PM Modi Exclusive Interview: ‘রাহুল গান্ধির সম্পদ পুনর্বণ্টন আরবান নকশাল চিন্তাধারা’, তৃতীয় দফার ভোটের আগে নিউজ ১৮কে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকার মোদির
- Published by:Satabdi Adhikary
- trending desk
- Reported by:Trending Desk
Last Updated:
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির ‘এক্স-রে’ বা ‘সামাজিক-অর্থনৈতিক সমীক্ষা অর্থাৎ সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মধ্যে সম্পদ পুনর্বন্টন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এটাকে ‘আরবান নকশাল’ চিন্তাধারা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
নয়াদিল্লি: সম্পদ পুনর্বণ্টন এবং উত্তরাধিকার কর নিয়ে তপ্ত ভোটের বাজার। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে লাগাতার তোপ দাগছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে তৃতীয় দফার ভোটের আগে রবিবার নিউজ 18-কে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়ে দিলেন, উত্তরাধিকার কর বাস্তবায়ন করার কোনও পরিকল্পনা বিজেপির নেই।
নেটওয়ার্ক ১৮-এর গ্রুপ এডিটর রাহুল জোশীকে মোদি বলেন, “ওঁদের এক ‘মহাশয়’ আমেরিকায় বসে সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন। সেখান থেকেই উত্তরাধিকার করের বিষয়টা তুলে ধরেন। আপনার সম্পত্তির উপর প্রায় ৫৫ শতাংশ ট্যাক্স। আমি যখন উন্নয়ন ও উত্তরাধিকারের কথা বলছি, ওঁরা তখন উত্তরাধিকার লুট করতে চাইছে। দেশবাসীকে এটা জানানো আমার কর্তব্য যে দেখ, ওঁরা দেশকে কোনদিকে নিয়ে যেতে চায়। এখন আপনি যাবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত আপনার। তবে তথ্য এবং গুরুত্বের ভিত্তিতে আমি দেশবাসীকে সত্যিটা বলব।”
advertisement
উত্তরাধিকার কর নিয়ে বিজেপি কী ভাবছে, তা এদিন স্পষ্ট করে দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাঁর কথায়, “ভারতীয় জনতা পার্টির ভাবনাচিন্তা ইস্তেহারে তুলে ধরা হয়েছে। কিন্তু আমরা ওঁদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করব, এমন চিন্তা আপনার মাথায় এল কী করে? বিজেপির আদর্শ স্পষ্ট। আমরা আমাদের কাজ ও ইস্তেহার নিয়ে দেশের সামনে যাই। অনুগ্রহ করে ওঁদের মহান চিন্তা আমাদের উপর চাপিয়ে দেবেন না।”
advertisement
advertisement
আরও পড়ুন: সাগর থেকে ঢুকবে জলীয় বাষ্প…সঙ্গে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বৃষ্টি! কবে? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল আলিপুর, জেনে নিন আবহাওয়ার লেটেস্ট আপডেট
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান ওভারসিজ কংগ্রেসের চেয়ারম্যান স্যাম পিত্রোদা একটি সাক্ষাৎকারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাধিকার করের ব্যাপক প্রশংসা করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ভারতে এমন কর চালু করা যায় কি না ভেবে দেখা উচিত বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সেই নিয়ে তীব্র বিতর্ক হয়। এমন মন্তব্য লুফে নেয় বিজেপি। পাল্টা তোপ দাগতে শুরু করে। তবে কংগ্রেস পিত্রোদার বক্তব্যকে ব্যক্তিগত মন্তব্য বলে দায় ঝেড়ে ফেলে।
advertisement
প্রসঙ্গত, উত্তরাধিকার কর হল, মৃত ব্যক্তির অর্থ এবং সম্পত্তির মোট মূল্যের উপর ধার্য কর যা আইনি উত্তরাধিকারিদের মধ্যে বিতরণ করার আগে লাগু হয়। ভারতে বর্তমানে এমন কোনও কর নেই।
আরও পড়ুন: মে মাসের শুরুতেই মোদি-মমতার জোড়া সভা! তৃতীয় দফার আগে উত্তাপ বাড়ছে বর্ধমানে
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী কংগ্রেসের ইস্তেহার, দেশের ভবিষ্যৎ এবং বিজেপির নির্বাচনী কৌশল সম্পর্কেও খোলাখুলি মন্তব্য করেছেন। সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকারটি ২৯ এপ্রিল সোমবার রাত ৯টায় নিউজ ১৮ চ্যানেল এবং ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্প্রচার করা হবে।
advertisement
