#আলিপুরদুয়ার: নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর সংসারে জ্বলজ্বল করছে মেধার আলো। শিক্ষার পথে দারিদ্রতা কোনো প্রতিবন্ধকতা নয়।এই কথাটি প্রমাণ করে দিল আলিপুরদুয়ার শিলবাড়িহাটের বর্ষা পারভিন। রাজ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে জেলার প্রত্যন্ত এলাকার পাশাপাশি দুস্থ পরিবারের নাম উজ্জ্বল করল সে। উচ্চ মাধ্যমিকে কলা বিভাগের ছাত্রী বর্ষা পারভিন।
শিলবাড়িহাট হাই স্কুল থেকে পড়াশোনা ভুগোল, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিঞ্জান, দর্শন নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে পড়াশোনাশুরু করেছিল সে। সেরা দশে তার নাম থাকবে এমনটা আশা করেনি বর্ষা। তবে পরীক্ষার ফল ভালো হবে তা সে জানত। উচ্চমাধ্যমিকে ৪৯৩ নম্বর পেয়ে রাজ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করে স্বপ্নপূরণের পথে একধাপ এগিয়ে গেল সে।
শিলবাড়িহাটে বর্ষা পারভিনদের বাড়ি। বাবা মতিউর রহমান ও মা জরিনা খাতুন। তাদের মোট তিন সন্তান । বর্ষা পারভিন দ্বিতীয় সন্তান। মতিউর রহমান সিকিমে শ্রমিকের কাজ করেন। জরিনা খাতুন পরিচারিকার কাজ করে তিন সন্তানদের পড়াশুনা শেখান। বেড়া ও টিন দিয়ে তৈরি ঘরে বসবাস বর্ষা পারভিনদের। আর্থিক সচ্ছলতা একেবারেই নেই। তবুও সরকারি আধিকারিক হওয়ার স্বপ্ন দেখে বর্ষা পারভিন। স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে মনকে শক্ত করে পড়াশুনো চালিয়ে যাওয়া।
মেয়েকে দুটো টিউশন দিতে পেরেছেন জরিনা খাতুন। আর্থিকভাবে স্বচ্ছল থাকলে আরও টিউশন দিতে পারতেন। দিনরাত এক করে শুধু পড়াশুনো করত বর্ষা পারভিন। ভালো খাবার দিতে পারেননি মেয়েকে। উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যে ষষ্ঠ স্থান অধিকার করেছে মেয়ে শুনেই চোখ জলে ভরে ওঠে জরিনা খাতুনের।রাজ্যে ষষ্ঠ বর্ষাকে দেখতে শুক্রবার গ্রামবাসীরা ভীড় জমান তার বাড়িতে। অনেক মায়েরা তাদের সন্তানকে দেখিয়ে বলেন বর্ষা পারভিনের মত হতে।
ছাত্রীর সাফল্যে খুশি শিলবাড়িহাট হাই স্কুলের শিক্ষকরা। বর্ষা স্কুলে যেতেই তার গলায় উত্তরীয় পড়িয়ে মুখমিষ্টি করান শিক্ষকরা। স্কুলের নাম উজ্জ্বল করেছে ছাত্রী এই তাদের কাছে বড় পাওয়া। বর্ষার কলেজে ভর্তির টাকা স্কুলের শিক্ষকরা দেবেন বলে জানিয়েছেন।
অনন্যা দে
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।