অনিমেষের ছোটবেলা থেকেই বড় হওয়া অত্যন্ত গ্রামের একেবারে সাধারণ পরিবারে। বাবা বিদ্যুৎ দপ্তরে কর্মরত, মা গৃহিণী। পরিবারের একমাত্র ছেলে অনিমেষ ছোটবেলা থেকেই কিছু আলাদা করতে চেয়েছিল। সেই স্বপ্নের দিশা খুঁজে পায় একদিন ‘সুলতান’ সিনেমা দেখে। ছবির বক্সিং দৃশ্য তার মনে জাগায় লড়াই করার তীব্র ইচ্ছে। তারপর থেকেই শুরু হয় তার কিক বক্সিংয়ের পথে হাঁটা।
advertisement
প্রথমদিকে কোনও প্রশিক্ষক না থাকায় বাড়ির উঠোনেই শুরু হয় অনুশীলন। ইউটিউব দেখে নিজেই শিখতে থাকে মৌলিক টেকনিক। কিন্তু অল্প দিনেই বুঝে যায়, সাফল্যের জন্য প্রয়োজন একজন অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের। তাই এক বন্ধুর সাহায্যে পৌঁছে যায় কলকাতার কিক বক্সিং কোচ কেশব সর্দারের কাছে। সেখানেই শুরু হয় তার কঠোর প্রশিক্ষণ।
প্রতিদিন সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুশীলনে নিজেকে তৈরি করতে থাকে অনিমেষ। তার এই নিরলস প্রচেষ্টাই একসময় সাফল্য এনে দেয়।
সম্প্রতি যাদবপুরে অনুষ্ঠিত রাজ্য কিক বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে অংশগ্রহণ করে সে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্যেও নিজের দক্ষতা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে অনিমেষ জিতে নেয় সোনা। গ্রামের ছেলেরা যেখানে সাধারণত খেলাধুলা ছেড়ে অন্য পেশায় ঝুঁকে পড়ে, সেখানে অনিমেষ দেখিয়েছে ইচ্ছে আর পরিশ্রম থাকলে সাফল্য কঠিন নয়।
বর্তমানে সে নিউ আলিপুর কলেজের গণিত বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র। পড়াশোনা ও খেলাধুলা—দুটোই একসঙ্গে সামলাচ্ছে সে।
নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিমেষ বলে, “ছোটবেলা থেকে আমার মধ্যে ইচ্ছে ছিল কিছু আলাদা করার। অনেকেই আমাকে বলেছে গ্রামের ছেলেরা কিছুই পারে না। কিন্তু সুলতান হবে আমার মনে কিকবক্সিং এর অনুপ্রেরণা জাগায়।এখন আমার লক্ষ্য দেশ জয়”
তার এই কথাতেই যেন লুকিয়ে আছে নতুন প্রজন্মের অনুপ্রেরণা। গ্রামের মাঠে শোনা যাচ্ছে বক্সিং গ্লাভসের শব্দ। অনিমেষের এই সাফল্য প্রমাণ করেছে—“গ্রামের ছেলে মানেই পিছিয়ে নয়, ইচ্ছা থাকলে সাফল্য আসবেই।”
Madan Maity