্নাভেজা ছাদবাগানে ৷ যেখানে দুই বিরহিনী অমলাবালা এবং সরস্বতী হাত ধরে ঘুরে ঘুরে এই গান গেয়ে গাইছেন ও নাচছেন ৷ ওদিকে শ্রীমান পৃথ্বীরাজ তথা রসিকলাল তার নববিবাহিতা স্ত্রীর কাছে যেতে পাঁচিল ডিঙিয়ে, কার্নিশ টপকে ছাদে উঠছে ৷ সদ্য কৈশোরের ভাঙা গলায় ‘গলাটা মন্দ নয়’ বলে সে-ই শেষ করেছিল গানটা ৷ শুনে এক গাল জিভ কেটে এক গলা ঘোমটা টেনেছিল অমলা ৷ মহুয়া রায়চৌধুরী ও সন্ধ্যা রায়ের কণ্ঠে প্লেব্যাক করেছিলেন লতা মঙ্গেশকর ও কবিতা কৃষ্ণমূর্তি ৷
advertisement
advertisement
অয়ন বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়ার মতো তাঁর আর এক আবিষ্কার ছিলেন দেবশ্রী ৷ ‘কুহেলী’ ছবিতে ‘মেঘের কোলে রোদ হেসেছে’-এর গানের সঙ্গে শিশুশিল্পী দেবশ্রীর নাচের দৃশ্য কোথায় যেন মিলেমিশে যায় তপন সিনহার ‘কাবুলিওয়ালা’-য় মিনির ‘খরবায়ু বয় বেগে’ গানে নাচের সঙ্গে ৷ শিশুশিল্পীদের উপরও যে রবীন্দ্রসঙ্গীত দৃশ্যায়িত করা যায়, দেখিয়েছিল দুই পরিচালকের মুনসিয়ানা ৷ কুহেলী ছবিতে হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ও লতা মঙ্গেশকরের দ্বৈত কণ্ঠে ‘তুমি রবে নীরবে’-এর আবেশ বাঙালি দর্শককে রেখে দেয় সুরের মায়াবী অঞ্চলছায়ায় ৷
advertisement
বাংলা চলচ্চিত্রে উত্তম-হেমন্ত জুটির পাশাপাশি দীর্ঘ সুরেলা সফর পাড়ি দিয়েছে তরুণ-হেমন্ত জুটিও ৷ ২৫ বছর ধরে ২৫ টি ছবিতে প্রাণপ্রতিষ্ঠা করেছে এই পরিচালক ও সঙ্গীত পরিচালকের যুগলবন্দি ৷ হেমন্তর কণ্ঠে ‘চরণ ধরিতে দিয়ো গো আমারে’ থাকলে ‘দাদার কীর্তি’-তে কেদারের মতো আপাত-অপ্রতিভ যুবককে প্রথম বার দেখেও সরস্বতীর চম্পকসম আঙুল অর্গ্যানে ছন্দোবদ্ধ হতে বাধ্য ৷
advertisement
হেমন্ত মুখোপাধ্যায় ছিলেন তরুণ মজুমদারের ঘরে মানুষ ৷ ছবির কাজ না থাকলেও তিনি আসতেন পরিচালকের কাছে গান শোনাতে ৷ এটি বর্ষণমুখর দিনের কথা তরুণ মজুমদারের মনে গেঁথে ছিল জীবনসায়হ্ন পর্যন্ত ৷ বৃষ্টি দেখে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের ইচ্ছে হয়েছিল গান শোনাতে ৷ তিনি তীব্র বৃষ্টি উপেক্ষা করে এসেছিলেন পরিচালকের কাছে ৷ দুপুর ও বিকেলের মাঝামাঝি, হারমোনিয়াম নিয়ে ৷ তার পর একটানা গেয়েছিলেন ‘চণ্ডালিকা’-র সব গান ৷ বৃষ্টিতে ঝাপসা হয়ে যাওয়া সেই মুহূর্ত কোনওদিন অমলিন হয়নি পরিচালকের স্মৃতিতে ৷
advertisement
আরও পড়ুন :  তাঁর ছবিতে হাতেখড়ি শিশুশিল্পী হিসেবে, ‘তনুজেঠু’ তাঁর শিক্ষাগুরু, স্মৃতি-অর্ঘ্য প্রসেনজিতের
