বোলপুর, বীরভূম: আগে গ্রাম গঞ্জে প্রায় হাঁক দিতেন টিন শিল্পীরা। তাঁদের গলায় শোনা যেতো‘, কইগো টিনের কিছু জিনিস করাবেন নাকি?’ টিনের উপর হাতুড়ির বাড়ি পড়তেই ঠকঠক শব্দে মুখরিত হতো চারদিক। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় টিন শিল্পীদের অনেকটাই কদর কমেছে। তবুও কেউ কেউ পুরোনো পেশাকে আঁকড়েই বেঁচে রয়েছেন। সেইরকম একজন হলেন বোলপুরের বেহুলা থান্দার।
বেহুলা থন্দারের স্বামী সুকুমার থন্দার। সে তার স্বামীর কাছ থেকেই টিন দিয়ে তৈরি বিভিন্ন সামগ্রী তৈরির কাজ শিখেছেন। প্রায় দশ বছর বেহুলা রয়েছে এই পেশায়। মুড়ির টিন,ফুলের সাজি,টোকা,ড্রাম ইত্যাদি টিন দিয়ে তৈরি করতে পারেন বেহুলা ও তার স্বামী। সকাল হলেই পেটের টানে সরঞ্জাম নিয়ে গ্রাম গঞ্জের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন বেহুলা। সঙ্গে যান তাঁর স্বামী, ভাই ও ভাগ্নে। বেহুলার কথায়, “ গ্রামে গিয়ে হাঁক দিলেও আর আগের মতো সেইভাবে কেউ টিনের জিনিসপত্র তৈরি করান না। তবুও আমরা যায়। গ্রাম গঞ্জে একটা ফাঁকা মাঠে বসে আমরা বরাত মতো জিনিসপত্র তৈরি করে দি।”
আজ থেকে প্রায় দশ থেকে এগারো বছর আগে গ্রামগঞ্জে প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে গেলেই দেখা যেতো টিনের ড্রামে মুড়ি ভরে রাখছেন গৃহকর্ত্রীরা। সকাল হলেই টিনের ফুলের সাজি নিয়ে ফুল তোলার রেওয়াজ ছিল। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় প্লাস্টিক কিংবা ফাইবারে বিভিন্ন সুন্দর সুন্দর জিনিস সস্তায় বিক্রি হচ্ছে বাজারে। তাই টিনের সামগ্রীর ব্যবহার কমে গিয়েছে, ফলে টিন শিল্পীদের কদর কমেছে।
ধানসড়া গ্রামে টিনের উপর হাতুড়ির বাড়ি মারতে মারতেই টিন শিল্পী বেহুলা আরোও জানান,“আমরা বাড়ি থেকে সকালে বেরিয়ে আসি। তারপর কোন একটা গ্রামে গিয়ে কাজ করি, আবার বিকালে ফিরে আসি বাড়ি। আমরা মাঠঘাটে কাজ জানি না। আমরা এই কাজটাই ভাল পারি। তাই কদর না থাকলেও এখনও দু একটা যা বরাত পাই, সেই দিয়েই কোনওরকম সংসার চলে। তবুও একবেলা না খেয়েই কাটিয়ে দি কোন কোন দিন। একদিন কাজে না এলে হাঁড়িও চাপে না আমাদের। এই নিয়েই কোনরকম বেঁচে আছি।”
Soutik Chakraborty
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: Birbhum news