মাধব দাস, বীরভূম : একজন আইনজীবী আর অন্যজন শিক্ষিকা। দীর্ঘদিন ধরেই তাদের মধ্যে ভাবনা ছিল মানুষের কোন কাজে আসার। তবে বেঁচে থাকা অবস্থায় মানুষের কতটা কাজে আসতে পেরেছেন তা হয়তো তারা জানেন না। যে কারণে পরলোক গমনের পর যাতে মানুষের কাজে আসতে পারেন সেই জন্য নিজেদের বিবাহ বার্ষিকীতে অনন্য ভাবনা নিয়ে দিনটি পালন করলেন।
বীরভূমের দুবরাজপুরের এই দম্পতির বিবাহ বার্ষিকী ছিল মহা শিবরাত্রির দিন মঙ্গলবার। আর ওই দিনটিতেই তারা ব্যতিক্রমী ভাবনা নিয়ে নজির তৈরি করলেন। মানব সেবার ব্রত নিয়ে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করলেন এই দম্পতি। এই দম্পতি হলেন বীরভূমের দুবরাজপুর পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বরূপ আচার্য্য (৪৮), যিনি পেশায় একজন বিশিষ্ট আইনজীবী। অন্যদিকে তার সহধর্মিনী সুমনা চক্রবর্তী (৩৮) শিক্ষিকা ও সমাজকর্মী।
এদিন তাদের ১৮তম বিবাহ বার্ষিকী অনুষ্ঠানে উভয়ের সম্মতিক্রমে মরণোত্তর দেহদানে অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করলেন। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ এন্ড হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা বীরভূম ভলেন্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি প্রিয়নীল পাল তাদের অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করান। এই সংস্থা জেলার সিউড়ি, রামপুরহাট, বোলপুর তিনটি সাব ডিভিশনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রয়েছে। এদিন এই দম্পতি অঙ্গীকার পত্রে স্বাক্ষর করে নজির গড়ল জেলায়।
মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকারের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরূপ আচার্য জানিয়েছেন, স্ত্রীর ইচ্ছার উপর ভর করেই আলোচনার পর এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমাদের মৃত্যুর পর যদি আমাদের অঙ্গ অন্য কারোর কাজে লাগে অথবা পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসার জন্য কোন কাজে লাগে তার জন্যই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অন্যদিকে তার সহধর্মিনী সুমনা চক্রবর্তী জানিয়েছেন, জীবিতকালে কার কতটা উপকার করতে পেরেছি অথবা করতে পারব তা জানা নেই। কিন্তু মৃত্যুর পরে যাতে কারোর কাজে লাগে আমাদের এই দেহ, তার জন্যই এমন পদক্ষেপ। বীরভূম ভলেন্টিয়ার ব্লাড ডোনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি প্রিয়নীল পাল দাবি করেছেন, এর আগেও অসংখ্য মানুষ মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করলেও বিবাহ বার্ষিকীতে দম্পতির মরণোত্তর দেহদান প্রথম।
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Birbhum, Body Donation, Dubrajpur