স্মৃতির পাতায় ভ্রান্তিবিলাস! সলিলের পকেটে ‘হাসি’-র চিঠি, কেঁদে ফেলেছিলেন আর্ট কলেজের ছাত্রী জ্যোতি
- Published by:Arpita Roy Chowdhury
- Written by:Bangla Digital Desk
Last Updated:
Jyoti Chowdhury the first wife of Salil Chowdhury: কেমন ছিল জীবনের সেই সোনালি দিনগুলি, অঙ্কনশিল্পী জ্যোতি নিজেই জানিয়েছিলেন এক স্মৃতিকথায়
কলকাতা : কলকাতার শহরতলি কোদালিয়া তখনও ‘সুভাষগ্রাম’ হয়নি খাতায় কলমে। গত শতকের চারের দশকের মাঝামাঝি সেখানেই জ্যোতির সঙ্গে মন দেওয়া নেওয়া সলিল চৌধুরীর। কোদালিয়া (তখন গ্রাম) মামাবাড়িতে থেকে অসম থেকে এসে পড়াশোনা করতেন সলিল। জ্যোতির মাসির বাড়ি ছিল কোদালিয়ায়। মাসতুতো দাদাদের সূত্রেই আলাপ সলিলের সঙ্গে। কেমন ছিল জীবনের সেই সোনালি দিনগুলি, অঙ্কনশিল্পী জ্যোতি নিজেই জানিয়েছিলেন এক স্মৃতিকথায়।
কোনও এক দুর্গাপুজোর সময় ঘরোয়া স্মৃতিচারণে তিনি ফিরে গিয়েছিলেন অতীতে। কিন্তু কোনও তিক্ততা নয়। বর্ষীয়ানের কথায় ঝরে পড়েছে অতীতের সুন্দর মুহূর্তগুলিই। জানালেন, তিনি তখন ম্যাট্রিক দেবেন। পড়াশোনা দেখিয়ে দেওয়ার অছিলায় প্রায়ই সলিল আসতেন তাঁর কাছে। সেখানেই শুরু আলাপ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বয়স বাড়ে। গাঢ় হয় আলাপ ও তার থেকে প্রেম। সলিল তখনও বাউন্ডুলে শিল্পী। সবে শুরু করেছেন কাজকর্ম। বাড়ির লোকের অমতেই তাঁকে বিয়ে করেন জ্যোতি। প্রথমে সংসার শুরু করেন কলকাতাতেই। সলিল তখন ব্যস্ত আইপিটিএ নিয়ে। জ্যোতিও যেতেন তাঁর সঙ্গে। সেখানেই তাঁর আলাপ ঋত্বিক ঘটক, সুচিত্রা মিত্র, মৃণাল সেন, উৎপল দত্তের মতো ব্যক্তিত্বের সঙ্গে৷
advertisement
জীবনের এই পর্বেই মুম্বই থেকে কাজের সুযোগ আসে সলিলের কাছে৷ বিমল রায়ের ‘দো বিঘা জমিন’ ছবির কাজ৷ ১৯৫৪ সালে মুক্তি পাওয়া মাইলফলক এই ছবির সুরকার ছিলেন তিনি৷ কাজের সূত্রে মাঝে মাঝে সলিল মুম্বই গেলেও জ্যোতি থাকতেন কলকাতাতেই৷ সে সময়ের একটি মজার ঘটনার কথা বলেন তিনি৷ বম্বে ফেরত স্বামীর পোশাকের পকেটে একটি চিঠি পান৷ মেয়েলি হস্তাক্ষরে লেখা সেই চিঠির নীচে ছিল জনৈকা ‘হাসি’-র নাম৷ দেখে তো আর্ট কলেজের ছাত্রী জ্যোতি কেঁদেই একশা৷ সলিলও খোলসা করলেন না স্পষ্ট করে৷ তার কয়েক দিন পর আর্ট কলেজে গরমের ছুটিতে জ্যোতি গিয়েছেন বম্বে৷ বিমল রায়ের স্টুডিয়োতে অনুষ্ঠান ছিল৷ সেখানেই সলিল বললেন, ‘এসো এসো তোমার