হোম /খবর /কলকাতা /
কল্পতরু উৎসবে বন্ধ থাকছে কাশীপুর উদ্যানবাটী, ৭৪ বছরে প্রথমবার মঠ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত

কল্পতরু উৎসবে বন্ধ থাকছে কাশীপুর উদ্যানবাটী, ৭৪ বছরে প্রথমবার মঠ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত

কাশীপুর উদ্যানবাটী (ফাইল ছবি)

কাশীপুর উদ্যানবাটী (ফাইল ছবি)

১৯৪৬ সাল থেকে কাশীপুর উদ্যানবাটীতে পালন হয়ে আসছে কল্পতরু উৎসব। ২০২২ সালে ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। এর আগে কল্পতরু উৎসবে কখনও কাশীপুর উদ্যানবাটী বন্ধ রাখা হয়নি।

  • Last Updated :
  • Share this:

#কাশীপুর: ৭৪ বছরে এই প্রথমবার। কল্পতরু উৎসবে বন্ধ থাকতে চলেছে কাশীপুর উদ্যানবাটী। করোনা পরিস্থিতির জেরে সমস্ত ভক্ত, দর্শনার্থীদের জন্য কল্পতরু উৎসবের সময় কাশীপুর উদ্যানবাটী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। পয়লা জানুয়ারি থেকে তেশরা জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ থাকবে উদ্যানবাটীর ফটক। অতি মহামারী সময় ভিড় এড়াতে এই সিদ্ধান্ত কর্তৃপক্ষের। ১৯৪৬ সাল থেকে কাশীপুর উদ্যানবাটীতে পালন হয়ে আসছে কল্পতরু উৎসব। ২০২২ সালে ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। এর আগে কল্পতরু উৎসবে কখনও কাশীপুর উদ্যানবাটী বন্ধ রাখা হয়নি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে উৎসবে সময় মঠের মূল ফটক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

তবে লক্ষ লক্ষ ভক্তের কথা মাথায় রেখে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাশীপুর উদ্যানবাটী মূল ফটক বন্ধ থাকলেও শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ঠাকুরের সমস্ত পূজা আয়োজিত হবে কল্পতরু উৎসব। শ্রী শ্রী ঠাকুরের পুজো, হোম-যজ্ঞ সব কিছু নিয়ম মেনেই আয়োজিত হবে। কল্পতরু উৎসব সরাসরি সম্প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। কল্পতরু উৎসবে কাশীপুর মঠের ওয়েবসাইট এবং ইউটিউব চ্যানেলে শ্রী শ্রী রামকৃষ্ণ ঠাকুরের সমস্ত পুজো, হোম-যজ্ঞ সরাসরি দেখানো হবে।                অনুষ্ঠানসূচি ভোর সাড়ে চার'টে মঙ্গলারতি সকাল সাতটায় শ্রী শ্রী ঠাকুরের বিশেষ পুজো, সকাল দশটায় শ্রী শ্রী ঠাকুরের হোম, সকাল সাড়ে সাত'টা থেকে বারো'টা পর্যন্ত শ্রী শ্রী ঠাকুরের ঘরের নীচের ঘরে ভক্তিগীতি পাঠ আয়োজন।

সন্ধ্যে পাঁচ'টা কুড়ি মিনিটে শ্রী শ্রী ঠাকুরের আরতী এবং তারপর ভজন আয়োজিত হবে। প্রত্যেকবারের মতো নিয়ম মেনে কল্পতরু উৎসব পালন হলেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বন্ধ রাখা হচ্ছে এই বছর। মোট তিন দিন বন্ধ থাকবে কাশীপুর উদ্যানবাটী।             কল্পতরু উৎসব কী? ১৮৮৬ সালের ১ জানুয়ারি প্রথম কল্পতরু উৎসবের দিনটি রামকৃষ্ণ পরমহংস ও তাঁর অনুগামীদের জীবনে ছিল এক অভূতপূর্ব তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা। রামকৃষ্ণ পরমহংস সেই সময় দুরারোগ্য গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং তাঁর শারীরিক অবস্থারও যথেষ্ট অবনতি ঘটেছিল। উত্তর কলকাতার কাশীপুর অঞ্চলের একটি বাগানবাড়িতে চিকিৎসার সুবিধার জন্য তাঁকে নিয়ে আসা হয়েছিল। ১ জানুয়ারি একটু সুস্থ বোধ করায় তিনি বাগানে হাঁটতে বেরিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর অনুগামী নাট্যকার গিরিশচন্দ্র ঘোষকে জিজ্ঞাসা করেন, "তোমার কি মনে হয়, আমি কে?"

গিরিশচন্দ্র বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে রামকৃষ্ণ পরমহংস "মানবকল্যাণের জন্য মর্ত্যে অবতীর্ণ ঈশ্বরের অবতার।" রামকৃষ্ণ পরমহংস বলে, "আমি আর কি বলব? তোমাদের চৈতন্য হোক।" এরপর তিনি সমাধিস্থ হয়ে তাঁর প্রত্যেক শিষ্যকে স্পর্শ করেন। রামকৃষ্ণ-অনুগামীদের মতে, তাঁর স্পর্শে সেদিন প্রত্যেকের অদ্ভুত কিছু আধ্যাত্মিক অনুভূতি হয়েছিল।রামকৃষ্ণ পরমহংসের অন্যতম শিষ্য রামচন্দ্র দত্ত ব্যাখ্যা করে বলেছিলেন, সেই দিন রামকৃষ্ণ পরমহংস হিন্দু পুরাণে বর্ণিত কল্পতরুতে পরিণত হয়েছিলেন। তিনিই এই দিনটিকে কল্পতরু দিবস নাম দিয়েছিলেন, যা পরে কল্পতরু উৎসব নামে পরিণত হয়েছিল।

ERON ROY BURMAN

Published by:Shubhagata Dey
First published:

Tags: Coronavirus, Kalpataru Utsav, Kashipur