কলকাতা: বাংলায় ফের ঘাসফুলের জয়জয়কার ৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘মোদি-শাহের অহঙ্কারের পতন হয়েছে ৷ মানুষ ওদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে ৷ এই জয় মানুষের জয়, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র জয়। আমি আমার সমস্ত ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গীদের সমর্থন জানাচ্ছি। যাঁরা আছেন। যাঁরা আমাদের সঙ্গে জুড়তে চান। তাঁদের প্রত্যেককে আমার শুভেচ্ছা।’’
বিধানসভায় তৃণমূল সদস্যদের ৩৩ শতাংশের বেশি মহিলা। বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিত্বেই শুধুমাত্র মহিলাদের গুরুত্ব দেওয়া নয়, বর্তমান এবং আগামী দিনের মহিলা ভোটারদের দিকেও বিশেষ নজর দিয়ে থাকেন রাজ্যের মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম বার ক্ষমতায় আসার পরই কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প ঘোষণা করেন তিনি। রাজ্যে শেষ বিধানসভা ভোটের আগে তাঁর ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প অনেকের কাছেই ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলে স্বীকৃত। এই লোকসভায় লক্ষ্মীর ভাণ্ডার অন্যতম কার্যকরী হয়েছে তৃণমূলের। অন্যদিকে বিজেপির মহিলা মুখ এই রাজ্য থেকে লকেট চ্যাটার্জি ও দেবশ্রী চৌধুরী যারা সাংসদ ছিলেন তারা হেরে গেলেন। শ্রীরুপা মিত্র চৌধুরী ও অগ্নিমিত্রা পাল ফের বিধানসভায় ফিরবেন। রেখা পাত্র ও পিয়া সাহা তারা দু’জনেই হেরে গিয়েছেন। হেরেছেন রাজমাতা অমৃতা রায়।
হারা কেন্দ্রগুলিতে নজর তৃণমূল কংগ্রেসের ৷ কয়েকটি বিধানসভা ভিত্তিক ফলে নজর তৃণমূলের ৷ বিষ্ণুপুর, জলপাইগুড়ি, দুই দিনাজপুরে বিশেষ নজর তৃণমূলের ৷ পারফরম্যান্স খতিয়ে দেখতে ব্লক স্তরের রিপোর্ট চাইল তৃণমূল কংগ্রেস ৷ সাংগঠনিক তালমিলের অভাবেই সেখানে ফল খারাপ হল কিনা তা দেখা হচ্ছে।
রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর হাতে ইস্তফার চিঠি তুলে দেন তিনি। রাষ্ট্রপতি তাঁর ইস্তফা গ্রহণ করেছেন। একই সঙ্গে নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই পদের দায়িত্ব সামলাতে মোদীকে অনুরোধ করেছেন মুর্মু।
সপ্তাহান্তেই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন নরেন্দ্র মোদি ৷ সূত্রের খবর, ৮ জুন, অর্থাৎ আগামী শনিবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে মোদির শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এই নিয়ে তৃতীয় বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসতে চলেছেন মোদি। রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে দেখা করতে এবং পদত্যাগপত্র জমা দিতে ইতিমধ্যেই রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছেছেন মোদি। নিয়ম অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতির কাছে নতুন সরকার গঠনের দাবি জানাবেন তিনি।
তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের কাউন্টিং নিয়ে অভিযোগ। কাউন্টিংয়ে কারচুপির অভিযোগ তৃণমূল নেতৃত্বের। প্রতিবাদে প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য এবং দলের নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কোলাঘাটে গণনা কেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ তৃণমূলের।
ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শেষপর্যন্ত ৭ লক্ষ ১০ হাজার ৯৩০ ভোটে জিতলেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেন, ‘‘আমি ইলেকশন কমিশনের থেকে জানতে চাই কেন প্রধানমন্ত্রী আসার পর বদল হল আইএএস, আইপিএস-দের ? পার্থ জিতেছে এটা পার্থর ক্রেডিট, যারা রোজ রোজ পার্টি চেঞ্জ করে তাদের সাথ মানুষ দেয় না কোনও কারণ ছাড়া। অত্যাচার পরাস্ত হয়েছে আমি খুশি, মোদি সিঙ্গেল মেজরিটি পাইনি আমি খুশি। আমি কি সারাবছর ধরে সিআরপিএফ কে রেখে দেব? আমার কি কলেজ ,বিশ্ববিদ্যালয় খুলবো না। আমরা দেখিয়েছি শান্তিপূর্ণ ভাবে নির্বাচন করতে পারি। যারা যারা এই সরকারকে, সাপোর্ট করবে সরকার করার জন্য তাদের শুধু এইটুকু বলতে পারি ৷ আমরা এনডিএ চাই না, আমরা ইন্ডিয়া চাই। আমরা চাই ইন্ডিয়া টিম লিড করুক ৷ মোদিজি আপনার ম্যাজিক চলে গিয়েছে। আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা চলে গিয়েছে। তাই আপনি পদত্যাগ করুন। মোদিজি আপনার ম্যাজিক চলে গেছে। আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা চলে গেছে। তাই আপনি পদত্যাগ করুন। আরএসএস-কে অনুরোধ করব, বিজেপিতেও কিছু ভাল লোক আছে, সময় মত পরিবর্তন করুন।