'টেস্টিং ছাড়া লকডাউন আসলে গুলি ছাড়া বন্দুক', প্রতিক্রিয়া চিকিৎসক কুণাল সরকারের
- Published by:Debamoy Ghosh
- news18 bangla
Last Updated:
লকডাউন সফল করতে শুধুমাত্র পুলিশকে ব্যবহার করে মানুষকে ঘরে আটকে রাখার চেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকর কুণাল সরকার৷
কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি অনুযায়ী দেশে টেস্ট কিটের অভাব নেই৷ দ্রুত রোগ নির্ণয়ের জন্য বাড়ানোর হয়েছে পরীক্ষাগারের সংস্থাও৷ তার পরেও দেশে করোনার নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা মাত্র পনেরো থেকে কুড়ি শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে! সরকারি এই পরিসংখ্যানেই আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকার৷ শুধুমাত্র লকডাউন চালিয়ে এবং হটস্পট চিহ্নিত করেই যে করোনা সংক্রমণ রোখা যাবে না, তা মনে করিয়ে দিয়েছেন কুণালবাবু৷ আক্রান্তদের চিহ্নিত না করে শুধুমাত্র লকডাউন কার্যকর করলে যে কোনও লাভ হবে না, তা মনে করিয়ে দিয়ে ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, 'নমুনা পরীক্ষা না করে শুধু লকডাউন চালিয়ে যাওয়া আসলে গুলি ছাড়া বন্দুকের মতো৷'
আইসিএমআর-এর তথ্য উদ্ধৃত করে কুণালবাবু জানিয়েছেন, ১২ এপ্রিল পর্যন্ত গোটা দেশে ১,৮১,০২৬ জন সন্দেহভাজন করোনা আক্রান্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে৷ মোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লক্ষ ৯৫ হাজারের কিছু বেশি৷ উদ্বেগ প্রকাশ করে কুণালবাবু বলেন, '১৩৫ কোটির দেশে এখনও ২ লক্ষ মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা গেল না? সারা দেশে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা করা হচ্ছে৷ আমাদের রাজ্যে তা আরও কমছে৷ নাইসেডে নমুনার সংখ্যা বাড়ার বদলে প্রতিদিন কমছে৷ এভাবে চলতে থাকলে তো আমাদের দেশে বা রাজ্যে কী হারে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা বোঝাই সম্ভব হবে না৷ এর কোনও একটা উপায় সরকারকে খুঁজে বের করতেই হবে৷'
advertisement
লকডাউন সফল করতে শুধুমাত্র পুলিশকে ব্যবহার করে মানুষকে ঘরে আটকে রাখার চেষ্টা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকর কুণাল সরকার৷ তাঁর মতে লকডাউনের সময় পুলিশের থেকেও বেশি করে মানুষের নমুনা পরীক্ষার জন্য প্যাথোলজিস্ট এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ব্যবহার করতে হবে৷ তা না হলে হটস্পট চিহ্নিত করে গোটা এলাকা ঘিরে রাখলেও কাজের কাজ হবে না বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কুণালবাবু৷ নমুনা পরীক্ষা করার উপরে জোর না দিলে একবার লকডাউন উঠে গেলে সংক্রমিত বহু মানুষ ভিড়ের মধ্যে মিশে যাবেন বলেও সতর্ক করেছেন ওই চিকিৎসক৷ যার জেরে ভারতেও আমেরিকা, স্পেন, ইতালির মতো ছবি দেখতে হতে পারে৷
advertisement
advertisement
কুণালবাবু সবথেকে বেশি চিন্তিত এ দেশের চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের শারীরিক নিরাপত্ত নিয়ে৷ তাঁর অভিযোগ, এমনিতেই ভারতে পরীক্ষা করার হার কম৷ তার উপরে চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার দিকটিও উপেক্ষিত হচ্ছে৷ কারণ, চিকিৎসকদের সুরক্ষার জন্য ভাল গুণমানের সরঞ্জামের অভাব রয়েছে অধিকাংশ হাসপাতালে৷ কোনও সন্দেহভাজন রোগীর করোনা পরীক্ষা করালে রিপোর্ট আসতে দু' থেকে আড়াই দিন লেগে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুণালবাবু৷ সেই সময়ের মধ্যে সংশ্লিষ্ট রোগীর সংস্পর্শে এসে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং হাসপাতালের অন্যান্য রোগীদের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা আরও বাড়ছে৷ এ রকম সংক্রমণের কারণেই ভিআইপি রোডের চার্ণক হাসপাতাল বন্ধ করে দিতে হয়েছে৷ কুণালবাবুর আশঙ্কা, এভাবে চলতে থাকলে দিন পনেরোর মধ্যে আরও অনেক হাসপাতালই বন্ধ করে দিতে হবে৷
advertisement
চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করে কুণালবাবু বলেন, 'এই কারণেই আমাদের দেশে তুলনামূলকভাবে বেশি চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন৷ আমেরিকা, ইউরোপের তুলনায় আমাদের দেশের জনসংখ্যা তরুণ প্রজন্মের মানুষ অনেক বেশি৷ ফলে এ দেশে চল্লিশ বছরের আশেপাশে অনেক চিকিৎসকই আক্রান্ত হচ্ছেন৷ আর এই চিকিৎসকদের থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যেও রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বাড়বে৷'
view commentsLocation :
First Published :
April 13, 2020 2:59 PM IST
বাংলা খবর/ খবর/করোনা ভাইরাস/
'টেস্টিং ছাড়া লকডাউন আসলে গুলি ছাড়া বন্দুক', প্রতিক্রিয়া চিকিৎসক কুণাল সরকারের