“সম্পদের পুনর্বণ্টন আরবান নকশাল চিন্তাধারা”
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধির ‘এক্স-রে’ বা ‘সামাজিক-অর্থনৈতিক সমীক্ষা অর্থাৎ সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মধ্যে সম্পদ পুনর্বন্টন নিয়ে প্রশ্ন করা হলে এটাকে ‘আরবান নকশাল’ চিন্তাধারা বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
তিনি বলেন, “এক্স রে মানে প্রতিটা বাড়িতে অভিযান চালানো। কোনও মহিলা যদি চালের ঝাঁপিতে সোনা জমিয়ে রাখে সেটাও এক্স রে করা হবে। গয়না বাজেয়াপ্ত করা হবে। জমির দলিল যাচাই-বাছাই করা হবে এবং পুনরায় বিলি বণ্টন করা হবে। এটা পুরোপুরি ‘আরবান নকশাল’ চিন্তাধারা। এমন মাওবাদী মতাদর্শ বিশ্বের কোনও উপকারে লাগেনি।”
advertisement
সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “এই কারণে জামাত, যারা সাধারণত লেখালিখির মাধ্যমে সমর্থন দেয়, তাঁরা কংগ্রেসের ইস্তেহার প্রকাশের ১০ দিন পরেও চুপ করে আছে। এভাবেই ওঁরা সাহায্য করছে। ওঁদের রক্ষা করার জন্যই এই নীরবতা। তাই এখন আমার দায়িত্ব দেশকে জাগিয়ে তোলা যে ওঁরা আপনাকে লুট করার পরিকল্পনা করছে। এর পরের অংশ ড. মনমোহন সিং আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে দেশের সম্পদে প্রথম অধিকার কাদের। ওরা স্পষ্টভাবে নিজেদের উদ্দেশ্য জানিয়ে দিয়েছে।”
advertisement
“কংগ্রেসের ইস্তেহারে মুসলিম লিগের ছাপ রয়েছে”
গ্র্যান্ড ওল্ড পার্টির ইস্তেহারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনের সময় রাজনৈতিক দলগুলির ইস্তেহার কি ‘নিছকই শো-পিস’?
মোদি বলেন, “ইস্তেহার দেখে প্রথম দিনই একথা বলেছিলাম। আমার মনে হয়েছে, এতে মুসলিম লিগের ছাপ রয়েছে। ভেবেছিলাম মিডিয়া অবাক হয়ে যাবে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল, কংগ্রেস যা কিছু পেশ করেছে, তারা সেটাই বলে চলেছে”। সঙ্গে তিনি যোগ করেন, “আমি ১০ দিন অপেক্ষা করেছিলাম। ভেবেছিলা ইস্তেহারের ভুল ত্রুটি নিয়ে কেউ না কেউ বলবে। নিরপেক্ষভাবে বিচার করলে তাই দাঁড়ায়। অবশেষে আমি বাধ্য হয়ে মুখ খুললাম। সত্যিটা সবার সামনে আনলাম”।
“প্রাণবন্ত অর্থনীতি”
গত ১০ বছরে কেন্দ্র সরকার ব্যাঙ্কিং ও অর্থনীতিতে বিপুল সংস্কার করেছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, “আমরা ৫২ কোটি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছি। এর সবচেয়ে বড় সুবিধা আমি নিয়েছি। জন ধন, মোবাইল এবং আধারকে এক সুতোয় বাঁধার ফলে সরকারি প্রকল্পের টাকা সরাসরি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠানো যাচ্ছে। ৩৬ লক্ষ কোটি টাকা, এটা কিন্তু বিশাল বড় সংখ্যা, মানুষের অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে (ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের মাধ্যমে)। আমাদের দেশে এই বিশাল আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ঘটেছে (অ্যাকাউন্ট খোলার কারণে)। এই সংখ্যাটা এক বছরে বিশ্বে যত অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তার চেয়ে বেশি। আমরা জল জীবন মিশন চালু করেছি। ভারতের গ্রামীণ এলাকার মানুষ সরাসরি কলের মাধ্যমে জল পাবে, শহুরে এলাকাতেও। আজ ১৪ কোটি গ্রামীণ পরিবারে কলের জল পৌঁছেছে।”
প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, উন্নয়নমূলক কাজই ২৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র থেকে বের করে এনেছে। তাঁর কথায়, “আমরা দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন করেছি। আমার কৌশল হল, গরিব, দুঃস্থ মানুষকে এতটা শক্তি দাও, এতটাই শক্তি দাও যাতে দরিদ্ররা নিজেরাই দারিদ্র্য কাটিয়ে উঠতে পারে। আর দরিদ্র যখন কঠোর পরিশ্রমে দারিদ্রকে জয় করে, তখন সে আর ওই দিকে ফিরে যেতে চায় না। এটাও একটা অঙ্গীকার এবং তাঁরা দেশের শক্তিতে পরিণত হয়।”
