কিন্তু কেন এত কম বয়সে তার এই পেশায় আগমন? তা জিজ্ঞাসাবাদ করতে যে তথ্য বেরিয়ে এসেছে, তার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে করুণ আর্তনাদ। বয়স্ক মা এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দেখাশোনা করার জন্য এই পেশায় নেমেছিল ওই নাবালিকা। তবে পনেরো বছর বয়সে নয়, যখন ওই নাবালিকা এই পেশায় এসেছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১৩ (West Bardhaman News)। নিষিদ্ধ পল্লীতে ইতিমধ্যেই সে কাটিয়ে ফেলেছে দু বছর। গ্রাহকদের থেকে প্রতিদিনের রোজগার থেকেই দেখাশোনা করেছে বয়স্ক মা এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের। খুদে বয়সেই তুলে নিয়েছে একটি সংসারের দায়িত্ব।
advertisement
স্থানীয় সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, লচিপুর মাঝি পাড়ার বাসিন্দা ওই কিশোরী গত দু'বছর ধরে দেহ ব্যবসার কারবারে জড়িয়ে পড়েছিল। বছর দেড়েক আগেও তাকে একবার আটক করা হয়। সে সময় তার দিদি, বোনের দেখাশোনা করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তারপর তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বিহারের মুঙ্গেরে। তবে বেশ কিছুদিন আগে সে আবার ফিরে আসে লচিপুর নিষিদ্ধপল্লীতে। সেখানে বেশ কয়েকজনকে নিজের ফোন নম্বর দিয়ে সে গ্রাহক এলে খবর দেওয়ার কথা জানায়। তখন থেকেই ওই নাবালিকার ওপর নজর রেখেছিলেন দুর্বার সমিতির সদস্যরা (West Bardhaman News)। এরপর তাকে চাইল্ডলাইন, দুর্বার সমিতি এবং পুলিশের যৌথ উদ্যোগে আটক করে বর্ধমানের একটি হোমে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই কিশোরী সরাসরি নিষিদ্ধপল্লীতে কারবার করতো না। বাইপাসের ধারে চৌরঙ্গী এলাকায় গ্রাহকদের ডেকে নিয়ে যেত সে। মূলত ট্রাকচালকরা ছিল তার গ্রাহকের তালিকায়। প্রতিদিন এক থেকে দুই হাজার টাকা রোজগার করত বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, পুলিশের জেরায় কিশোরী স্বীকার করেছে, সে তার বয়স্ক মা এবং প্রতিবন্ধী ভাইয়ের দেখাশোনা করার জন্যই এই পথে নেমেছে (West Bardhaman News)। কারণ তার কাছে আর উপার্জনের অন্য কোন পথ খোলা নেই। অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া সত্ত্বেও পরিস্থিতির চাপে এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয়েছে সে।
এক্ষেত্রে দুর্বার সমিতির সদস্যরা বলছেন, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের যৌনপেশায় আসা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। সেদিকে দুর্বার কমিটির সদস্যরা কড়া নজর রাখেন। উদ্ধার হওয়া কিশোরীকেও বছর দেড়েক আগে একবার আটক করা হয়েছিল। তার দিদির প্রতিশ্রুতিতে সে সময় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু জানুয়ারি মাসে নিয়ামতপুর নিষিদ্ধ পল্লী এলাকায় ফিরে আসে ওই কিশোরী। তখন থেকেই তাকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছিল। পরে তাকে দুর্বার সমিতির অফিসে ডেকে এনে আটক করা হয়।
কিন্তু ওই কিশোরীর অনুপস্থিতিতে তার মা এবং ভাইয়ের কিভাবে দিন চলবে, তার উত্তর এখনও কারও কাছে নেই। তবে পুলিশ ওই কিশোরীর মাকে আটক করেনি বলে খবর। কারণ তার প্রতিবন্ধী ভাইকে দেখাশোনা করার জন্য অন্য কেউ আর নেই।
Nayan Ghosh