প্রয়াত চঞ্চলের পিতা, ফেসবুকে কেবল ‘বাবা’ ডাক অভিনেতার, শেষকৃত্য গ্রামের বাড়িতে
- Published by:Teesta Barman
Last Updated:
শেহনাজ ফেসবুকে লেখেন, 'আমাদের প্রিয় বন্ধু চঞ্চল চৌধুরীর বাবা, সন্ধ্যা ৭:৫০ মিনিটে, ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে, ইহ জগতের মায়া ত্যাগ করেছেন। চঞ্চলের ontent-Disposition: form-data; name="custom-field-template-verify-key" 807c93f5de
#ঢাকা: চলে গেলেন চঞ্চল চৌধুরীর বাবা। সেরিব্রাল অ্যাটাক হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ৯০ বছরের রাধাগোবিন্দ চৌধুরী। 'হাওয়া'র অভিনেতা ফেসবুকে কেবল 'বাবা' বলে ডেকে উঠলেন যেন। তাঁর লেখা ওই একটি শব্দই যেন বুঝিয়ে দিল তাঁর যন্ত্রণার কথা। আজ, মঙ্গলবার, সন্ধ্যা ৭টায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তাঁর বাবা।
অভিনেত্রী শেহনাজ খুশি ফেসবুকে লেখেন, 'অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, আমাদের প্রিয় বন্ধু চঞ্চল চৌধুরীর বাবা, সন্ধ্যা ৭:৫০ মিনিটে, ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে, ইহ জগতের মায়া ত্যাগ করেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি। চঞ্চল এবং তার পরিবার যেন এ শোক কাটিয়ে উঠতে পারে তার জন্য প্রার্থনা করি। চঞ্চলের বাবার শেষকৃত্য, তার নিজ গ্রামের বাড়ি পাবনার কামার হাটে সম্পন্ন হবে।'
advertisement
advertisement
যেই সময়ে চঞ্চলের বাবা হাসপাতালে ভর্তি হন, ঠিক সমই সময়টা তাঁর পেশা জীবনে অত্যন্ত গুরুতর মোড় নিয়েছিল। চলতি মাসের শুরুর দিকে তাঁর ছবি 'হাওয়া' মুক্তি পায় কলকাতায়। হাজার হাজার মানুষের ভিড় তাঁর ছবি দেখার জন্য। তাঁকে একটি বারের জন্য সামনে থেকে দেখার জন্য। একইসঙ্গে কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের মঞ্চে উপস্থিত থাকার আহ্বান পেয়েছিলেন তিনি।
advertisement
সেই কারণে বুকে যন্ত্রণা নিয়েও বাবাকে ঢাকায় রেখে কলকাতা আসতে হয়েছিল তাঁকে। কাজ মিটলেই ফের ঢাকা থেকে ঘুরে আসছিলেন অভিনেতা। 'হাওয়া' মুক্তির দিন নন্দনে বসে তাই নিউজ18 বাংলাকে চঞ্চল বলেছিলেন, "এটা তো ভবিতব্য, বাস্তবতা। কিন্তু খারাপ তো লাগে। বাবা অসুস্থ। ওখানে রেখে এসেছি। কিন্তু যে কাজটার জন্য এসেছি, এটা তো একটা সম্মানের। আর পরিবারই বলেছে, তুমি যাও, আমরা তো আছি।"
advertisement
এর আগে ফেসবুকে তাঁর লেখায় স্মৃতিচারণার ছোঁয়া পেয়েছিলেন ভক্তরা। বাবাকে নিয়ে তিনি লিখেছিলেন, 'বাড়ির উঠোনেই স্কুল, বাবা সেই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। যে কারণে স্কুলের মাঠ, গাছপালা, স্কুল ঘর, বই পত্র…সব কিছুকেই পৈত্রিক সম্পত্তি ভাবতাম। ছোট বেলায় যতটা ভালো ছাত্র ছিলাম, তার চেয়ে অনেক বেশি দূরন্ত ছিলাম। যদিও রোল নম্বর সব সময়ই এক/দুই/তিনের মধ্যেই থাকত। একজন সৎ এবং স্বনামধন্য শিক্ষক হিসেবে আমার বাবাকে এলাকার সবাই একনামে চিনত, এখনও চেনে। যে কোনও জায়গায় গেলে বাবার ছেলে হিসেবেই বেশি সমাদর পেতাম। কয়েক বছর আগ পর্যন্তও দুলাল মাস্টারের সন্তান হিসেবেই এলাকায় সবাই পরিচিত হতাম।'
advertisement
কিন্তু এখন চঞ্চল চৌধুরী দুই বাংলার উচ্চপ্রশংসিত অভিনেতাদের মধ্যে একজন। সময় বদলেছে। ঘটনাটাও উল্টে গিয়েছে। এখন পরিস্থিতি কীরকম? জানা গেল চঞ্চলের লেখায়।
তিনি লিখেছিলেন, 'বাবাকে একদিন জিজ্ঞাসা করেছিলাম, ''ছোটবেলা থেকে তোমার পরিচয়ে পরিচিত হয়ে এসেছি, এখন যখন তোমাকে কেউ চঞ্চল চৌধুরীর বাবা বলে চেনে, তোমার কেমন লাগে?'' বাবা কোনও উত্তর না দিয়ে আমার দিকে শুধু ভেজা চোখে কিছু ক্ষণ তাকিয়ে ছিল। তাঁর সেই গর্বিত মুখটা দেখে, আমার চোখ দুটোও ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল। সন্তানের সকল সফলতায় বাবা মায়ের যে কী শান্তি, কী আনন্দ… তা আমি দেখেছি। কয়েকটা দিন হলো, বাবা হাসপাতালের বিছানায় অচেতন। চোখের জলে আমাদের বুক ভেসে যায়, আর প্রার্থনা করি, আমার বাবা সুস্থ হয়ে উঠুক। বাবা মাকে হাসপাতালের বিছানায় রেখে কোনও সন্তানই ভাল থাকতে পারে না। আমিও ভাল নেই……।'
advertisement
আর আজ সেই চঞ্চল ফেসবুকে কেবল 'বাবা' লিখলেন। তাতেই সবটা যেন স্পষ্ট হয়ে গেল। আজ আর এর বেশি লেখার প্রয়োজন নেই তাঁর।
Location :
First Published :
December 27, 2022 10:23 PM IST