তিনি যোগ করেন, “আজ ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্র থেকে বেরিয়ে আসায় গোটা দেশ উপকৃত হচ্ছে। এটা বড় অর্জন। গোটা বিশ্ব এর প্রশংসা করছে। উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য এটা মডেল হয়ে উঠবে। ২০১৪ সালের আগে কী অবস্থা ছিল নিশ্চয় দেখেছেন। ‘ফ্র্যাজাইল ৫’ শিরোনাম হত। আজ আমরা প্রাণবন্ত অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছি।”
প্রধানমন্ত্রী একাধিক পরিসংখ্যান দিয়ে দেশের অর্থনীতির চিত্র দেশবাসীর সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। সেই সময়ই তিনি জানান, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলে (আইএমএফ) বিশ্বের ১৫০টি দেশের গ্রুপ রয়েছে, যারা মধ্যে ভারত এবং চিনও আছে, যাদের উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ বা উদীয়মান অর্থনীতির দেশ বলা যেতে পারে।
মোদি বলেন, “এই ধরনের দেশগুলিকে একটি গোষ্ঠীতে ধরে ওরা বিশ্লেষণ করেছে। খুব আকর্ষণীয়। ১৯৯৮ সালে ভারতের মাথাপিছু জিডিপি ছিল প্রায় ৩০ শতাংশ, পিয়ার গ্রুপের অন্যদের তুলনায়। সেই সময় অটলজির সরকার ক্ষমতায় ছিল। ১৯৯৮ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অটলজি এই সংখ্যাটাকে ৩০ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশে নিয়ে গিয়েছিলেন। দুর্দান্ত অগ্রগতি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০৪ সালে খিচড়ি সরকার আসে। তারা অটলজির কাজে জল ঢেলে দেয়। সংখ্যাটা ৩৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনে। অন্যান্য দেশ (পিয়ার গ্রুপে) ভারতের চেয়ে ভাল পারফর্ম করতে শুরু করে। ইউপিএ জামানায়, উন্নয়নশীল বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারত দারিদ্র বাড়ে। আমাদের চেয়ে যারা গরিব ছিল, তারা এগিয়ে যায়।”
এরপর বর্তমান সরকারের কাজ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “২০১৪ সালে সরকার গঠনের পর, ২০১৯ পর্যন্ত, আপনি জেনে খুশি হবেন যে আমরা এউ সংখ্যাটা ৩৭ শতাংশে নিয়ে গিয়েছি। এবং ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটা ৪২ শতাংশ। অর্থাৎ বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের আয় খুব দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। দশ বছরের মূল্যস্ফীতির হার দেখলে মূল্যস্ফীতি সর্বনিম্ন দেখা যাবে। যা বলছি বাস্তবতার ভিত্তিতে বলছি। অনেক পরিশ্রমের পর আমাদের এই অর্জন। আমরা পুরো সরকারকে একত্রিত করেছি এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছি। এরপরেও মোদি কী বলছেন? মোদি বলছেন, এটা শুধু ট্রেলার, আরও অনেকটা পথ যেতে হবে। দেশকে সঙ্গে নিয়ে আমি খুব দ্রুত এগোতে চাই।”
“বেঙ্গালুরু: টেক হাব থেকে ট্যাঙ্কার হাব”
রাজ্য রাজনীতির বিভিন্ন দিক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কংগ্রেসকে ক্ষমতায় আনার জন্য কর্নাটকের জনগণ আফশোস করছে।
মোদির কথায়, “আমাদের জনসমর্থন কমেনি, বরং বেড়েছে। এত অল্প সময়ে মুখ্যমন্ত্রী পদের মতো অমীংসিত সমস্যা এখনও তাঁদের রয়েছে। একজন মুখ্যমন্ত্রী শপথ নিয়েছেন ঠিকই, কিন্তু রাজ্য কে চালাচ্ছে তা কেউ জানে না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখা যাবে, দাঙ্গাহাঙ্গামা, খুনখারাবির মতো ঘটনা বেড়েছে। অর্থনীতি দেউলিয়া হতে বসেছে। ডেপুটি সিএম তাঁর ভাইয়ের জন্য ভোট চাইছেন, যাতে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন। সবাই গেম খেলছে। বিজেপি সম্পর্কে বললে, আমার দল হেরেছে, কিন্তু আমরা দলগত মনোভাব নিয়ে কাজ করেছি।”
কর্ণাটকবাসীর জলকষ্ট নিয়েও কংগ্রেস সরকারকে একহাত নেন মোদি। রাজ্য সরকারের অক্ষমতার দিকে আঙুল তুলে তিনি বলেন, “সারা বিশ্বে ভারতের নাম উজ্জ্বল করতে বড় ভূমিকা নিয়েছে বেঙ্গালুরু। একটা সময় টেক হাব হিসেবে এর পরিচিতি ছিল। এখন অল্প সময়ের মধ্যেই ট্যাঙ্কার হাবে পরিণত হয়েছে। ট্যাঙ্কারও মাফিয়াদের দখলে। মানুষ একফোঁটা জলের জন্য প্রাণপাত করছেন।”
Location :
New Delhi,New Delhi,Delhi
First Published :
April 29, 2024 11:47 AM IST