আরইআরএ বা রেরা আইন কী? দেখে নিন এই আইনের বৈশিষ্ট্যগুলি

Last Updated:

দেখে নিন কী কী আছে রেরা-তে--

#নয়াদিল্লি: একটা সময় ছিল, যখন বাড়ি তৈরিতে প্রোমোটার বা নির্মাতার কথাই ছিল শেষ কথা। তাই অধিকাংশ ক্ষেত্রেই হয়রানির শিকার হতে হতো ক্রেতাকে। গাঁটের কড়ি খরচা করেও সঠিক সময়ে মিলতো না ফ্ল্যাট। আবার ভাগ্যক্রমে তা মিললেও চুক্তির সব শর্ত পূরণ করতো না প্রোমোটাররা। তখন ছুটতে হত আদালতে। সময় ও বাড়তি অর্থ-- এই দুইই বেরিয়ে যেতো জলের মতো। অর্থাৎ বাড়ি কিনতে গিয়ে রক্ত জল করা পয়সা খরচ করেও নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হতো ক্রেতাকে। এই সব হয়রানির হাত থেকে মুক্তি দিতেই ২০১৬ সালের ১০ মার্চ সংসদে রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি বা রেরা আইন পাশ করে কেন্দ্রীয় সরকার। বাড়ি অথবা ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের স্বার্থরক্ষার জন্য ২০১৭ সালের ১ মে থেকে সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলে লাগু হয় এই আইন।
রিয়েল এস্টেটের লেনদেনে নিয়ন্ত্রণ এবং স্বচ্ছতা বাড়াতেই রেরা আইন লাগু করা হয়েছে। এ বার দেখে নেওয়া যাক, এই আইনের বৈশিষ্ট্যগুলি--
advertisement
  • রেরা আইনের আওতায় আবাসন প্রকল্পগুলি দেখভাল, সমস্যা থাকলে তা মেটানো এবং ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষা করতে সব রাজ্যে রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটি স্থাপন করা হয়েছে।
  • advertisement
  • সমস্ত আবাসন প্রকল্পগুলিকে রেরা আইনে রেজিস্টার করা বাধ্যতামূলক। যদি নির্দিষ্ট গাইডলাইন না-মানা হয়, তা হলে প্রকল্পের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করতে পারেন কর্তৃপক্ষ।
  • প্রোমোটার এবং ক্রেতার বিরোধ মেটাতে ফার্স্ট ট্র্যাক ব্যবস্থা। ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দ্রুত তার নিষ্পত্তি করা হবে।
  • যদি প্রোমোটার প্রকল্পের স্বত্ব কোনও তৃতীয় পক্ষের হাতে তুলে দিতে চান, তা হলে রিয়েল এস্টেট রেগুলেটরি অথরিটির লিখিত অনুমতির পাশাপাশি দুই-তৃতীয়াংশ ক্রেতার লিখিত সম্মতির প্রয়োজন।
  • advertisement
  • ফ্ল্যাট বা বাড়ির দখল নেওয়ার সময় যদি মালিকানায় গরমিল থাকে, তবে ক্রেতাকে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। আর এ ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের কোনও ঊর্ধবসীমা নেই। একই সঙ্গে ক্রেতা যদি প্রোমোটারকে টাকা দিতে দেরি করেন, তা হলে যে অঙ্কের সুদ গুনতে হতো, সময়ে ফ্ল্যাটের অধিকার না-দিতে পারলে, ক্রেতাদের সেই সুদ ক্ষতিপূরণ হিসেবে দিতে হয় প্রোমোটারদের। আগে প্রোমোটারদের ক্ষেত্রে এই সুদের পরিমাণ কম ছিল। নতুন রেরা আইনে ক্রেতা এবং প্রোমোটারের সুদের হার সমান।
  • advertisement
  • যদি নির্মাতার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠে, তা হলে তদন্ত চলাকালীন প্রোমোটারকে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিতে পারে রেরা।
  • রেরা-র কোনও সিদ্ধান্তে যদি ক্রেতা সন্তুষ্ট না হন, তা হলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।