হেমন্তর ঔদার্য মুগ্ধ করেছিল পরিচালককে ৷ তিনি-ই শিবাজি চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে এসেছিলেন তরুণ মজুমদারের কাছে ৷ হেমন্তর কথায় তরুণ মজুমদার তখন নবাগত শিল্পী শিবাজি চট্টোপাধ্যায়কে প্লে ব্যাক করার সুযোগ দিয়েছিলেন ‘ভালবাসা ভালবাসা’ ছবিতে ৷ তাঁর কণ্ঠস্বর ঠিক না থাকায় হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সে ছবিতে গাইতে পারেননি ৷ কঠোর প্রতিযোগিতার দিনে তাঁর জায়গা এক নবাগতকে ছেড়ে দেওয়ার এই উদারতা অবাক করেছিল পরিচালককে ৷ শিবাজি চট্টোপাধ্যায় এবং অরুন্ধতী হোম চৌধুরী একাধিকবার কাজ করেছেন তরুণ মজুমদারের সঙ্গে ৷ ‘আলো’-তে তাঁরা ছিলেন সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে ৷
advertisement
‘দাদার কীর্তি’-তে ‘বঁধু কোন আলো লাগল চোখে’ গানটি তরুণ মজুমদার গাইয়েছিলেন অরুন্ধতীকে দিয়ে ৷ আবার, ‘পথভোলা’-য় ‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে’ গানে গলা মিলিয়েছিলেন শিবাজি চট্টোপাধ্যায় ও সুজাতা সরকার ৷ এই ছবিতে ‘আমি পথভোলা এক পথিক এসেছি’-তে আবার শিবাজি-অরুন্ধতী-সুজাতার কণ্ঠের ত্রিবেণী ৷
আরও পড়ুন :  প্রিয় পরিচালকের মৃত্যু সংবাদে মনখারাপ বিদেশে, শোকগ্রস্ত ঋতুপর্ণা মনে মনে কলকাতাতেই
এরই পাশাপাশি, ‘নিমন্ত্রণ’ ছবিতে কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কণ্ঠমায়ায় ‘দূরে কোথায় দূরে দূরে’ গানে তন্ত্রীতে বাজে হীরুদার সঙ্গে কুমুর চিরবিরহ ৷ বিরহ, মিলন বা বিচ্ছেদে প্রেমের এই স্নিগ্ধ অথচ গাঢ় উদযাপন বার বার এসেছে তরুণ মজুমদারের পরিচালনায় ৷ প্রতি বার সেই উদযাপনে শ্রাবণের ধারার মতো ঝরে পড়েছে রবীন্দ্রনাথের গান ৷
( ঋণ : তরুণ মজুমদারের পূর্ব প্রকাশিত সাক্ষাৎকার এবং আত্মকথন)
view comments
বাংলা খবর/ খবর/বিনোদন/
Tagore's songs in Tarun Majumdar's movies :‘আমি কোথায় দু’বার ভালবাসা কথাটা ব্যবহার করেছি? করেছেন স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ’
Next Article
advertisement
‘কোনও অপরাধী যেন ছাড় না পায়!’ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহের
‘কোনও অপরাধী যেন ছাড় না পায়!’ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ অমিত শাহের
  • অমিত শাহ দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে.

  • জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা উমর মহম্মদ, পেশায় চিকিৎসক, বিস্ফোরক গাড়িটি চালাচ্ছিলেন.

  • দিল্লি, গুরগাঁও, নোয়ডা এবং গাজিয়াবাদে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে, চলছে কড়া তল্লাশি.

VIEW MORE
advertisement
advertisement