আসছিলেন বিয়েবাড়িতে যোগ দিতে। কিন্তু হঠাৎই বিমানে বিপত্তি। মাঝ আকাশে তীব্র ঝাঁকুনি মুম্বাই থেকে অন্ডালগামী বিমানে। ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা এখনও ভুলতে পারেন নি বাবা, মেয়ে। বিয়ে বাড়ির আনন্দেও কাটেনি আতঙ্কের ছাপ।
পশ্চিম বর্ধমান : আসছিলেন বিয়েবাড়িতে যোগ দিতে। কিন্তু হঠাৎই বিমানে বিপত্তি। মাঝ আকাশে তীব্র ঝাঁকুনি মুম্বাই থেকে অন্ডালগামী বিমানে। ভয়ঙ্কর সেই অভিজ্ঞতার কথা এখনও ভুলতে পারেন নি বাবা, মেয়ে। বিয়ে বাড়ির আনন্দেও কাটেনি আতঙ্কের ছাপ। অন্ধকার সেই সময়ে বাবা এবং মেয়ে ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছেন একটা মিরাকেলের। বেঁচে ফিরতে পেরে বলছেন, মিরাকেল হয়েছ। কিন্তু আনন্দের মাঝেও বাবা মেয়ের মুখে আতঙ্কের ছাপ স্পষ্ট। রবিবার মুম্বাই থেকে অন্ডালগামী বিমানে ছেপেছিলেন মনিন্দ্র ভার্মা এবং তার মেয়ে টিয়া ভার্মা। দুজনেই আসছিলেন এক আত্মীয়ের বিয়েবাড়িতে যোগ দিতে। অন্ডাল বিমানবন্দরে নেমে আসানসোলের বুধা এলাকায় বিয়েবাড়িতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাদের। তারা যোগ দিতে পেরেছেন সেই বিয়েবাড়িতে। কিন্তু যাত্রাপথের ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন তারা। মুম্বাই থেকে অন্ডালগামী বিমানটিতে খারাপ আবহাওয়ার জেরে তীব্র ঝাকুনি শুরু হয়। অন্ডাল বিমানবন্দরে অবতরণ করার কিছু আগে আনুমানিক সন্ধ্যে ৬ টা ৫০ মিনিট নাগাদ এই ঘটনা হয়েছে বলে দাবি করছেন তারা। ঘটনায় রীতিমতো বেঁচে ফেরার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন বাবা এবং মেয়ে। শুধু ভগবানের কাছে প্রার্থনা করেছেন একটা ম্যাজিকের। অবশেষে বেঁচে ফিরতে পেরেছেন তারা। সামনে থেকে সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা প্রত্যক্ষ করা বাবা এবং মেয়ে বলছেন, কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ করে বিমানে তীব্র ঝাঁকুনি শুরু হয়। অনেকেই আছাড় খেয়ে নিচে পড়ে যান। সকলের খাবার, গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র - সবই নিচে পড়ে যায়। সকলেই আতঙ্কে চিৎকার করছিলেন। তবে শেষমেশ তারা বেঁচে ফিরতে পেরেছেন এবং তার জন্যে ভগবানকে ধন্যবাদ জানাচ্ছেন তারা। সোমবারই বিমান বিপত্তির একটি ভিডিও প্রকাশ্যে এসেছে। বিমানের এক যাত্রী ক্যামেরাবন্দি করে সেই ঘটনা। অল্প কিছুক্ষণের সেই ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে ঘটনার ভয়াবহতা, আকস্মিকতা। কীভাবে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়েছিলেন, সেই ছবি ধরা পড়েছে। সকলকেই দেখা গিয়েছে চিৎকার করতে। অন্যদিকে বিমানসেবিকারা সকল যাত্রীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছেন। ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, বিমানের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে বিভিন্ন জিনিসপত্র। যাত্রীদের ব্যাগ থেকে শুরু করে খাবার এবং অন্যান্য জিনিসপত্র বিমানে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। ভিডিওটি দেখে অনেকের গা শিউরে উঠছে সেই ভয়ঙ্কর সময়ের কথা ভেবে। তবে ভিডিওটি দেখে সকলেই বলছেন, ভগবানের অশেষ কৃপা এবং পাইলটের দক্ষতায় সকল যাত্রী প্রাণে বাঁচতে পেরেছেন। এই ঘটনার পর তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রকের তরফ থেকে। মাঝ আকাশে কেন বিপত্তির মুখে পড়ল বিমানটি, তা জানতে চাওয়া হয়েছে বলে খবর। কি কারনে এই দুর্ঘটনা তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তুলছেন যাত্রী এবং তাদের পরিবারের লোকজনও। তবে সোমবার অন্ডালের কাজী নজরুল বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে অন্যদিনের মত স্বাভাবিক ছবি। যাত্রীদের দিল্লিগামী বিমান ধরার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গিয়েছে। আবার এই ঘটনার পর আহত যাত্রীদের দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস.অরুণ প্রসাদ এবং আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি অভিষেক গুপ্তা। আপাতত জেলাজুড়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু মুম্বাই থেকে অন্ডালগামী বিমানের মাঝ আকাশের বিপত্তি।