হাসিকে দেখবে এসো’৷ তাঁর সঙ্গে গিয়ে জ্যোতি দেখলেন দাঁড়িয়ে আছেন হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়৷ পরবর্তীতে পরিচালক হওয়া হৃষিকেশ ছিলেন সেই ছবিতে বিমল রায়ের সম্পাদক৷ আসলে তিনিই লিখেছিলেন সেই চিঠি৷ হৃষিকেশের হ-এ ঋ ফলা লম্বা হয়ে আ-কারে পাল্টে গিয়েছিল৷ ফলে হৃষি হয়ে গিয়েছিল হাষি৷
advertisement
advertisement

আরও পড়ুন : মুম্বইয়ে প্রয়াত সলিল চৌধুরীর প্রথম স্ত্রী অঙ্কনশিল্পী জ্যোতি চৌধুরী, বয়স হয়েছিল ৯১ বছর
পরে মুম্বই-ই হয়ে ওঠে সলিলের মূল কর্মকেন্দ্র৷ ১৯৫৪ সালে স্বামীর সঙ্গে জ্যোতিও চলে পাড়ি দেন মুম্বই৷ সেখানকার এবং কলকাতা থেকে যাওয়া শিল্পীদের কাছে তিনিই হয়ে ওঠেন শ্রদ্ধেয় বৌদি৷ তাঁর বাড়িতে শিল্পীদের চাঁদের হাট বসত৷ আড্ডা গল্পের মাঝে চলত ক্যারম খেলা৷ স্মৃতিচারণায় প্রবীণা জ্যোতি বলেছেন লতা এবং আশা দু’জনের সঙ্গেই তাঁর খুব ভাল সম্পর্ক ছিল৷ তাঁকে কোলাপুরী শাড়ি এবং সোনার আংটি উপহার দিয়েছিলেন লতা৷ তাঁরাও লতার জন্য নিয়ে গিয়েছিলেন বাংলার শাড়ি৷ দীপাবলিতে মিষ্টির বাক্স পাঠিয়ে দিতেন লতা৷ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, তালাত মামুদ এবং মান্না দে-এর সঙ্গেও ছিল হৃদ্যতা৷ মান্না দে-এর দুই মেয়ে ছিল সলিল-জ্যোতির মেয়েদের শৈশবের খেলার সঙ্গী৷
advertisement
আরও পড়ুন : দিল্লিতে হিট অ্যান্ড রান ঘটনায় নিহত অঞ্জলির পরিবারকে সাহায্য শাহরুখের সংস্থার
কেমন ছিলেন ব্যক্তি সলিল চৌধুরী? ইউটিউবে থাকা সেই স্মৃতিচারণায় প্রবীণা জ্যোতি জানিয়েছেন সুরকার তথা গীতিকার সলিল ছিলেন খুব মিশুকে৷ সকলকে নিয়ে হৈ হৈ করে থাকতে ভালবাসতেন৷ কিন্তু সেই যশস্বীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর্ব প্রকাশ্যে আনেননি জ্যোতি৷ স্মিত হেসে শুধু বলেছেন ‘‘বাকি সব ঘটনা তো আপনারা সবাই জানেন৷’’
বিনোদন জগতের লেটেস্ট সব খবর ( Entertainment News in Bengali ) পান নিউজ 18 বাংলায় ৷ বলিউড, টলিউড থেকে হলিউড সব খবরই পাবেন এখানে ৷ দেখুন ব্রেকিং নিউজ এবং টপ হেডলাইন ন নিউজ 18 বাংলার লাইভ টিভিতে ৷ এর পাশাপাশি ডাউনলোড করতে পারেন নিউজ 18 বাংলার অ্যাপ অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস-এ ৷ News18 Bangla-কে গুগলে ফলো করতে ক্লিক করুন এখানে ৷
Location :
Kolkata,West Bengal
First Published :
January 09, 2023 12:54 PM IST