উদ্বোধনটি একটি জমকালো ফুটবল উৎসব হিসেবে পালিত হয়েছিল, যেখানে শিশু, অভিভাবক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, ফুটবলার এবং মিডিয়ার সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। অতিথিরা একটি চা পানের আসরে যোগ দিয়েছিলেন, যা অ্যাকাডেমির নেতা, কোচ এবং তরুণ খেলোয়াড়দের সঙ্গে জড়িত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিল।
advertisement
টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ম্যানেজিং সত্যম রায় চৌধুরি, টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর দেবদূত রায় চৌধুরি, বিধাননগর পৌর কর্পোরেশনের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, তথ্য, প্রযুক্তি ও ইলেকট্রনিক্স বিভাগের দায়িত্বে থাকা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ক্যাবিনেট মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় এবং পাবলিক এন্টারপ্রাইজেস ও শিল্প পুনর্গঠন বিভাগের দায়িত্বে থাকা সব্যসাচী দত্ত, বিধাননগর কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান রঞ্জন পোদ্দার, বিধাননগর পৌর কর্পোরেশনের ব্যুরো ফাইভ ব্যুরো চেয়ারম্যান এবং পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারতে ব্রিটিশ ডেপুটি হাই কমিশনার অ্যান্ড্রু ফ্লেমিং-এর উপস্থিতিতে এই অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা কোচদের হাতে ৩টি ট্রফিও তুলে দেন, যার মধ্যে কন্যাশ্রী কাপ প্রিমিয়ার বি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, দ্য ইন্ডিয়ান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ওয়েস্ট বেঙ্গল (আই.এফ.এ.), আইএফএ ক্লাব ফুটসাল চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫ রানার্স আপ অন্তর্ভুক্ত ছিল।
এই উদ্যোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে এমন একটি উন্নয়ন কাঠামো যা প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণ, কৌশলগত শিক্ষা, শারীরিক ব্যবস্থা, শৃঙ্খলা এবং চরিত্র বিকাশের একাধারে মিশ্রণ ঘটায়। পাঠ্যক্রমটি একটি ফাইভ কর্নার ডেভেলপমেন্ট মডেল অনুসরণ করে তৈরি করা হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রযুক্তিগত, কৌশলগত, শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক দিক, যাতে শিশুরা আধুনিক ফুটবলের চাহিদা অনুসারে একটি কাঠামোগত এবং বয়স-উপযুক্ত পথের মধ্যে দিয়ে প্রশিক্ষণ পায়। এছাড়াও, ইউকেএসসি অ্যাকাডেমির লক্ষ্য হল প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে প্রতিযোগিতা করার জন্য পথ করে দেওয়া, যা শেষ পর্যন্ত এলিট ইয়ুথ এবং সিনিয়র দলে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি করবে।
ভারতের সর্বকনিষ্ঠ এএফসি প্রো লাইসেন্স কোচ এবং অন্যান্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোচদের মধ্যে একজন ইয়ান ল-এর নেতৃত্বে পরিচালিত কর্মসূচিতে থাকবে ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য সাপ্তাহিক ২-৩টি সেশন, প্রাক্তন পেশাদার ফুটবলার সহ এএফসি এবং এআইএফএফ-লাইসেন্সপ্রাপ্ত কোচের তালিম, ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট ১:১৫ কোচ-টু-প্লেয়ার রেশিও, আধুনিক পাঠ্যক্রম সহ বয়স-নির্দিষ্ট ব্যাচ, স্থানীয় লিগ এবং টুর্নামেন্টে নিয়মিত অংশগ্রহণ, বিস্তারিত রিপোর্ট কার্ড এবং রিয়্যাকশন সেশন সহ ত্রৈমাসিক মূল্যায়ন, পুষ্টি, শৃঙ্খলা এবং মানসিক অবস্থার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আলোচনা, সকল বয়সের জন্য উপযুক্ত, নিরাপদ পিচ।
টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল এবং কমিউনিটি সেন্টারের বিশাল নেটওয়ার্কের অ্যাক্সেসের মাধ্যম, ইউকেএসসি অ্যাকাডেমি পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে এক ফুটবল হাব তৈরি করার লক্ষ্য নিয়েছে। এগুলো প্রশিক্ষণ, প্রতিভা শনাক্তকরণ এবং সম্প্রদায়ের সম্পৃক্ততার জন্য স্যাটেলাইট সেন্টার হিসাবে কাজ করবে।
ইউকেএসসি অ্যাকাডেমি ইতিমধ্যেই শিলিগুড়িতে তার প্রথম কেন্দ্রটি চালু করেছে, যার সম্প্রসারণ মালদা, দুর্গাপুর, ফালাকাটা, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এবং অন্যান্য জেলায় চলছে। ৬টি স্থানে ৩০০-র বেশি শিক্ষার্থী নিয়ে অ্যাকাডেমিটি দ্রুত বিকাশের পথে এগিয়ে চলেছে। শিলিগুড়িতে একটি অগ্রণী মেয়েদের আবাসিক ফুটবল প্রোগ্রামও প্রস্তুত করা হচ্ছে, যা ক্রীড়া উন্নয়নের প্রতি অ্যাকাডেমির প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করবে।
২০২৪ সালে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত ইউনাইটেড কলকাতা স্পোর্টস ক্লাব সুদক্ষ তরুণদের লালন-পালনের জন্য টিআইজির প্রতিশ্রুতি থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। ইউকেএসসি দ্রুত বেঙ্গল ফুটবলে একটি অন্যতম শক্তিতে পরিণত হয়েছে। মাত্র প্রথম বছরেই ক্লাবটি অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে- ভারতের প্রথম দল হিসেবে তার প্রথম মরশুমে সিএফএল প্রথম বিভাগে জয়লাভ করা এবং প্রিমিয়ার ডিভিশনে পদোন্নতি অর্জন করা, একই সঙ্গে মহিলা ফুটবল এবং ফুটসালে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জন করা রয়েছে একাধিক সাফল্য। একসঙ্গে টিআইজি এবং ইউকেএসসি পরবর্তী প্রজন্মের সুশৃঙ্খল, আত্মবিশ্বাসী এবং হাই-পারফর্মিং তরুণ ক্রীড়াবিদ তৈরির লক্য্যে কাজ করে চলেছে। এই শক্তিশালী পারফরম্যান্স বেস বাংলার পেশাদার ফুটবলারদের পরবর্তী প্রজন্মকে প্রস্তুত করার জন্য ইউকেএসসি অ্যাকাডেমির লক্ষ্যকে আরও শক্তিশালী করেছে।
দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বলতে গিয়ে টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপের ডিরেক্টর দেবদূত রায় চৌধুরি বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য হল রাজ্য জুড়ে তৃণমূল পর্যায়ের খেলাধুলোয় গতি আনা। এটি কেবল একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচির চেয়েও বেশি কিছু; এটি একটি ব্যাপক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ।’’
