#কলকাতা : "বিশ্বাস করতে পারছি না আমার আর ড্যাডি ডাকার আর কেউ রইল না!" এই ভাবেই ভেঙে পড়লেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায়ের (Abhishek Chatterjee) অনস্ক্রিন 'মেয়ে', খড়কুটো ধারাবাহিকের সহ অভিনেত্রী তৃণা সাহা (Trina Saha)। সকাল সকাল খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন অভিনেতার প্রিন্স আনোয়ার শাহ রোডের বাড়িতে। ফিরে আবার ছুটছেন টেকনিশিয়ান্স স্টুডিও। শেষ মুহূর্তটুকু কিছুতেই যেন কাছ ছাড়া করতে চায় না 'ড্যাডির' আদরের 'গুনগুন'। করবেই বা কী করে? গত দেড় বছরে এই ড্যাডিই যে হয়ে উঠেছিলেন নিজের বাবার মতো। তাই শ্যুটিংয়ের বাইরেও, রয়ে গিয়েছিল সেই মধুর ডাক, 'ড্যাডি'। আর ভালোবেসে মেয়েকে 'গুনগুন' নয়, 'মা' বলেই ডাকতেন অভিষেক। সেইসব মিষ্টি মুহূর্তের স্মৃতিই নিউজ 18 বাংলা ডিজিটালকে শেয়ার করলেন অভিনেত্রী তৃণা সাহা ।
বড় পর্দা থেকে দূরত্ব তৈরি হওয়ার পর অভিষেক চট্টোপাধ্যায় নতুন করে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ‘খড়কুটো’ (Kharkuto) ধারাবাহিকে গুনগুনের ‘ড্যাডি’ হিসেবেই। তাঁরই এই আকস্মিক মৃত্যু কিছুতেই যেন মেনে নিতে পারছেন না অভিনেত্রী তৃণা সাহা (Trina Saha)। পর্দায় প্রয়াত অভিনেতার মেয়ের ভূমিকায় তৃণা অভিনয় করেছেন দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে। সেই কেমিস্ট্রি বজায় ছিল পর্দার বাইরেও।
আরও পড়ুন : হৃদরোগে রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত জনপ্রিয় অভিনেতা অভিষেক চট্টোপাধ্যায়
"যখনই বলেছি শরীরের যত্ন নাও। এটা খেয়ো না, ওটা খেয়ো না। হাসতে হাসতে উড়িয়ে দিতেন।" ফ্ল্যাশব্যাকে মতোই মুহূর্তগুলো ভেসে উঠছিল তৃণা সাহার চোখে। ধরা গলায় বলে চলছিলেন সেই সব মজা-হাসি-হইহই করা দিনগুলির কথা। পর্দার বাইরেও মেয়ের মতোই কখনও বাবার ঠোঁট থেকে সরিয়ে দিয়েছেন সিগারেট। উল্টোদিকের সেই সদা হাসিখুশি বিন্দাস মানুষটা কিন্তু শুধু বলে গিয়েছেন, "আমি ফিট অ্যান্ড ফাইন আছি! আমার কিচ্ছু হবে না"।
"খুব ভালোবাসতেন খেতে। এককথায় যেমন ছিলেন হুল্লোড়বাজ তেমনই ছিলেন খাদ্যরসিক। ইলিশ মাছ, পাঁঠার মাংস ভালোবাসতেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)।" 'লিভ লাইফ কিং সাইজ' মন্ত্রে বিশ্বাসী সেই ড্যাডি যে আর নেই তা যেন কিছুতেই মানা যাচ্ছে না।
"আমি অভিষেক চট্টোপাধ্যায়" এই ভাব দেখাতেন না কখনওই। বরং শ্যুটিং ফ্লোর থেকে বাইরের জগতে অভিষেক চট্টোপাধ্যায় সবসময় ছিলেন এক দিলখোলা ভালোবাসা উজাড় করে দেওয়া মানুষ। অভিনেত্রী তৃণার (Trina Saha) কথায় উঠে এল সেই ছবি। শ্যুটিং ফ্লোরটাই যেন তাঁর কাছে ছিল এক পরিবার। সেখানে সাদা কালো, উঁচু নিচু কিছুই মানতেন না। "সেটে প্রত্যেকটি মানুষ মিঠু দাকে ভালোবাসত প্রাণ দিয়ে। যে কাকা জামাকাপড় ইস্ত্রি করেন তাঁর সঙ্গে যে ব্যবহার করতেন আমার সঙ্গেও সেই একইরকম ভালো ব্যবহার! এটাই ওনাকে আর পাঁচজনের থেকে আলাদা করে দিত।"
"আমার বিয়ের সিনে আমরা দুজনেই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেলেছিলাম। সত্যি সত্যি কেঁদে ফেলেছিলাম। কারণ ওর পর থেকে আমাদের দুজনের একসঙ্গে সিন কমে যাবে, সেই কষ্টে।" আজ সেই মানুষটাকেই (Abhishek Chatterjee) চির বিদায় জানাতে হবে... জীবনের চিত্রনাট্যে তাঁর যে 'সিন' আর রইল না! মেনে নিতে পারে না 'গুনগুন'। বসন্তের হালকা হাওয়ায় টেকনিশিয়ান্স স্টুডিও যাওয়ার পথে গাড়িতে চোখ ভিজে যায় তৃণার। কান্না যেন থামতেই চায় না আর!
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Abhishek Banerjee, Trina Saha