Cooch Behar: অদ্ভুত! গ্রামের নাম জড়িয়ে রয়েছে সে গ্রামের মানুষের জীবিকার সঙ্গে
- Published by:Ananya Chakraborty
Last Updated:
কোচবিহারের ভেটাগুড়ির প্রত্যন্ত এক গ্রাম। অবাক লাগলেও সত্যি এটাই এই গ্রামের নাম শোলা গ্রাম। যে গ্রামের নাম জড়িয়ে রয়েছে সে গ্রামের মানুষের জীবীকার সঙ্গে।
#কোচবিহার : কোচবিহারের ভেটাগুড়ির প্রত্যন্ত এক গ্রাম। অবাক লাগলেও সত্যি এটাই এই গ্রামের নাম শোলা গ্রাম। যে গ্রামের নাম জড়িয়ে রয়েছে সে গ্রামের মানুষের জীবীকার সঙ্গে। এই গ্রামে বসবাস করে প্রায় ৫০ টা পরিবার। তাদের রুজি রুটির মূল উৎস হলো শোলার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি। দীর্ঘদিন ধরে এই গ্রামের প্রত্যেকটি পরিবার শোলার জিনিস বানিয়ে নিজেদের জীবনধারণ করে আসছেন। তাদের ব্যবহৃত এই শোলা আসে মূলত আসামের কিছু অংশ থেকে। তারা এই শোলা দিয়ে তৈরি করেন বর-বউয়ের মুকুট, বিয়ের মালা, ঠাকুরের মালা, এবং নানা ঠাকুর দেবতার মূর্তি। একটা সময় ছিল যখন এইসব জিনিসের চাহিদা ছিল অনেক। ঠাকুর সাজানো থেকে শুরু করে বিয়ের বর কণে সবেতেই লাগত তাঁদের হাতের কাজের এই অসাধারণ সুন্দর দেখতে সামগ্রী।
কিন্তু সেসব এখন অতীত! প্লাস্টিক আর অন্য কাঁচামালের দাপটে অনেকটাই স্তিমিত এই শোলার কাজ। এই গ্রামের এক বাসিন্দা মনভোলা বর্মন জানান, "এই গ্রামে মোট ৪০ থেকে ৫০ টি পরিবার বসবাস করে। এরা মূলত এই শোলার জিনিসপত্র বানিয়েই নিজেদের জীবন যাপন করছে।" এছাড়া চন্দনা বর্মণ বলেন, "যত দিন যাচ্ছে ততই মানুষজন এই শোলার তৈরি জিনিসপত্র ব্যবহার করতে অনিহা প্রকাশ করছে। তাই আমাদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। মানুষেরা যদি এই জিনিস গুলি না কেনেন, তবে কি করে আমরা সংসার চালাব।"
advertisement
advertisement
এই গ্রামে বিদ্যুত এবং টেলিফোনের সুযোগ সুবিধা রয়েছে। তবুও এই গ্রামের অস্তিত্ব গুগোল ম্যাপে খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে অসুবিধার মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করতে হচ্ছে এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের। তারা যে সমস্ত শোলার তৈরি জিনিসপত্র বানান। সেগুলির চাহিদা ধীরে ধীরে কমে আসছে। বর্তমানে আর এগুলি খুব একটা ব্যবহার করতে দেখা যায় না সাধারণ মানুষকে। করোনার সময় লকডাউনের কারণে এই গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দারা বিপদের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাদের ব্যবহৃত শোলা আসে আসাম থেকে। তবে করোনার কারণে এই শোলা আসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
advertisement
আরও পড়ুনঃ পরিযায়ী শ্রমিকের অস্বাভাবিক মৃত্যু, বাড়ছে রহস্য!
এছাড়া তাদের বানানো জিনিসপত্র বিক্রি করতে প্রচুর সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছিল। মহামারীর দাপট কমেছে কিছুটা। তাই কিছুটা হলেও আশায় বুক বঁধছেন এই শিল্পীরা। দিনরাত এক করে বানিয়ে চলেছেন তাঁদের শিল্পকর্ম। এই গ্রামের বাসিন্দারা উত্তরবঙ্গের প্রাচীন রীতিনীতি বজায় রেখে শোলা দিয়ে বিভিন্ন ঠাকুর দেবতার মূর্তি তৈরি করেন।
advertisement
রাজবংশী সমাজে এই ধরনের শোলার মূর্তি দিয়ে পুজোপার্বণ করার রীতি রয়েছে। তাই এখনো পর্যন্ত এই শোলার ঠাকুর বিক্রি হয় কোচবিহারের বিভিন্ন গ্রামে গঞ্জে। ধুঁকতে ধুঁকতেই নিজেদের এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন তাঁরা। হবে পেটের ভাতের জোগাড় সঙ্গে বাঁচবে এই শিল্প, এই আশা এখনও তাঁদের তাড়া করে বেড়ায়।
advertisement
Sarthak Pandit
Location :
First Published :
August 27, 2022 8:01 PM IST