নয়াদিল্লি: যে কোনও মানুষের আর্থিক সাফল্যের পিছনে থাকে সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত। সদ্য কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হয়েছে সংসদে। হাতে প্রায় গোটা বছরটা পড়ে রয়েছে। ফলে এই বছর কোন খাতে বিনিয়োগ করাটা বুদ্ধিমানের কাজ তা ভেবে নিতে হবে।
তবে বিনিয়োগ করার আগে নিজেকেই বুঝে নিতে হবে কতটা ঝুঁকি নেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। সেই সঙ্গে ভাবতে হবে নিজের ইচ্ছের কথাও। আসলে ভয় বা প্রলোভন— কোনটাই বিনিয়োগের জন্য ভাল নয়। এতে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, বিশেষত চরম অস্থিরতার সময়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাজার অস্থিরতার সময় এমন স্টক বেছে নেওয়া উচিত, যার একটি পোর্টফোলিও বিভিন্ন সেক্টর জুড়ে কাজ করে। অথবা, মিউচুয়াল ফান্ডের একটি পোর্টফোলিও যা বিভিন্ন ফান্ড হাউসের বিভিন্ন স্কিম জুড়ে কাজ করছে। এতে বিনিয়োগকারী প্রয়োজনীয় স্থিতিশীলতা পেতে পারেন।
বেশিরভাগ অর্থনীতি বিশেষজ্ঞই মনে করছেন ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং উচ্চ সুদের হারের কারণে ২০২৩ সালেও বাজার অস্থির থাকবে। ফলে আপদকালীন সম্পদ সরিয়ে রেখে বাকিটা সোনা এবং ইক্যুইটিতে মিশ্র ভাবে বিনিয়োগ করলে বাজারের অস্থিরতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
সেক্ষেত্রে এক বছরের খরচ হিসেবে আপদকালীন সম্পদ সরিয়ে রেখে ২০:৮০ অনুপাতে ইক্যুইটি ও সোনায় বিনিয়োগ করা যায়।
আরও পড়ুন: আপনার হাতের স্মার্টফোনে কতগুলো সেন্সর একসঙ্গে কাজ করে জানেন?
ইক্যুইটি বেছে নেওয়ার জন্য, সংস্থাটির মৌলিক বিষয়, ভবিষ্যতের প্রাসঙ্গিকতা এবং এর স্বতন্ত্রতার বিষয়ে নজর রাখা জরুরি।
সেক্ষেত্রে ঋণ হোক বা ইক্যুইটি, নির্দিষ্ট কিছু নথি, যেমন সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদন থেকেই গুরুত্বপূর্ণ আর্থিক তথ্য এবং ঝুঁকি প্রকাশিত হতে পারে। দেখে নিতে হবে ওই সংস্থার ব্যবস্থাপনা দক্ষ কি না, কার্যপ্রণালী স্থিতিশীল এবং এর ট্র্যাক রেকর্ড আশাব্যঞ্জক কি না।
তবে যাঁরা খুবই রক্ষণশীল ভাবে বিনিয়োগ করতে চান, তাঁরাও এবার কিছু সুযোগ পেতে পারে। কারণ, বাজেটের পর ব্যাঙ্কগুলি প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে স্থায়ী আমানতের (এফডি) সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হবে। পাশাপাশি এবারের বাজেটে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী ‘মহিলা সম্মান সঞ্চয় শংসাপত্র’ নামে একটি নতুন সঞ্চয় পরিকল্পনা করেছেন। এতে দুই বছরের মেয়াদে প্রতি বছর ৭.৫ শতাংশ সুদ দেওয়া হয়েছে।
আবার অনেকেই মনে করছেন, স্থির আয়ের বিনিয়োগে উচ্চতর রিটার্ন চাইলে এই বছর ঋণ তহবিল বা ডেট ফান্ড ভাল ফল দিতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ডেট ফান্ড আবার ফিরবে। প্রথাগত ফিক্সড ডিপোজিটের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি রিটার্ন দিতেও পারবে। কারণ মুদ্রাস্ফীতি এবং সুদের হার বৃদ্ধি খানিকটা স্থিতিশীল হবে।
আরও পড়ুন - পুরুষের পর্দাফাঁস! Facebook-এর এই গ্রুপে ‘ডার্টি সিক্রেট চালাচালি’ করেন মেয়েরা
অবসরপ্রাপ্তরা সিটিজেন সেভিংস স্কিম এবং পোস্ট অফিস মান্থলি ইনকাম স্কিমের মতো প্রকল্পে নাম লেখাতে পারেন।
তবে নিয়মিত আয় করতে চাইলে মিউচুয়াল ফান্ডই সেরা বাজি।
ইক্যুইটির জন্য যেমন সংস্থার ইতিহাস, দৃষ্টিভঙ্গি এবং ব্যবস্থাপনার গুণাবলী, কর্পোরেট গভর্নেন্স, ব্যবসায়িক মডেল, প্রতিযোগিতা এবং ব্যবসার সুযোগ খতিয়ে দেখা দরকার। তেমনই মিউচুয়াল ফান্ডের জন্য ফান্ড হাউসের গ্রুপ, ফান্ড ম্যানেজারের যোগ্যতা এবং অভিজ্ঞতা, বাজার জুড়ে তার পারফরমেন্সের ইতিহাস, ঝুঁকি ও ব্যয়ের অনুপাত এবং উল্লিখিত বিনিয়োগ উদ্দেশ্য মেনে চলা হয় কি না, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
গুরুতর আর্থিক ঝুঁকি কমানোর জন্য, বৈচিত্রপূর্ণ পোর্টফোলিও সম্বলিত বিনিয়োগের কথা ভাবা দরকার।
বাজার অনুকূল থাকলে একটি সম্পদ শ্রেণি ভাল ফল করবে, অন্যটি সেক্ষেত্রে গড়পরতা বা খারাপ ফল করবে। তাই বিনিয়োগকারী একাধিক সম্পদ শ্রেণিতে বিনিয়োগ করলে অর্থ হারানোর সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারবেন।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Debt, Equity, Gold, Mutual Fund