  • প্রোমোটার বা নির্মাতা যদি রেরা-র নির্দেশ না-মানেন, তা হলে জরিমানা দিতে হবে। প্রকল্পের খরচের ৫ শতাংশ অর্থ জরিমানা হিসেবে কাটার বিধান আছে এই আইনে।
  • advertisement
  • চুক্তি অগ্রাহ্য করলে অথবা আদালতের নির্দেশ না-মানলে প্রোমোটারের তিন বছরের জেল পর্যন্ত হতে পারে। শুধু তা-ই নয়, মোট প্রকল্পের খরচের ১০ শতাংশ জরিমানাও দিতে হবে। এমনকী জেল ও জরিমানা দুটোই হতে পারে।
  • যদি রেরা আইনের আওতায় কোনও সংস্থা অপরাধ করে, তা হলে অপরাধ সংঘটিত হওয়ার সময় যে ব্যক্তি বা কোম্পানি ব্যবসার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁদেরকেও দোষী হিসেবে ধরা হবে এবং শাস্তি দেওয়া হবে।
  • advertisement
  • রেরা বা ট্রাইব্যুনালের আওতায় আসা বিষয়ে কোনও দেওয়ানি আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। একই ভাবে রেরা বা ট্রাইব্যুনালের নেওয়া কোনও সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপের উপর কোনও আদালত কোনও নির্দেশ বা স্থগিতাদেশ জারি করতে পারবে না।   
  • advertisement
    এ বার দেখে নেওয়া যাক, কী কী আছে রেরা-তে--
    নিরাপত্তা: 
    বেশির ভাগ প্রোমোটার একই সময় একাধিক প্রকল্প হাতে নেন। এক প্রকল্পের টাকা অন্য প্রকল্পে খরচও করেন। এতে কোনও প্রকল্প ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে কোনও প্রকল্প শেষ না-হলে ফ্ল্যাট বা আবাসন পেতে সমস্যা হয় ক্রেতাদের। কিন্তু রেরা আইনের ক্ষেত্রে এমনটা চলবে না। প্রকল্পের ৭০ শতাংশ টাকা পৃথক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হবে। ইঞ্জিনিয়র, চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বা আর্কিটেক্ট অনুমতি দিলে, সেই টাকা তুলতে পারবেন প্রোমোটার। ফলে একটি প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চয়তা থাকে। ক্রেতারাও নিরাপত্তা পান।
    স্বচ্ছতা:
    সমস্ত প্রকল্পের মূল নথি জমা রাখতে হয় নির্মাতাদের। ক্রেতার সম্মতি ছাড়া আবাসনের নকশায় কোনও বদল করা যায় না।
    সততা:
    সুপার বিল্ড-আপ এরিয়া নয়, রেরা আইনে কার্পেট এরিয়ার উপর ভিত্তি করেই সম্পত্তি বিক্রি করতে হবে। যদি প্রকল্প শেষ হতে দেরি হয়, তা হলে ক্রেতা তাঁর বিনিয়োগ করা সম্পূর্ণ অর্থ ফেরত পাবেন।
    গুণমান:
    পাঁচ বছরের মধ্যে ফ্ল্যাটে যদি গুণমানে সমস্যা দেখা যায় বা কাঠামোগত ত্রুটি থাকে, তবে ৩০ দিনের মধ্যে নির্মাতাকে তা মেরামত করে দিতে হবে।
    ক্ষমতা প্রদান:
    রেরা-র রেজিস্ট্রেশন ছাড়া প্রকল্পের কাজ শুরু, বিনিয়োগ, বিজ্ঞাপন অথবা বিক্রি করা যায় না। এর জন্য রেরা-র স্বতন্ত্র নম্বর লাগবে। রেজিস্ট্রেশনের পরই তা মিলবে।
    বাংলা খবর/ খবর/ব্যবসা-বাণিজ্য/
    আরইআরএ বা রেরা আইন কী? দেখে নিন এই আইনের বৈশিষ্ট্যগুলি
    Next Article
    advertisement
    পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! তারপরেই, এই এলাকার পুজোর থিম দেখলে অবাক হবেন!
    পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্লাব এর সদস্যর এক আত্মীয়র! অন্যরকম থিম এই এলাকায়
    VIEW MORE
    advertisement
    advertisement