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘যে অযোধ্যাকে নিয়ে এত কিছু করেছে, সেই অযোধ্যাতেও বিজেপি হেরেছে। এত অহঙ্কার কারোর জন্য ঠিক নয়। তিন মাস ধরে নির্বাচন চলতে পারে না। ডেভলপমেন্টের কাজ হয় না। আমাদের পার্টির যারা হেরেছে তাদের টাকা দিয়ে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমি চাই মোদিজি পদত্যাগ করুক, হোম মিনিস্টার পদত্যাগ করুক। এই জয় ইন্ডিয়ার জয়। দেশের জয়। মোদি যদি ক্ষমতায় না থাকত তাহলে মোদির আসন এর অর্ধেক হতো। আমি কিছু চাই না, আঞ্চলিক রাজ্যগুলোর টাকা কেন্দ্র দিক। ইডি, সিবিআই যে কাজগুলো ওরা করে এই কাজগুলো অবিলম্বে বন্ধ করুক। যদি বন্ধ না করে, তাহলে এমন মুভমেন্ট হবে কেউ আটকাতে পারবে না।
আমি শেয়ার মার্কেট বুঝি না। কাল শেয়ার মার্কেটে কী হয়েছে? আমাদের রাজ্যে সব নেতাকে হুমকি দিয়েছে, সব বিধায়ক, সব কাউন্সিলরকে হুমকি দিয়েছে।দু-তিনজনকে তো টাকা পাঠিয়েছে। যে অযোধ্যাকে নিয়ে এত কিছু করেছে সেই অযোধ্যাতেও বিজেপি হেরেছে। এত অহঙ্কার কারোর জন্য ঠিক নয়।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিহারে ফল আসল নয়। আমি তেজস্বী, উদ্ধব, অখিলেশ, শরদ পাওয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। রাহুলকে এসএমএস দিয়েছি। ওরা যদিও আমার সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করেনি ৷ আমি খুশি মোদি একা ক্ষমতায় আসেননি। ওনার পদত্যাগ করা উচিত। ক্রেডিবিলিটি নষ্ট হয়েছে। নীতিশ আর টিডিপির পায়ে ধরছে। এদের আমি চিনি। ইন্ডিয়া ভাঙতে পারবে না জেতার পরেও ইসি চেষ্টা করছে আসন বাড়াতে। অখিলেশ আমাকে বলেছে সার্টিফিকেট দিচ্ছে না ৷ বিহারে ফল আসল নয়। আমি তেজস্বী, উদ্ধব, অখিলেশ, শরদ পাওয়ারকে ধন্যবাদ জানিয়েছি। রাহুলকে এস এম এস দিয়েছি।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলার মানুষের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। বিজেপির তৈরি করা সমীক্ষা দেখে আমার মনে হয়েছে আমি কি নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছি। প্রশাসনকে অপমান করেছে। ডিএম, আইসি বাতিল করেছে। বিজেপির এক গদ্দার এই সব করেছে। আমি খুশি বাংলার মানুষের রায়ে। সন্দেশখালিতেও জিতেছি। সো কলড হোম মিনিস্টার উত্তরবঙ্গে ওদের মেরুদণ্ড ভেঙে দিয়েছে রাজনৈতিক বদলা নেব, তমলুক ও কাঁথি নিয়ে। সেখানে পর্যবেক্ষককে কাজে লাগিয়ে কী করা হয়েছে। আমি খুশি মোদি একা ক্ষমতায় আসেননি। ওনার পদত্যাগ করা উচিত। ক্রেডিবিলিটি নষ্ট হয়েছে। নীতিশ আর টিডিপির পায়ে ধরছে। এদের আমি চিনি। ইন্ডিয়া ভাঙতে পারবে না ৷’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বাংলার মানুষকে অভিনন্দন জানাবো ২/৩-এরও বেশি আমাদের ভোটের সংখ্যা বেড়েছে। জোর করে হারানো হয়েছে।অবজারভাররা যদি রাজনীতি করেন, দরকার হলে আবার রিকাউন্টিং হবে।তমলুকে যা করেছে, ভিভিপ্যাটে রিকাউন্টিং হলে ওটাও প্রমাণ হয়ে যাবে ৷ কাঁথিতে জিতে যাওয়ার পরও অবজারভার কিছু পলিটিক্স করছে। সব থেকে অত্যাচার বাংলার উপর হয়েছে। সিবিআই,ইডি, বিজেপি-হোম মিনিস্ট্রির অত্যাচার।’’
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিষেক হায়েস্ট ভোটে জিতেছে রেকর্ডের জন্য বাংলার মানুষকে ধন্যবাদ। রিগিং করে কিছু হয় না। দিল্লির এর থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত। এটা অমিত শাহের গুজরাত নয়, কাঁথিতে জেতার পরে বিজেপি পর্যবেক্ষক আটকে রেখে দিয়েছেন জয়ের সার্টিফিকেট ৷’’